নয়া দিল্লি: চলতি বছরে বিশ্বের বড় অর্থনীতিগুলির মধ্যে সর্বোচ্চ বৃদ্ধি ঘটবে ভারতের। আশাবাদী ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (World Economic Forum) প্রেসিডেন্ট বোর্জ ব্রেন্ডে (Borge Brende)। ভারতে সংক্ষিপ্ত সফরে এসে তিনি জানিয়েছেন, ভারতের অর্থনীতিতে এখন “স্নোবল এফেক্ট” চলছে। কী এই স্নোবল এফেক্ট? ব্রেন্ডে বলেছেন, “যখন তুষারের গোলা গড়িয়ে পড়তে শুরু করে, তখন তা আরও বড় হতে থাকে। ভারতীয় অর্থনীতিতে এখন সেটাই ঘটছে।” এর ফলে আগামী দিনে আরও বেশি বিনিয়োগ আসবে দেশে। পাশাপাশি তৈরি হবে আরও বেশি কর্মসংস্থান। ব্রেন্ডে বলেছেন, “ভারতে যে সকল সংস্কার করা হয়েছে, তাতে লাল ফিতের ফাঁস কমেছে। বিনিয়োগের জন্য ভাল পরিবেশ তৈরি হয়েছে এবং ডিজিটাল বিপ্লব ঘটছে। ভারতের এই বৃদ্ধির পথ নিয়ে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম অত্যন্ত উৎসাহী এবং আশাবাদী।”
সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বোর্জ ব্রেন্ডে দাবি করেছেন, আগামী কয়েক বছরে ভারতে আরও দারিদ্র্য দূর হতে দেখা যাবে এবং তরুণদের জন্য আরও সুযোগ তৈরি হবে। তিনি জানান, উন্নয়নশীল বিশ্বের দেশগুলির ভারতের থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত। কারণ, অন্য যে কোনও উন্নয়নশীল দেশের তুলনায় ভারতে স্টার্টআপের বিস্তৃত ইকোসিস্টেম রয়েছে এবং ক্রমে এর পরিধি বাড়ছে। এর থেকে অন্যান্য দেশও অনুপ্রেরণা নিতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি। চলতি বছরে ভারতের অর্থনীতির প্রায় ৬ শতাংশ বৃদ্ধি হবে বলে আশা প্রকাশ করেছে ইকোনমিক ফোরাম। ব্রেন্ডের মতে, বিশ্বের বড় অর্থনীতিগুলির মধ্যে ভারতের অর্থনৈতিক বৃদ্ধিই সর্বোচ্চ হবে। তিনি বলেছেন, “যদি কোনও বাহ্যিক কারণের নেতিবাচকভাবে প্রভাব না পড়ে, তাহলে ভারতের সামনে অর্থনীতির অত্যন্ত শক্তিশালী অগ্রগতির পথ থাকবে। এই মুহূর্তে আমাদের যুদ্ধ, সংঘাতের জন্য কোনও সময় নেই। আত্মতুষ্ট হলে চলবে না।”
এই পরিস্থিতিতে ভারতের কী করনীয়? ব্রেন্ডের মতে, ভারত যে অর্থনৈতিক সংস্কারগুলি করেছে, ইতিমধ্যেই তার ফল পাওয়া যাচ্ছে। ভরতের এই ধরনের আরও সংস্কারের প্রয়োজন। পাশপাশি পরিকাঠামোর উন্নয়নে আরও বেশি বিনিয়োগ, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যোগাযোগ ব্যবস্থাকে উন্নত করা এবং আগামী বছরগুলিতে শিক্ষা, আপস্কিলিং, রিস্কিলিং এবং দক্ষতার উন্নয়ন আরও বেশি করে বিনিয়োগের প্রয়োজন। তিনি আরো জানিয়েছেন, করোনাভাইরাস মহামারি চলাকালীন ভারত একের পর এক সঠিক পদক্ষেপ করেছে। যে কারণে মহামারির পরে দ্রুত অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার করতে পেরেছে নয়া দিল্লি। তিনি জানিয়েছেন, মহামারির সময় কিছু কিছু দেশ সাধারণ মানুষকে অর্থনৈতিক সহায়তা দিতে গিয়ে অতিরিক্ত ব্যয় করেছে। এতটাই যে তাদের কোষাগার প্রায় শূন্য হয়ে গিয়েছে। নয়া দিল্লিও অর্থনৈতিক সহায়তা দিয়েছে। কিন্তু, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তা এমনভাবে পরিকল্পনা করেছিলেন যে, ভারতকে অন্য দেশের কাছে হাত পাততে হয়নি। অন্যদিকে বহু দেশ অতিরিক্ত ব্যয়ের ফলে ঋণের ফাঁদে পড়ে গিয়েছে।