নয়া দিল্লি: ২০০০ টাকার নোট বাজার থেকে তুলে নিয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া। ফলে, বর্তমানে ভারতে সবথেকে বেশি মূল্যের মুদ্রা নোট হল ৫০০ টাকার। ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে, নোট বাতিলের সময়, ১০০০ টাকার নোটের সঙ্গে বাতিল করা হয়েছিল গান্ধী সিরিজের পুরোনো ৫০০ টাকার নোটও। তার বদলে গান্ধী সিরিজের নতুন নকশার ৫০০ টাকার নোট প্রকাশ করেছে আরবিআই। প্রাথমিকভাবে দাবি করা হয়েছিল, এই ৫০০ টাকার নোট জাল করা প্রায় অসম্ভব। কিন্তু, পরবর্তী সময়ে প্রচুর জাল ৫০০ টাকার নোট উদ্ধার হয়েছে। হোয়াটসঅ্যাপ এবং অন্যান্য মেসেজিং অ্যাপে ‘জাল’ ৫০০ টাকার নোট নিয়ে বিভিন্ন গুজব বার্তাও ছড়ায়। তবে, ৫০০ টাকার নোট জাল না আসল, তা চেনার কিছু নির্দিষ্ট পদ্ধতি রয়েছে। নোটের গায়ে এমন কিছু নির্দিষ্ট চিহ্ন রেখেছে আরবিআই, যার মাধ্যমে আসল নোট চিনে নেওয়া যায় –
গান্ধী সিরিজের নয়া ৫০০ টাকার নোট
আরবিআই জানিয়েছে, মহাত্মা গান্ধী সিরিজের নতুন ৫০০ টাকার নোটগুলিতে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নরের স্বাক্ষর রয়েছে। নোটটির সামনের দিকে মহাত্মা গান্ধীর এবং বিপরীত দিকে লালকেল্লার মোটিফ রয়েছে। এই নোটের বেস কালার স্টোন গ্রে, বা পাথুরে ধুসর। নোটের গায়ে আরও অনেক নকশা এবং জ্যামিতিক প্যাটার্ন রয়েছে। সামগ্রিকভাবে স্টোন গ্রে কালার স্কিমের সঙ্গে মানানসই রঙেই এই নকশা এবং জ্যামিতিক প্যাটার্নগুলি আঁকা আছে নোটের সামনে এবং বিপরীত দিকে।
নয়া ৫০০ টাকার নোটের মাপ
গান্ধী সিরিজের নতুন ৫০০ টাকার নোটের মাপ হল, প্রস্থে – ৬৬ মিমি এবং দৈর্ঘে ১৫০ মিমি।
৫০০ টাকার নোটের বৈশিষ্ট্যসমূহ (সামনের দিক)
১) নোটের সামনের অংশে, বাঁদিক ঘেসে থাকে একটি সি-থ্রু রেজিস্টার, তার মধ্যে সংখ্যায় লেখা থাকে ৫০০
২) তার পাশেই সুপ্ত চিত্রের মাধ্যমে সংখ্যায় লেখা থাকে ৫০০
৩) এই সুপ্ত চিত্রের উপরেই দেবনাগিরি লিপিতে সংখ্যায় লেখা থাকে ৫০০
৪) একেবারে কেন্দ্রীয় অবস্থানে থাকে মহাত্মা গান্ধীর প্রতিকৃতি
৫) গান্ধীর প্রতিকৃতির মধ্যেই অতি ক্ষুদ্র অক্ষরে দেবনাগরি লিপিতে ‘ভারত’ এবং ‘ইন্ডিয়া’
৬) গান্ধী প্রতিকৃতির ঠিক ডানপাশেই থাকে রঙ পরিবর্তনশীল একটি ব্যান্ড। নোটটি কাত করা হলে ব্যান্ডটির রঙ সবুজ থেকে নীল হয়ে যায়। ওই ব্যান্ডের মধ্যে দেবনাগরিতে ‘ভারত’ এবং ‘আরবিআই’ লেখা থাকে
৭) ব্যান্ডটির ডানপাশে থাকে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নরের প্রতিশ্রুতি। তার নীচে থাকে তাঁর স্বাক্ষর এবং তার নীচে আরবিআই-এর প্রতীক। আরবিআই-এর গভর্নরের প্রতিশ্রুতি ও স্বাক্ষর দেবনাগরী এবং ইংরাজি লিপিতে থাকে
৮) এর পাশে যে সাদা অংশ থাকে, সেখানে মহাত্মা গান্ধী সংখ্যায় ৫০০ টাকার জলছবি থাকে
৯) উপরে বাঁ দিকে এবং নীচে ডান দিকে ছোট থেকে ক্রমে বড় হওয়া ফন্টে রয়েছে সংখ্যার প্যানেল
১০) নিচের ডানদিকে রঙ পরিবর্তশীল কালি দিয়ে টাকার প্রতীক-সহ সংখ্যায় ৫০০ লেখা থাকে। নোটটি কাত করলে, লেখার রঙ সবুজ থেকে নীল হয়ে যায়
১১) তার ডানদিকে থাকে অশোক স্তম্ভের প্রতীক
দৃষ্টিহীনদের জন্য বিশেষ বৈশিষ্ট্য
দৃষ্টিহীনরা যাতে স্পর্শের মাধ্যমে নোটটি চিনে নিতে পারে, তার জন্য নোটে থাকা মহাত্মা গান্ধীর প্রতিকৃতি, অশোক স্তম্ভের প্রতীক, ক্ষুদ্র অক্ষরে লেখা ৫০০ টাকা এবং নোটের দুই ধারে পাঁচটি করে তেরচা সরল রেখা – সবগুলিই ইন্টাগ্লিও অর্থাৎ উঁচু হয়ে থাকে এমনভাবে ছাপা হয়।
৫০০ টাকার নোটের বৈশিষ্ট্যসমূহ (পিছনের দিক)
১) একেবারে বাঁ দিকে নোট ছাপানোর বছর লেকা থাকে
২তার পাশের সাদা অংশে থাকে স্লোগান-সহ স্বচ্ছ ভারত অভিযানের লোগো
৩) এরপর একটি প্যানেলে বিভিন্ন ভারতীয় ভাষায় টাকা কথাটি লেখা থাকে
৪) এর পাশে রয়েছে লালকেল্লার মোটিফ, যা ভারতের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতীক
৫) ডানদিকের উপরের কোনায় দেবনাগরী লিপিতে সংখ্যায় লেখা থাকে ৫০০
৫০০ টাকার নোটের এই বৈশিষ্টগুলো দিয়েই চিনে নিতে হবে আসল ৫০০ টাকার নোট। আর কোনও বৈশিষ্ট না থাকা মানেই বুঝে নিতে হবে, নোটটি জাল।