নয়া দিল্লি: সীমান্ত নিয়ে চাপান-উতোর আগেই ছিল, ২০২০ সালের মে মাসে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার দখলদারি নিয়ে বিরোধ চরমে ওঠে। জুন মাসে পূর্ব লাদাখের গালওয়ানে সংঘর্ষ হয় ভারত ও চিনের সেনার মধ্যে। দুই দেশের সংঘর্ষের জেরে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে যে ফাটল ধরে, তা এখনও জোড়া লাগেনি। তবে ভারত-চিনের সংঘর্ষ কিন্তু সীমান্তেই সীমাবদ্ধ নেই। ভারতীয় রেলওয়ের একটি চুক্তি নিয়েও সম্মুখ সমরে নেমেছে দুই দেশ। ৪৭১ কোটির চুক্তি বাতিল করাকে কেন্দ্র করে এবার আন্তর্জাতিক আদালতে ভারতকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে চিন।
গালওয়ান সংঘর্ষের পরই সে বছর জুন মাসেই চিনা সরকারের অধীনস্থ সিআরএসসি রিসার্চ অ্যান্ড ডিজাইন ইন্সটিটিউট গ্রুপকে দেওয়া ৪১৭ কিলোমিটার দীর্ঘ ফ্রেট করিডর গঠন করার বরাত, যা কানপুর থেকে দীন দয়াল উপাধ্যায় জংশন (মোগলসরাই) অবধি তৈরি তৈরি হত, সেই বরাত বাতিল করে দেওয়া হয়। ইস্টার্ন ডেডিকেটেড ফ্রেট করিডর তৈরির এই চুক্তি বাতিল করার বিরোধিতা করেই সিঙ্গাপুরের ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্সে অভিযোগ দায়ের করেছে চিনা সংস্থা। ওই সংস্থার অভিযোগ, চুক্তি বাতিলের আগে যে অংশটুকুর কাজ ইতিমধ্যেই সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছিল, তার টাকা দেওয়া হয়নি। ওই ফ্রেট করিডর তৈরির কাজ করার সময়ে তাদের যে নানাবিধ সমস্যার মুখে পড়তে হয়েছিল, তাও উল্লেখ করা হয়েছে।
সিআরএসসি-র তরফে প্রথমে ক্ষতিপূরণ বাবদ ২৭৯ কোটি টাকা চাওয়া হয়েছিল, পরে তা বাড়িয়ে ৪৪৩ কোটি টাকার দাবি করা হয়। এর পাশাপাশি ব্যাঙ্ক গ্যারান্টিও ফেরত চাওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, একজন কনট্রাক্টর প্রকল্প শুরু করার আগে চুক্তি নিশ্চিত করার জন্য যে ডাউন পেমেন্ট করতে হয়, তাকেই ব্য়াঙ্ক গ্যারান্টি বলে। চিনের দাবি, ভারতে বেআইনিভাবে এই চুক্তি বাতিল করে দিয়েছে।
চিনের তরফে অভিযোগ দায়ের করার পরই ভারতের তরফেও পাল্টা মামলা করা হয়েছে। ৭১ কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে ভারতও ২৩৪ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ দাবি করে।