জ্বালানির পর এবার রাশিয়া থেকে সার আমদানি করবে ভারত। ইউক্রেন যুদ্ধের আবহে বিশ্ব বাজারে সারের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। এদিকে ভারতে সারের চাহিদা বৃদ্ধি পেতে চলেছে আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই। তার আগেই রাশিয়া থেকে সার আমদানির বিষয়ে আলোচনা চূড়ান্ত হয়েছে। সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, শুধু এই অর্থবর্ষই নয়, বরং আগামী বেশ কয়েকটি অর্থবর্ষে ভারত রাশিয়া থেকে সার আমদানি করবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে দুই পক্ষের আলোচনার পর।
উল্লেখ্য, জ্বালানি তেলের মতোই ভারতের সিংহভাগ সার আমদানি করা হয়। এদিকে দেশের অধিকাংশ মানুষই কৃষি নির্ভর অর্থনীতির উপর ভিত্তি করেই উপার্জন করেন। এই আবহে ভারতীয় অর্থনীতিতে সারের ভূমিকা অপরিসীম। এদিকে কৃষ্ণ সাগরের উপর যুদ্ধের মেঘ ভারতের অর্থনীতির উপরও কালো ছায়া হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেশের ২.৭ ট্রিলিয়ন ডলার মূল্যের অর্থনীতির ১৫ শতাংশ কৃষি নির্ভর। এই আবহে ভূ-রাজনৈতিক জটিলতা কাটিয়ে রাশিয়া থেকে সার আমদানি নিশ্চিত করা ভারতের জন্য বড় সাফল্য। এতে লাভবান হবেন দেশের কৃষকরা।
সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, গত ফেব্রুয়ারিতেই সার আমদানি নিয়ে দুই দেশের সরকারের আলোচনা শুরু হয়েছিল। জানা গিয়েছে, সার রফতানি করে ভারতের থেকে ডলারের বদলে অন্য কোনও মাধ্যমে ‘দাম’ নেবে রাশিয়া। ভারতের থেকে চা, গাড়ির যন্ত্রাংশের মতো সামগ্রীর বদলে সার দেবে রাশিয়া। তাছাড়া ভারতের থেকে কৃষি পণ্য ও চিকিৎসা সরঞ্জামও আমদানি করবে রাশিয়া। অস্ট্রিয়ান পররাষ্ট্র নীতি থিঙ্ক ট্যাঙ্ক AIES-এর পরিচালক ভেলিনা চাকারোভার মতে, ‘ভারত বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম সার আমদানিকারক। তারা রাশিয়া থেকে ১ মিলিয়ন টন ডাই-অ্যামোনিয়াম ফসফেট (ডিএপি) এবং পটাশ আমদানি করবে; এবং রাশিয়া থেকে প্রতি বছর প্রায় ৮ লাখ টন নাইট্রোজেন, ফসফরাস, পটাসিয়ামও (NPK) আমদানি করবে ভারত।’
প্রসঙ্গত, ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সারের বিশ্বব্যাপী মূল্যবৃদ্ধির মাঝেই মোদী সরকার গত ২১ মে ঘোষণা করেছিল যে সরকার কৃষকদের মূল্যবৃদ্ধি থেকে বাঁচাতে ১.১০ লক্ষ কোটির অতিরিক্ত সার ভর্তুকি দেবে। অতিরিক্ত বরাদ্দের জেরে বর্তমান অর্থবছরে (২০২২-২৩) সরকারের মোট সার ভর্তুকির পরিমাণ বেড়ে দাঁড়াবে ২.১৫ লাখ কোটিতে। এর পাশাপাশি রাশিয়া থেকে সার আমদানি ভারতের বাজারে সারের চাহিদা নিয়ন্ত্রণে রাখবে বলে মনে করা হচ্ছে।