জি২০ শীর্ষ সম্মেলনে (2023 G20 New Delhi Summit) ভারত সরকার গ্লোবাল বায়ো ফুয়েল অ্যালায়েন্স (Global Biofuel Alliance) ঘোষণা করে। যেখানে তারা সম্মেলনে আসা দেশগুলোকে এই উদ্যোগে সামিল হতে অনুরোধ করে। এই বায়ো ফুয়েল আসলে পেট্রোলের (Petrol) সঙ্গে ইথানল (Ethanol) মিশিয়ে তৈরি করা হয়। বর্তমানে কিছু ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ ইথানল পেট্রোলের সঙ্গে মেশানো হলেও পরিবেশ দূষণ কমানোর জন্য তা যথেষ্ট নয়। ভারত সরকার চাইছে এই ইথানলের পরিমাণ ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২০ শতাংশ করার জন্য। আর এই বায়ো ফুয়েল অ্যালায়েন্স ঘোষণা হওয়ার পরই চিনি বা আখের সঙ্গে যুক্ত যে সমস্ত কোম্পানি তাদের শেয়ারে বৃদ্ধি দেখা গিয়েছে। গ্লোবাল বায়ো ফুয়েল অ্যালায়েন্সের লক্ষ্য প্রযুক্তির উন্নতির মাধ্যোমে বিশ্বব্যাপী জৈব জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধি করা।
জৈব জ্বালানি হল এক প্রকার পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি (Renewable Energy) যা জীবকূল থেকে পাওয়া যায়। যেরকম, আখ থেকে চিনি তৈরি করার সময় উপজাত দ্রব্য হিসাবে ইথানল তৈরি হয়। ভারতে পেট্রোলে ইথানল ব্লেন্ডিং শুরু হয় ২০০১ সালে। যদিও সেই প্রকল্প সেই সময় অতটা গতি পায়নি। বর্তমানে এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহন ও রাজপথ মন্ত্রক এই বিষয়ে অনেক বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। আর এর পিছনে সবচেয়ে বড় কারণ হচ্ছে ভারতকে তার জ্বালানির চাহিদা মেটানোর জন্য দেশের বাইরে থেকে ৮৫ শতাংশ অপরিশোধিত তেল আমদানি করে। আর এর পিছনে অনেক বৈদেশিক মুদ্রাও খরচ হয়। আর এই কারণেই ভারত এখন খড়, আখের ফেলে দেওয়া অংশ, গাছের বিভিন্ন বর্জ্য পদার্থের মাধ্যমে জ্বালানি তৈরি করতে চাইছে।
বাড়তে পারে কোন কোন কোম্পানির শেয়ারের দাম?
এইড প্যারি
ভারতীয় জৈব গ্যাস অ্যাসোসিয়েশনের একটি রিপোর্ট অনুযায়ী জি২০-র দেশগুলোতে জৈব গ্যাস সংক্রান্ত ক্ষেত্রে আগামী ৩ বছরে ৫০০ বিলিয়ন ডলারের শিল্প সম্ভাবনা রয়েছে। আর এর পরই এইড প্যারি নামক একটা কোম্পানির শেয়ারে একদিনেই ৩.৩ শতাংশ বৃদ্ধি দেখা গিয়েছে। এই কোম্পানিটি দক্ষিণ ভারতের একটি চিনি প্রস্তুতকারী সংস্থা। এই কোম্পানি ২৮৬ কোটি টাকা বিনিয়োগ করার পরিকল্পনা করেছে। যাতে তারা তাদের দৈনিক ইথানল তৈরি ক্ষমতা ৫৮২ কিলো লিটারে নিয়ে যেতে পারে। এই কোম্পানির মার্কেট ক্যাপিটালাইজেশন ৯ হাজার ৪৭৮ কোটি টাকা।
ডালমিয়া ভারত সুগার অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ
ডালমিয়া কোম্পানির শেয়ারের দাম এই অ্যালায়েন্স ঘোষণার পরই প্রায় ৬ শতাংশ বেড়ে গিয়েছে। এই কোম্পানির মার্কেট ক্যাপিটালাইজেশন ৩ হাজার ৫৫২ কোটি টাকা। এই কোম্পানি তাদের দৈনিক ইথানল তৈরির ক্ষমতা ২৫০ কিলো লিটার বাড়ানোর জন্য ৪০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করছে। আগামী বছরের সেপ্টেম্বরে তাদের সেই কারখানা খোলার সম্ভাবনা রয়েছে।
শ্রী রেনুকা সুগার
জি২০ সম্মেলনে বায়ো ফুয়েল অ্যালায়েন্স ঘোষণা হওয়ার পর রেনুকা সুগারের শেয়ারের দাম এক ধাক্কায় ৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এই কোম্পানির মার্কেট ক্যাপিটালাইজেশন ১১ হাজার ৬৯৬ কোটি টাকা। সদ্যই এই কোম্পানি তাদের ইথানল প্রস্তুতের ক্ষমতা ৭২০ কিলোলিটার থেকে বাড়িয়ে ১২৫০ কিলোলিটার করেছে।