কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন বাজেট পেশ করেছেন মঙ্গলবার। চলতি অর্থবর্ষে কোন খাতে কত টাকা বরাদ্দ হয়েছে তার বিস্তারিত উল্লেখিত হয়েছে বাজেটে। কেন্দ্রীয় বাজেটে নিজ দেশ ছাড়াও প্রতিবেশী দেশগুলির জন্যও অর্থ বরাদ্দ করা হয়। বিদেশ মন্ত্রকের অধীনে এই বরাদ্দ হয়ে থাকে। ভুটান, নেপাল, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কার মতো ভারতের প্রতিবেশী দেশগুলি এই সাহায্য পায়। এ বছর তার অন্যথা হয়নি। তবে পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় বরাদ্দের অঙ্কে পরিবর্তন এসেছে। কিন্তু কোন প্রতিবেশী দেশকে ভারত বেশি টাকা দিল জানেন?
প্রতিবেশী দেশগুলির মধ্যে ভারত সবথেকে বেশি টাকা দিয়েছে ভুটানকে। হিমালয়েল কোলে অবস্থিত ছোট্ট এই দেশ কমবেশি সব ব্যাপারেই ভারতের উপর নির্ভরশীল। ভারত-বন্ধু ভুটানের জন্য ২ হাজার ৬৮ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষের জন্য এই অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে ভুটানের জন্য বরাদ্দ হয়েছিল ২ হাজার ৩৯৮ কোটি টাকা। ভুটানের পর সবথেকে বেশি বরাদ্দ করা হয়েছে নেপালের জন্য। ৭০০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে এই প্রতিবেশী দেশকে। ২০২৩-২৪ সালের তুলনায় বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে শ্রীলঙ্কার জন্য। ঋণে জর্জরিত শ্রীলঙ্কার জন্য এই অর্থবর্ষে বরাদ্দ হয়েছে ২৪৫ কোটি টাকা।
কিন্তু মলদ্বীপের জন্য বরাদ্দ আগের অর্থবর্ষের তুলনায় অনেকটা কমেছে। মহম্মদ মুইজু মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকেই ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি হয়েছে দেশটির। মুইজুর সঙ্গে চিনের সখ্যতার কথা অজানা নয়। সে জন্যই মলদ্বীপের জন্য বরাদ্দ কমানো হয়েছে। গতবছর মলদ্বীপের জন্য ৭০০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছিল। তবে এ বার হয়েছে মাত্র ৪০০ কোটি টাকা।
এই দেশ ছাড়াও আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, মায়ানমারের জন্যও অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। আফগানিস্তানকে দেওয়া হবে ২০০ কোটি টাকা। গত অর্থবর্ষে তা ছিল ২২০ কোটি টাকা। বাংলাদেশের জন্য ১২০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। মায়ানমারের জন্য বরাদ্দ কমিয়ে ২৫০ কোটি টাকা করা হয়েছে। তবে শুধু এই দেশ নয়, বিদেশ মন্ত্রকের মাধ্যমে ইরানে চাবাহার বন্দরের জন্য ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। এ ছাড়াও আরও কিছু দেশের জন্যও বরাদ্দ রয়েছে। জানা গিয়েছে, ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষ এই সব খাতে বিদেশ মন্ত্রককে ২২ হাজার ১৫৪ কোটি টাকা দেবে কেন্দ্র। যদিও গতবারের তুলনায় এই বরাদ্দ কমেছে।
আসলে ভারতের প্রতিবেশি দেশগুলি অর্থনৈতিক শক্তির দিক থেকে ভারতের তুলনায় অনেকটাই দুর্বল। বিভিন্ন পরিকাঠামো গত প্রকল্প এবং দ্বিপাক্ষিক বিষয়ে এই দেশগুলি ভারতের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকে। ভারতও নিজের নিরাপত্তার স্বার্থে এই সব দেশে বিভিন্ন পরিকাঠামোগত উন্নয়নে অংশ নেয়। সে বিষয়ে সাহায্য করতেই বাজেটে এই বরাদ্দ করা হয়। এর সঙ্গে দেশের বিদেশনীতিরও সম্পর্ক রয়েছে।