নয়া দিল্লি: কর বাকি থাকায় সম্প্রতিই প্যারিসে ভারতীয় সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার অনুমতি পায় কেয়ার্ন এনার্জি। আন্তর্জাতিক মহলে মুখ বাঁচাতে বকেয়া করের ঝামেলা মেটাতে তৎপর হয়েছে ভারত সরকার। বৃহস্পতিবারই সরকারের তরফে জানানো হয়, কর আইনে পরিবর্তন আনা হবে যাতে দ্রত বকেয়া করগুলি মিটিয়ে দেওয়া সম্ভব হয় এবং কেয়ার্ন এনার্জির মতো সংস্থাগুলি তাদের অর্থ ফেরত পেয়ে যায়।
সমস্যার শুরু হয় ২০১২ সালে, যখন কেন্দ্র ট্যাক্স আইনে পরিবর্তন আনে। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলি, যাদের কাছে ভারতীয় সম্পত্তি ছিল, তাদের মোটা অঙ্কের অর্থ জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
একটি সরকারী বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ২০১২ সালের মে’র আগে ভারতীয় সম্পদের পরোক্ষ হস্তান্তরের উপর কর “নির্দিষ্ট শর্তপূরণের উপর বাতিল” করা হবে, যেমন মামলা প্রত্যাহার এবং কোনও ক্ষতির দাবি দায়ের করা হবে না। কিন্তু গত ডিসেম্বর মাসেই ভারতে তেল ও গ্যাসসরবরাহকারী কেয়ার্ন সংস্থা দ্য হেগের স্থায়ী সালিশি আদালতে যায় ভারত সরকারের বিরুদ্ধে। দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর কেয়ার্ন সংস্থাকে সুদ সমতে ১.২ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি ক্ষতিপূরণ প্রদান করার নির্দেশ দেওয়া হয় ভারত সরকারকে।
গত মাসেও ফ্রেঞ্চ ট্রাইবুন্যালের তরফে কেয়ার্ন সংস্থাকে প্যারিসে থাকা ভারত সরকারের ২০টি সম্পত্তি দখলের অনুমতি দেওয়া হয়। কেয়ার্ন এনার্জি সংস্থা ভারতের উড়ান সংস্থা এয়ার ইন্ডিয়ার বিরুদ্ধেও বকেয়া অর্থ না মেটানোর জন্য আদালতে মামলা করেছে এবং ভারত সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করে অর্থ উদ্ধারের কথা বলেছে।
ভারত এই ধরনের একাধিক আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে কর নিয়ে আইনি জটিলতায় জড়িয়ে রয়েছে। এই জটিল পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতেই আইনে পরিবর্তন আনার ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। এই সিদ্ধান্ত অতীতে কর নিয়ে যে সংস্থাগুলির সঙ্গে জটিলতায় জড়িয়েছে ভারত সরকার, সেই সংস্থাগুলিকে সুদ ছাড়াই অর্থ ফেরত দেওয়ার অনুমতি দেবে।
এই ঘোষণায় সবথেকে বেশি স্বস্তি পাবে ভোডাফোন। লাইসেন্স এবং স্পেকট্রাম ফি প্রদানের জন্য এই টেলিকম সংস্থার সরকারের কাছে ২২,০০০ কোটি টাকার ঋণ রয়েছে। সম্প্রতিই সুপ্রিম কোর্টে বকেয়া অর্থ গণনার একটি মামলায় হেরে গিয়েছে সমস্ত প্রধান টেলিকম সংস্থাগুলি।
চলতি সপ্তাহেই ভোডাফোনের প্রোমোটার কুমার মঙ্গলম বিড়লা কেন্দ্রকে চিঠি লিখে জানায় যে ভোডাফোন টেলিকম সংস্থার এক্সেকিউটিভ চেয়ারম্যান পদ থেকে আদিত্য বিড়লা ইস্তফা দেওয়ার পরই সংস্থায় তার ২৭ শতাংশ শেয়ার ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু তিনি পদত্যাগের পরই সংস্থার শেয়ার দর পড়তে শুরু করেছে।
উল্লেখ্য,গত বছরই একটি আন্তর্জাতিক ট্রাইবুন্যালে জানানো হয়, ভোডাফোনের কাছ থেকে ভারত সরকার যে ২ বিলিয়ন ডলার কর দাবি করেছে, তা ভুল। ভারত ও নেদারল্যান্ডের মধ্যে বিনিয়োগ চুক্তি লঙ্ঘিত হয়েছে এবং ভোডাফোনের বিরুদ্ধে করের দাবি অনৈতিক। আরও পড়ুন: ‘প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ চাইলেও মেলেনি কোনও জবাব’, বর্ণভিত্তিক জনগণনার দাবিতে সরব নীতীশ