নয়া দিল্লি: বর্তমানে বিবাহ-বিচ্ছেদের (Divorce) খবর হামেশাই শোনা যায়। ৫-১০ বছর একসঙ্গে সংসার করার পর যেমন বিবাহ-বিচ্ছেদ হয়, তেমনই এক বছর গড়াতে না গড়াতেই বিবাহ-বিচ্ছেদের খবরও আসে। মিউচ্যুয়াল ডিভোর্স না হলে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বিবাহ-বিচ্ছেদে স্ত্রীকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ বা ভরণপোষণের খরচ (Alimony) দিতে হয় স্বামীকে। তবে সম্প্রতি মুম্বইয়ে এক দম্পতির বিবাহ-বিচ্ছেদের পর স্বামীকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিলেন স্ত্রী। শুনতে অবাক লাগছে! বাস্তবে এমনটাই ঘটেছে। কয়েক হাজার টাকা নয়, প্রায় ১০ কোটি টাকা স্বামীকে ভরণপোষণ দিয়েছেন স্ত্রী।
বিবাহ-বিচ্ছেদে স্বামীকে স্ত্রীর ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘটনা অবশ্য অবাক করার কোনও বিষয় নয়। হিন্দু আইনেই এই নিয়ম রয়েছে। বিবাহ-বিচ্ছেদের প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাওয়া যে কোনও দম্পতির জন্য শুধুমাত্র সামাজিক ও মানসিকভাবে হয়রানি নয়, এটি তাদের আর্থিক অবস্থাকেও প্রভাবিত করে। তাই হিন্দু বিবাহ আইনেই বিবাহ-বিচ্ছেদের পর স্বামীকে স্ত্রীর ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা উল্লেখ রয়েছে।
হিন্দু বিবাহ আইনের ধারা
হিন্দু বিবাহ আইনের ৯ নম্বর ধারাটি ‘দাম্পত্য অধিকার পুনরুদ্ধার’ (আরসিআর) সম্পর্কে রয়েছে। এই ধারা অনুসারে, স্বামী-স্ত্রী যখন কোনও সুনির্দিষ্ট কারণ ছাড়াই একে অপরের থেকে আলাদা থাকেন, তখন যে কোনও পক্ষ আদালতে যেতে পারে এবং আদালত তাদের একসঙ্গে থাকার নির্দেশ দিতে পারে। আদালতের নির্দেশ না মানলে উভয় পক্ষের যে কেউ বিবাহ-বিচ্ছেদের দাবি করতে পারে। এই মামলার নিষ্পত্তি হলেই বিবাহ বিচ্ছেদের প্রক্রিয়া শুরু করা যাবে এবং আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিষয়টি আসবে। তবে পারস্পরিক সম্মতিতে বিবাহ-বিচ্ছেদের ক্ষেত্রে এই ধারাটির কোনও বৈধতা নেই।
আবার হিন্দু বিবাহ আইনের ২৫ নম্বর ধারায় ভরণপোষণ ও ভরণপোষণের নিয়ম বলা হয়েছে, যেখানে স্বামী এবং স্ত্রী উভয়কেই ক্ষতিপূরণ পাওয়ার অধিকার দেওয়া হয়েছে। তবে এর কিছু শর্ত রয়েছে। যেখানে বিশেষ বিবাহ আইনের অধীনে সংঘটিত বিবাহগুলিতে শুধুমাত্র স্ত্রীর ভরণপোষণ বা ভরণপোষণ চাওয়ার অধিকার রয়েছে।
কখন স্ত্রীদের আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিতে হয়?
বিবাহ-বিচ্ছেদের ক্ষেত্রে পুরুষরাও তাদের স্ত্রীর কাছ থেকে খোরপোষ দাবি করতে পারে। সম্পর্কের অবসানের পর যদি স্বামীর উপার্জনের কোনও উৎস না থাকে এবং স্ত্রীর উপার্জন থাকে, তখনই স্বামী স্ত্রীর কাছে ভরণপোষণ চাইতে পারে। আবার স্ত্রীর আয়ের চেয়ে স্বামীর আয় কম হলেও স্বামী তার স্ত্রীর কাছে ভরণপোষণ দাবি করতে পারে।
যাইহোক, এই ধরনের ঘটনা খুব কমই দেখা যায় এবং সাধারণত স্বামীই তার স্ত্রীকে ভরণপোষণ দেয়।