নয়া দিল্লি: ব্যাঙ্কের ছোট-খাটো কাজে আজকাল কেউ আর ঘণ্টার পর ঘণ্টা ব্যাঙ্কে লাইন দেন না। অনলাইনে সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কের অ্যাপ ডাউনলোড করেই তার মাধ্যমে যাবতীয় কাজ সেরে নেওয়া হয়। তবে অনলাইন ব্যাঙ্কিংয়ে একদিকে যেমন সুবিধা রয়েছে, তেমনই আবার অনেক ঝুঁকি রয়েছে। কষ্টোর্জিত টাকাকে সুরক্ষিত রাখা অত্যন্ত প্রয়োজন। সেই কারণে অনলাইনে প্রতারণার হাত থেকে বাঁচতে অত্যন্ত সতর্ক থাকা উচিত। তবে অনেক সময়ই ছোট্ট একটা ভুলেই অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। আপনার দেওয়া সামান্য একটি তথ্যকে কাজে লাগিয়েই অ্যাকাউন্ট সাফ করে দিতে পারে প্রতারকরা। সেই কারণেই কীভাবে নিজের অনলাইন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সুরক্ষিত রাখবেন, তা জেনে নিন-
অনেকের পক্ষেই পাসওয়ার্ড মনে রাখা অত্যন্ত কঠিন একটি কাজ। সেই কারণে তারা নিজেদের নাম বা জন্মতারিখ ও সালই পাসওয়ার্ড হিসাবে রাখেন। এটি সবথেকে বড় ভুল। কখনওই নিজের নাম বা জন্মতারিখের মতো ব্যক্তিগত তথ্য, যা সহজেই জানা যায়, তা পাসওয়ার্ড হিসাবে রাখবেন না। এতে প্রতারকদের অনলাইন সুরক্ষা বেষ্টনী ভেঙে আপনার অ্যাকাউন্টে ঢুকে পড়তে খুব বেশি সময় লাগবে না।
ব্যাঙ্কের পাসওয়ার্ড তৈরির সময় যে বিষয়গুলি মাথায় রাখবেন-
১. বড় পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন।
২. শব্দ, সংখ্যা মিলিয়ে পাসওয়ার্ড তৈরি করুন।
৩. ব্যক্তিগত তথ্য, যেমন নাম, জন্মতারিখ, ডাকনাম বা পোষ্যের নাম ব্যবহার করবেন না।
৪. ১২৩৪ বা এবিসিডি-র মতো শব্দ বা সংখ্যা পাসওয়ার্ডে দেবেন না।
অধিকাংশ সময়ই প্রতারকরা নানা অফার বা ছাড়ের টোপ দিয়ে ইমেইল পাঠায়। ওই পাঠানো লিঙ্কের মধ্যেই লুকোনো থাকে ম্যালওয়ার, যার মাধ্যমে মোবাইল বা ল্যাপটপে ভাইরাস ঢুকে পড়ে এবং যাবতীয় তথ্য ফাঁস হয়ে যায়। এছাড়া ফিশিং ওয়েবসাইট অর্থাৎ নকল ওয়েবসাইট তৈরি করেও প্রতারকরা ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট নম্বর, ক্রেডিট কার্ড বা ডেবিট কার্ডের তথ্য হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। সেই কারণেই এই ধরনের সন্দেহজনক ইমেইল ভুল করেও খুলবেন না। যদি ক্লিক করেও ফেলেন, তবে ব্যক্তিগত কোনও তথ্য জানাবেন না।
সোশ্যাল মিডিয়াই হোক বা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, দুই ধাপে নিরাপত্তা অত্যন্ত জরুরি। শুধুমাত্র পাসওয়ার্ড নয়, এর পাশাপাশি এসএমএসের মাধ্যমে ওটিপি আসা বা অটোমেটেড ফোন কলের মতো সুরক্ষাবেষ্টনীও রাখুন।
বর্তমানে প্রায় সকলেরই জানেন যে পাবলিক ওয়াই-ফাই সুরক্ষার ক্ষেত্রে ঝুঁকি হয়ে উঠেছে। ওই ফ্রি ওয়াই-ফাইয়ে লগ ইন করেই কোথায় কোন প্রতারক লুকিয়ে রয়েছে, তা বোঝা সম্ভব নয়। স্নিফিং সফটওয়্যারের মাধ্যমে সহজেই যেকোনও মোবাইলের উপরই নজর রাখা যায়। সেই কারণেই পাবলিক ওয়াই-ফাই ব্যবহার না করাই ভাল। যদি একান্তই ব্যবহার করতে হয়, তবে ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক বা ভিপিএন ব্যবহার করা উচিত সর্বদা।
অনলাইন ব্যাঙ্কিংয়ের ক্ষেত্রে প্রথমেই ব্যাঙ্কিং অ্যালার্ট সেট করা উচিত। এতে কেউ যদি আপনার টাকা তোলার চেষ্টা করে , ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের চেষ্টা করে বা অ্য়াকাউন্টে লগ ইন করার চেষ্টা করে, তবে আপনার ফোনে সঙ্গে সঙ্গে নোটিফিকেশন আসবে। প্রতারকদের হাত থেকে অ্যাকাউন্টটি রক্ষা করতে আপনি সঙ্গে সঙ্গেই ব্যাঙ্কে ফোন করে অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দিতে পারেন।