নয়া দিল্লি: ভর্তুকির গ্যাস পেতে ফের দাঁড়াতে হতে পারে লাইনে। এলপিজি সিলিন্ডার নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত কেন্দ্রের। উজ্জ্বলা প্রকল্প-সহ রান্নার গ্যাসে ভতুর্কি পেতে গেলে গিতে হবে বায়োমেট্রিক তথ্য। অর্থাৎ, গ্রাহকদের আঙুলের ছাপ, চোখের মণির ছবি, মুখের ছবি। গ্যাস বিক্রেতা সংস্থাগুলিকেই এই ‘কেওয়াইসি’ তথ্য সংগ্রহের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রের তরফে এই তথ্যদানের জন্য স্পষ্ট কোনও সময়সীমা উল্লেখ না করা হলেও, গ্যাস-বিক্রেতাদের দাবি, আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যেই এই তথ্য গিতে হবে। না-হলে বন্ধ হয়ে যেতে পারে গ্যাসের সিলিন্ডারে ভর্তুকি। অর্থাৎ মেরেকেটে এই তথ্য সংগ্রহের জন্য সময় রয়েছে প্রায় একমাস। কিন্তু, এত অল্প সময়ের মধ্যে বিপুল সংখ্যক গ্রাহকের বায়োমেট্রিক তথ্য় সংগ্রহ সম্ভব কিনা, কীভাবে তা সংগ্রহ করা হবে – আচমকা কেন্দ্রের নির্দেশিকায় বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে ক্রেতা ও গ্রাহক-উভয় মহলেই।
গ্যাস বিক্রেতা সংস্থাগুলির দাবি, কেন্দ্রের তরফে তাদের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সমস্ত গ্রাহকদের কেওয়াইসি আপডেটের কথা বলা হয়েছে। না-হলে তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে তারা। রাজ্য গ্যাস ডিলার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বিজন বিশ্বাস বলেছেন, “আমাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। করতেও হবেষ নইলে হয়তো আমাদের বিরুদ্ধে কিছু ব্যবস্থা নেবে। তবে, সাম্প্রতিক সময়ে যাবতীয় ব্যাঙ্ক জালিয়াতি বায়োমেট্রিক তথ্য দিয়েই হয়েছে। এই নিয়ে গ্রাহকদের মনে উদ্বেগ রয়েছে। এরপর যদি এরকম কিছু ঘটে, তবে তো তারা গ্যাস ডিলারদেরই ধরবে। ব্যাঙ্ক জালিয়াতি হলে তার দায় গ্যাস ডিলারদের উপর এসে পড়বে।”
গ্রাহকদের জন্য এমন কোনও নির্দেশিকা জারি করা হয়নি। তবে, গ্রাহক মহলেও নতুন বছর থেকে ভর্তুকি বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে উগ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। অনেকেই বলেছেন, এত দ্রুত সকলের বায়োমেট্রিক তথ্য সংগ্রহ সম্ভব নয়। ফলে, নতুন বছরে অনেকেই গ্যাসের ভর্তুকির তালিকা থেকে বাদ পড়ে যাবে। এছাড়া, আধার, বায়োমেট্রিক তথ্য প্রদান – বারবার লাইনে দাঁড়াতে দাঁড়াতেও তাঁরা ক্লান্ত বলে জানিয়েছেন।
আসলে, কীভাবে এই তথ্য সংগ্রহ করা হবে, সেই বিষয়ে এখনও কোনও স্পষ্টতা নেই। বিষয়টি গ্যাস ডিলারদের উপরই ছেড়ে দিয়েছেন। মনে করা হচ্ছে, এক, লাইনে দাঁডড়ানোর যন্ত্রণা সহ্য করে, গ্যাসের দোকানে গিয়ে এই তথ্য দিতে হবে গ্রাহকদের। নাহলে, বাড়ি বাড়ি গ্যাস সরবরাহ করেন যে কর্মীরা, তাঁদেরকেই প্রশিক্ষণ দিয়ে এই কাজে নিযুক্ত করা যেতে পারে। সেই ক্ষেত্রে গ্রাহকরা বাড়িতে বসেই তা দিতে পারবেন। কিন্তু, এত অল্প সময়ের মধ্যে গ্যাস সরবরাহকারীদের বায়োমেট্রিক তথ্য সংগ্রহের প্রশিক্ষণ দেওয়া সম্ভব কিনা, সেই প্রশ্নও রয়েছে। অর্থাৎ, সব মহলেই একটা চূড়ান্ত বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে।