নয়া দিল্লি : বড় সমস্যায় পড়েছে এইচডিএফসি ব্যাঙ্ক। চলতি বছরের মে মাসে তামিলনাড়ুতে এইচডিএফসি ব্যাঙ্কের অনেক গ্রাহকদের অ্যাকাউন্টেই মুড়ি মুড়কির মতো টাকা ঢুকে যায়। পরে জানা যায়, প্রযুক্তিগত সমস্যার কারণে ভুল বশত ওই বিশাল অঙ্কের টাকা গ্রাহকদের অ্যাকাউন্টে ঢুকে গিয়েছিল। তারপর অনেক গ্রাহকই অতিরিক্ত সেই টাকা ব্যাঙ্ককে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু আবার এমনও অনেক গ্রাহক রয়েছেন, যাঁরা সেই ভুল করে ঢুকে যাওয়া টাকা ফেরত দিতে চাইছেন না।
ব্যাঙ্কের তরফে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কেউ কেউ জানিয়েছেন, সিস্টেম আপগ্রেডেশন হচ্ছিল। আর তখনই একটি কোড ভুল পড়ে যায়। তাতেই এই বিপত্তি। এর জেরে কয়েক হাজার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকার বন্যা বয়ে যায়। চেন্নাই সহ তামিলনাড়ুর বেশ কিছু জায়গা থেকে এমন ঘটনার খবর প্রকাশ্যে এসেছে।
সব মিলিয়ে এক বিশাল অঙ্কের টাকার ধাক্কা খায় এইচডিএফসি ব্যাঙ্ক। সব মিলিয়ে প্রায় ৯০০-১০০০ কোটি টাকা বিভিন্ন গ্রাহকদের অ্যাকাউন্টে ঢুকে যায় বলে জানা গিয়েছে। যদিও বিষয়টি বোঝার সঙ্গে সঙ্গে ওই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টগুলিকে ফ্রিজ করে দেয় ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। অর্থাৎ, ওই অ্যাকাউন্টগুলি থেকে যাতে টাকা তোলা না যায়, সেই ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু, তাতেও সবাইকে আটকানো যায়নি। অনেকেই এই বিশাল অঙ্কের টাকা অ্যাকাউন্টে ঢুকতে দেখে তড়িঘড়ি তা তুলে নিয়েছিলেন বা অন্যত্র ট্রান্সফার করে দিয়েছিলেন।
এই ধরনের ক্ষেত্রে ব্যাঙ্কে অনেক গ্রাহকেরই অ্যাকাউন্টে ‘অটোমেটিক সুইপ ম্যানডেট’ দেওয়া রয়েছে। অর্থাৎ, ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট ব্যালেন্স একটি নির্দিষ্ট অঙ্কের বেশি হয়ে গেলে, তা গ্রাহকের অন্য অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার হয়ে যায়। ফলে এই ক্ষেত্রে টাকা ফেরত পাওয়ার প্রক্রিয়াটি বেশ জটিল হয়ে যায় বলেই জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মী।
তিনি আরও জানিয়েছেন, ঘটনার এক মাস পরে ব্যাঙ্কের তরফে বেশিরভাগ টাকা ফিরিয়ে আনা গেলেও এখনও বিভিন্ন গ্রাহকের কাছে আটকে রয়েছে প্রায় ৩৫-৪০ কোটি টাকা। আর এই টাকা ফেরত নিতে গিয়ে কার্যত নাজেহাল অবস্থা হচ্ছে ব্যাঙ্কের। অনেক ক্ষেত্রেই গ্রাহকরা ব্যাঙ্কের সঙ্গে সহযোগিতা করছেন না। উল্টে অভিযোগ করছেন, ব্যাঙ্ক তাঁদের হয়রান করছে। জানা গিয়েছে, ব্যাঙ্কের তরফে এখনও চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে ওই টাকা উদ্ধার করার জন্য এবং প্রয়োজনে যাঁরা অসহযোগিতা করছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থাও নেওয়া হতে পারে।
এইচডিএফসি ব্যাঙ্কের তরফে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, “টাকা ট্রান্সফার হয়ে যাওয়ার সমস্যাটির প্রায় সমাধান হয়ে গিয়েছে। ২৮ মে রাত এবং ২৯ মে ভোরের মধ্যে ব্যাঙ্কের সিস্টেম প্যাচ আপগ্রেড করার সময় কিছু গ্রাহকরে অ্যাকাউন্টে ভুল দেখা গিয়েছিল। তবে ব্যাঙ্কের সক্রিয়তায় দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”