ওয়াশিংটন: ইলন মাস্ক যে দিকেই হাত দেন, তাতেই সোনা ফলে। সে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম হোক বা বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় বৈদ্যুতিক গাড়ি। মাস্কের কঠোর পরিশ্রমে প্রতিটি প্রকল্পই সফল হয়। এবার তিনি মানবজাতির কল্যাণে এমন এক প্রকল্পের পরিকল্পনা করেছেন, যা শুনে মনে হতে পারে বোধহয় কোনও হলিউটি সাইফাই সিনেমার গল্প। তবে, এটি সফল হলে কোটি কোটি মানুষের জীবন বদলে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। আসলে মাস্ক এমন একটি প্রকল্প শুরু করছেন, যেখানে মানুষের মস্তিষ্কে একটি ইলেকট্রনিক চিপ বসানো হবে এবং এই চিপের সাহায্যে মানুষ এমন নতুন শক্তি পাবে, যা তাদের জীবন বদলে দিতে পারে। এই চিপটি এমন কিছু ব্যক্তির মস্তিষ্কে স্থাপন করা হবে, যারা কোনও না কোনওভাবে শারীরিক প্রতিবন্ধকতার শিকার। দৈনন্দিন জীবনযাপনে প্রতি মুহূর্তে অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়। মাস্ক যদি এই প্রকল্পে সাফল্য পান, আগামীদিনে এই প্রযুক্তিটি সারা বিশ্বের মানুষের জীবন বদলে দিতে পারে।
মাস্কের ব্রেন-চিপ ফার্ম নিউরালিঙ্ক জানিয়েছে, মানুষের এই চিপের প্রথম পরীক্ষা চালানোর জন্য ইউএস ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বা এফডিএ তাদের অনুমোদন দিয়ে দিয়েছে। ইমপ্লান্ট সংস্থা নিউরালিঙ্ক একটি কম্পিউটারের সঙ্গে মানব মস্তিষ্ককে সংযুক্ত করে মানুষের দৃষ্টিশক্তি এবং গতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করতে চায়। চিপটি মোবাইলের সিম কার্ডের মতোই, তবে তা মাথায় ছিদ্র করে সরাসরি মস্তিষ্কে বসানো হবে।
প্যারালাইসিস এবং অন্ধত্বের মতো অবস্থার চিকিৎসা করতে এবং প্রতিবন্ধীদের কম্পিউটার এবং মোবাইল প্রযুক্তি ব্যবহার করতে সাহায্য করতে মাইক্রোচিপ ব্যবহার করে নিউরালিঙ্ক। এর মাধ্যমে এই সব রোগে আক্রান্ত মানুষের জীবন আর পাঁচজন মানুষের মতোই স্বাভাবিক পথে ফিরে আসতে পারে। চিপগুলি ইতিমধ্য়েই বানরের দেহ পরীক্ষা করা হয়েছে। মস্তিষ্কের পাঠানো সংকেতগুলিকে ডিকোড করে যাতে ব্লুটুথের মাধ্যমে ডিভাইসগুলিতে সেই তথ্য পাঠিয়ে দেওয়া যায়, সেই ভাবেই নকশা করা হয়েছে মাইক্রোচিপগুলি।
বিশেষজ্ঞরা অবশ্য সতর্ক করেছেন, নিউরালিঙ্কের ব্রেন ইমপ্লান্টগুলি বাজারে ছাড়ার আগে প্রযুক্তিগত এবং নৈতিক চ্যালেঞ্জগুলি কাটাতে এর ব্যাপক পরীক্ষা নিরীক্ষার প্রয়োজন। মাস্ক এর আগে জানিয়েছিলেন, তাঁর প্রস্তাবিত এই প্রযুক্তিটি আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা এআই-এর বিপদের বিষয়ে মানুষের উদ্বেগ কমাতে পারে। কীভাবে হিউম্যান ট্রায়াল করা হবে, এই বিষয়ে শিগগিরই আরও বিশদ তথ্য দেবে বলে জানিয়েছে। সম্প্রতি সুইস গবেষকরা মস্তিষ্ক প্রতিস্থাপন সম্পর্কিত পরীক্ষায় দুর্দান্ত সাফল্য পেয়েছেন। তারপরই, মানুষের মাথায় মাইক্রোচিপ লাগানোর এই পরীক্ষার জন্য অনুমোদন দিল এফডিএ।