নয়া দিল্লি: দেশের তৈরি পণ্যাদি বিক্রির বাজার আরও বাড়ল। রবিবার, ভারত চার ইউরোপীয় দেশের ব্লক, ইউরোপিয়ান ফ্রি ট্রেড অ্যাসোসিয়েশন বা ইএফটিএ (EFTA)-র সঙ্গে ১৪টি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি বা এফটিএ (FTAs) স্বাক্ষর করল। দুই বা ততোধিক দেশের মধ্যে একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হলে অংশীদার দেশগুলির বিভিন্ন পণ্যের উপর থেকে আমদানি শুল্ক তুলে নেওয়া হয়। কাজেই, অনেক সস্তায় সেগুলি রফতানি করতে পারে অংশীদার দেশগুলি। এর পাশাপাশি রফতানিকে আরও উন্নত করতে এবং দেশীয় পণ্য ও পরিষেবাগুলির জন্য বৃহত্তর বাজার তৈরি নিশ্চিত করতে, ছয়টি প্রেফারেন্সিয়াল প্যাক্ট বা অগ্রাধিকার চুক্তিও করেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, উন্মুক্ত, ন্যায্য এবং ন্যায়সঙ্গত বাণিজ্যের জন্য দুই পক্ষের যৌথ অঙ্গীকারের প্রতীক হল ভারত-ইএফটিএ-র এই মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি।
২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় আসার পর থেকে, মরিশাস, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি এবং অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল ভারত। এদিন সেই তালিকার যুক্ত হল ইএফটিএ গোষ্ঠীও। এই গোষ্ঠীর সদস্য দেশগুলি হল, আইসল্যান্ড, লিচেনস্টাইন, নরওয়ে এবং সুইজারল্যান্ড। একত্রিতভাবে, এই বাণিজ্য চুক্তি ৯৪টি দেশের সঙ্গে ভারতের অগ্রাধিকারমূলক সম্পর্ক নিশ্চিত করবে। অর্থাৎ, বিভিন্ন পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে ভারতকেই অগ্রাধিকার দেবে দেশগুলি। এছাড়া, শ্রীলঙ্কা, ভুটান, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, কোরিয়া, জাপান এবং আশিয়ান গোষ্ঠীর সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি করেছে ভারত। এছাড়াও, আরও বেশ কয়েকটি দেশের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর নিয়ে কথা চলছে নয়া দিল্লির। এর মধ্যে রয়েছে ব্রিটেন, ওমান, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন, পেরু এবং ইজরায়েল। এই আলোচনাগুলি শেষ হলে, ১২০টিরও বেশি দেশের সঙ্গে এই ধরণের অগ্রাধিকারমূলক সম্পর্ক তৈরি হবে ভারতের।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, ইএফটিএ-র সঙ্গে ভারতের এই চুক্তি, ডিজিটাল লেনদেন, ব্যাঙ্কিং এবং আর্থিক পরিষেবা এবং ফার্মার মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে উদ্ভাবন এবং গবেষণা ও উন্নয়নে সহযোগিতার নয়া সম্পর্ক তৈরি করবে। এই চুক্তির ফলে, ভারত-সহ সবকটি অংশীদার দেশেরই জয় হয়েছে বলে জানান তিনি। তিনি আরও জানিয়েছেন, গত ১০ বছরে, ভারতের অর্থনীতির অস্বাভাবিক বৃদ্ধি ঘটেছে। বিশ্বের একাদশতম বৃহৎ অর্থনীতি থেকে, আজ ভারত বিশ্বের পঞ্চম বৃহৎ অর্থনীতিতে পরিণত হয়েছে।
দুই বা ততোধিক দেশের মধ্যে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এই চুক্তির ফলে, অংশীদার দেশগুলি থেকে আমদানি করা অধিকাংশ পণ্যের উপর থেকেই আমদানি শুল্ক তুলে নেওয়া হয় বা কমিয়ে দেওয়া হয়। পাশাপাশি, বিভিন্ন অ-বাণিজ্যিক বাধাও সরিয়ে দেওয়া হয়। পরিষেবা ক্ষেত্রে রফতানি এবং দ্বিপাক্ষিক বিনিয়োগও বাড়ে। সাধারণত, ১০ থেকে ৩০টি পণ্য বিষয়ে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।