নয়া দিল্লি: কেন্দ্রীয় সরকার ঘরোয়া শিল্পকে উৎসাহ দিতে আর স্থানীয় নির্মাতাদের সস্তা আমদানি থেকে রক্ষা করতে বড় পদক্ষেপ নিয়েছে। মোদি সরকার ৫টি চিনা পণ্যের উপর ৫ বছরের জন্য অ্যান্টি ডাম্পিং ডিউটি বা ডাম্পিং রোধ করার শুল্ক বসিয়েছে। সরকার স্থানীয় নির্মাতাদের চিন থেকে সস্তা আমদানি থেকে বাঁচাতে কিছু অ্যালিমিনিয়ামজাত জিনিস আর কিছু রসায়ন সহ পাঁচটি চিনা পণ্যের উপর পাঁচ বছরের অ্যান্টি ডাম্পিং ডিউটি বসিয়েছে।
কেন্দ্রীয় অপ্রত্যক্ষ কর আর সীমা শুল্ক বোর্ড (CBIC)-এর আলাদা আলাদা নোটিফিকেশন অনুযায়ী, অ্যালুমিনিয়ামের কিছু ফ্ল্যাট রোল্ড পণ্য, সোডিয়াম হাইড্রোসালফাইট (রঞ্জক শিল্পে ব্যবহৃত), সিলিকন সিলেন্ট (সৌর ফটোভোল্টিক মডিউল এবং থার্মাল পাওয়ার অ্যাপ্লিকেশন তৈরিতে ব্যবহৃত), হাইড্রোফ্লোরোকার্বন (HFC) কম্পোনেন্ট আর-৩২ এবং হাইড্রোফ্লোরোকার্বন মিশ্রণ (দুটিই রেফ্রিজারেশন শিল্পে ব্যবহৃত হয়)-এর উপর শুল্ক বসিয়েছে।
ভারতে হয়েছে এই জিনিসগুলির ডাম্পিং
এই শুল্ক বাণিজ্য মন্ত্রালয়ের তদন্ত শাখা ডিরেক্টোরেট জেনারেল অব ট্রেড রেমেডিজ (DGTR)-এর সুপারিশের পর লাগানো হয়েছে। ডিজিটিআর আলাদা আলাদা তদন্ত করে পেয়েছে যে এই পণ্যগুলিকে ভারতীয় বাজারে স্বাভাবিক মূল্যের চেয়ে কম দামে রপ্তানি করা হয়েছে, যার পরিণামস্বরূপ এই ডাম্পিং হয়েছে।
৫ বছর পর্যন্ত বসেছে অ্যান্টি ডোপিং ডিউটি
ডিজিটিআর-এর তরফে জানানো হয়েছে, এর ফলে ঘরোয়া শিল্পের ডাম্পিং লোকসান হয়েছে। সিবিআইসি জানিয়েছে, এই নোটিফিকেশনের (সিলিকন সিলেন্টের উপর) অধীনে বসানো অ্যান্টি ডোপিং শুল্ক অফিসিয়াল গেজেটে নোটিশ প্রকাশের দিন থেকে পাঁচ বছর পর্যন্ত ধার্জ করা হবে যতক্ষণ না এটা রদ বা সংশোধন করা হয়। এই শুল্ক ভারতীয় মুদ্রায় দিতে হবে।
এই দেশগুলির উপরও লাগানো হয়েছে নিষেধাজ্ঞা
সিবিআইসি ঘরোয়া নির্মাতাদের সস্তা চাইনিজ পণ্যের আমদানি থেকে বাঁচাতে সিকেডি/এসকেডি (পূর্ণ আর অর্ধ-নকড ডাউন)-এ ট্রেলরের জন্য ভেহিকল কম্পোনেন্ট এক্সেলেও কর বসানো হয়েছে। একইভাবে তারা ইরান, ওমান, সৌদি আরব আর সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ক্যালক্লাইন্ড জিপ্সাম পাউডারে আমদানির উপরও পাঁচ বছরের জন্য কর বসিয়েছে। প্রসঙ্গত ডিজিটিআর শুল্ক বসানোর সুপারিশ করে আর অর্থমন্ত্রক তা লাগু করে।
দেশ এটা নির্ধারিত করার জন্য ডাম্পিং রোধ করার তদন্ত করে যে ঘরোয়া শিল্পের মূলধনের থেকে কম আমদানিতে লোকসান হয়েছে কিনা। কাউন্টার উপায় হিসেবে তারা বিশ্ব ব্যবসায়িক সংস্থার শাসনের অধীনে কর বসায়। সঠিক ব্যবসা সুনিশ্চিত করতে আর ঘরোয়া শিল্পকে সহজ সুযোগ প্রদান করার জন্য ডাম্পিং রোধ করার ব্যবস্থা নেওয়া হয়। ভারত আর চিন দুই দেশই জেনিভায় অবস্থিত বিশ্ব বাণিজ্যিক সংস্থার সদস্য। ভারত চিন থেকে ডাম্প করা পণ্যের আমদানির বিরুদ্ধে বেশিরভাগ ডাম্পিং বিরোধী মামলা শুরু করেছে। এপ্রিল-সেপ্টেম্বর ২০২১ এর সময়সীমায় চিন থেকে ভারতের রপ্তানির পরিমাণ ছিল ১২.২৬ বিলিয়ন ডলার, অন্যদিকে আমদানির পরিমাণ ছিল ৪২.৩৩ বিলিয়ন ডলার, যার ফলে ভারতের ৩০.০৭ বিলিয়ন ডলারের ব্যবসায়িক লোকসান হয়েছে।
আরও পড়ুন: Petrol Price Today: আন্তর্জাতিক বাজারে টালমাটাল অপরিশোধিত তেল, জানুন দেশে জ্বালানি তেলের দাম