নয়া দিল্লি: চলছে উৎসবের মরসুম। দুর্গাপুজো, লক্ষ্মীপুজোর পর এখন দীপাবলি, ভাইফোঁটার অপেক্ষায় মানুষ। আর ভারতে উৎসব মানেই মিষ্টির ছড়াছড়ি। মিষ্টি ছাড়া উৎসবের মজাই অসম্পূর্ণ থাকে। উৎসবের মরসুমে মিষ্টির এই চাহিদা বৃদ্ধির কারণে এই সময় মিষ্টির কালোবাজারিও শুরু হয়। দেশজুড়ে শুরু হয় নকল মিষ্টির আসাধু ব্যবসা। প্রতি বছরই এই নিয়ে বিব্রত হতে হয় সাধারণ মানুষকে। কিন্তু, এই বছর উৎসবের সময় যাতে নকল মিষ্টির সমস্যায় পড়তে না হয়, সেই জন্য আগে থেকে প্রস্তুতি নিয়েছে সরকার। প্রকৃতপক্ষে, দীপাবলির সময় ভেজাল মিষ্টি যাচাই করতে, ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ডস অথরিটি অব ইন্ডিয়া বা এফএসএসএআই (FSSAI) সারা দেশে তাদের রাজ্য স্তরের ৪,০০০ কর্তাদের মিষ্টির খুচরো বিক্রেতা এবং মিষ্টি প্রস্তুতকারকদের উপর নজরদারি জোরদার করার নির্দেশ দিয়েছে। স্পষ্ট বলা হয়েছে, যেখানেই এই ধরনের দুর্নীতি হচ্ছে, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
সবচেয়ে বেশি ভেজাল দুধে
ভারতে, বেশিরভাগ মিষ্টি তৈরি হয় দুধের পণ্য থেকে। আর দুধেই সবথেকে বেশি ভেজালের কারবার চলে। সাধারণত দীপাবলির সময় মিষ্টি খাওয়ার পরিমাণ বেড়ে যায়। তাই, চাহিদা মেটাতে ভেজালের পরিমাণও বাড়ে। রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিতে এফএসএসএআই তাদের আধিকারিকদের মিষ্টিতে ভেজাল পরীক্ষা করার জন্য নজরদারি জোরদার করার নির্দেশ দিয়েছে। এফএসএসআই-এর এক কর্তা জানিয়েছেন, রাজ্যের খাদ্য নিরাপত্তা আধিকারিকদের দোকানে দোকানে পরিদর্শন করতে এবং মিষ্টির গুণমান পরীক্ষা করার জন্য নমুনা সংগ্রহ করতে বলা হয়েছে। যারা গুণমানের নিয়মকানুন লঙ্ঘন করবে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেও বলা হয়েছে।
কীভাবে বাড়ানো হচ্ছে নজরদারি?
যাতে উৎসবের সময় সাধারণ মানুষকে ভেজালের সমস্যায় পড়তে না হয়, এফএসএসএআই এই বছর বলেছে অন্তত এক লক্ষ নমুনা সংগ্রহ করতে হবে। পরের বছর সাত লক্ষ নমুনা সংগ্রহের লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। এছাড়া, দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্যের গুণমান পরীক্ষা করার জন্য জাতীয় দুগ্ধ উন্নয়ন বোর্ড বা এনডিডিবি (NDDB) এবং ভারতের গুণমান কাউন্সিল যৌথভাবে জাতীয় স্তরে একটি সমীক্ষা করছে। এই সরকারি সমীক্ষায় প্রায় ১০,০০০ নমুনা সংগ্রহ করা হবে। এক মাসের মধ্যে এই সমীক্ষা শেষ হবে। আশা করা হচ্ছে এই পদক্ষেপের ফলে ভেজাল কারবারিরা ধরা পড়বে এবং সাধারণ মানুষ উৎসবে প্রকৃত মিষ্টির স্বাদ উপভোগ করতে পারবেন।