নয়া দিল্লি: ‘অক্সফ্যাম ইন্ডিয়া’ সংস্থার বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের সুপারিশ করল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। এই সংস্থার বিরুদ্ধে ২০১০ সালের ফরেন কন্ট্রিবিউশন (রেগুলেশন) বা বিদেশি অবদান বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে। ২০১০ সালের ফরেন কন্ট্রিবিউশন (রেগুলেশন)-এর আওতায় নথিভুক্ত ছিল ‘অক্সফ্যাম ইন্ডিয়া’। এর মেয়াদ ছিল ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। তারপর থেকে ২০২০ সালের ফরেন কন্ট্রিবিউশন (রেগুলেশন) অ্যামেন্ডমেন্ট অ্যাক্ট চালু হয়েছিল। এই সংশোধিত বিধি অনুযায়ী কোনও সংস্থা, বিদেশ থেকে পাওয়া সহায়তা অন্য কাউকে স্থানান্তর করা যায় না। কিন্তু স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক দেখেছে, সংশোধিত আইনটি চালু হওয়ার পরও বিদেশ থেকে পাওয়া অর্থ বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করেছে অক্সফ্যাম ইন্ডিয়া। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রে আরও বলা হয়েছে, বিভিন্ন এনজিওগুলিতেও অর্থ স্থানান্তর করেছে অক্সফ্যাম।
আয়কর বিভাগের এক সমীক্ষায়, ধরা পড়েছিল যে অক্সফ্যাম ইন্ডিয়া ২০১০ সালের ফরেন কন্ট্রিবিউশন অ্যাক্টের বিধানকে ফাঁকি দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিল। পরিকল্পনা অনুযায়ী, বিদেশ থাকা আসা অর্থ অন্যান্য নথিভুক্ত সংস্থায় সরিয়ে দেওয়া হত। সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ডিরেক্ট ট্যাক্সেস বা সিবিডিটি-র আয়কর সমীক্ষায় অক্সফ্যাম ইন্ডিয়াকে বিদেশি সংস্থা বা সত্ত্বার বৈদেশিক নীতি প্রয়োগের যন্ত্র হিসেবে কাজ করে। এই বিদেশি সংস্থা এবং সত্ত্বাগুলি দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে অক্সফ্যাম ইন্ডিয়াকে অর্থ জোগান দেয়। সূত্রের খবর, কমিশন হিসেবে সেন্টার ফর পলিসি রিসার্চকে তাদের কর্মী বা সহযোগীদের মাধ্যমে অর্থ পাঠাত অক্সফ্যাম ইন্ডিয়া। টিডিএস ডেটাতেও এটা ধরা পড়েছে। দেখা গিয়েছে ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে সেন্টার ফর পলিসি রিসার্চকে ১২,৭১,১৮৮ টাকা পেমেন্ট করেছিল। অক্সফ্যাম ইন্ডিয়া তাদের এফসিআরএ অ্যাকাউন্টের বদলে সরাসরি তার ফরেন কনট্রিবিউশন ইউটিলাইজেশন অ্যাকাউন্টে ১.৫০ কোটি টাকার বিদেশি তহবিল সংগ্রহ করেছে।
অক্সফ্যাম ইন্ডিয়া অবশ্য জানিয়েছে, এফসিআরএ ২০১০-এর অধীনে তাদের নিবন্ধন পুনর্নবীকরণের জন্য আবেদন করেছে। দিল্লি হাইকোর্টে এই বিষয়ে একটি মামলা মুলতুবি রয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক তাদের এফসিআরএ লাইসেন্স বাতিল করার পর, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে সেই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আবেদন করেছিল অক্সফ্যাম ইন্ডিয়া। তাদের আবেদনের ভিত্তিতে কেন্দ্রকে নোটিস পাঠিয়েছিল আদালত। নোটিসে, এফসিআরএ লাইসেন্স থাকাকালীন পাওয়া ২১ কোটি টাকার বিদেশী অবদান, অক্সফ্যামকে ব্যবহার করার অনুমতি দেওয়ার নির্দেশ দিতে বলেছিল আদালত।