Indian Currency: ডলার-পাউন্ড-ইউরোর সঙ্গে শীঘ্রই হার্ড কারেন্সির ক্লাবে ভারতীয় মুদ্রা? নেপথ্যে কোন X ফ্যাক্টর?
Indian Currency: ভারতীয় অর্থনীতিতে সবসময়েই ভালমন্দ হাত ধরাধরি করে এগোয়। প্রদীপের নীচে ঘন অন্ধকার থাকে। আগেও থাকত এখনও আছে। মাথাপিছু আয়ের নিরিখে ভারত এখনও একেবারে পিছনের সারিতে। অনেক ছোট দেশের তুলনায় অনেক পিছিয়ে। অথচ সেই দেশই আবার দুনিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি হয়ে ওঠার পথে।
কলকাতা: বেশ কিছুদিন ধরেই মার্কিন ডলারের তুলনায় টাকার দাম পড়ছে। আন্তর্জাতিক বাজারে একের পর এক অচলাবস্থার জেরে দুনিয়ার শক্তিশালী কারেন্সিগুলোরও একই অবস্থা। তবে এরমধ্যেই ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে ইন্ডিয়ান কারেন্সি (Indian Currency) মানে টাকা নিয়ে আত্মবিশ্বাসী বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের অনেকেই বলছেন আর কয়েক বছরের মধ্যেই হার্ড কারেন্সি ক্লাবে ঢুকতে চলেছে টাকা। নর্থ ব্লকের এক আমলা বললছেন, ইতিমধ্যেই হার্ড কারেন্সির তালিকায় ঢোকার জন্য টাকার দৌড় শুরু হয়ে গেছে। শুধু কয়েকটা ধাপ পেরনো বাকি।
হার্ড কারেন্সি জিনিসটা কী?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হার্ড কারেন্সি মানে হল সেই মুদ্রা দুনিয়ার সব দেশে যার স্বীকৃতি ও গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। এই তালিকায় রয়েছে, ডলার-পাউন্ড-ইউরো। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যে কোনও দেশের মুদ্রার হার্ড কারেন্সি ক্লাবে ঢোকাটা কঠিন। সেটা হতে গেলে ওই দেশের আন্তর্জাতিক লেনদেনের একটা বড় অংশ ওই মুদ্রায় হওয়া দরকার। এটা হল তিনটে প্রাথমিক শর্তের একটা। দ্বিতীয় শর্ত, সংশ্লিষ্ট দেশে রাজনৈতিক এবং আর্থিক স্থিতাবস্থা থাকতেই হবে। রাজনৈতিক কিংবা অর্থনৈতিক অচলাবস্থা দেখা দিলে কোনও দেশের মুদ্রার হার্ড কারেন্সি তকমা বাতিলও হতে পারে। নিজস্ব মুদ্রায় অন্তত ৩০ থেকে ৪০ দেশের সঙ্গে ব্যবসা করলে হার্ড কারেন্সির স্বীকৃতি পাওয়া সহজ হয়। মানে ভারত যদি টাকায় ৩০-৪০টি দেশের সঙ্গে বাণিজ্য চালাতে সক্ষম হয় তাহলে রুপি হয়তো দ্রুতই হার্ড কারেন্সির শিরোপা পেতে পারে। তবে এটা যে খাতায়-কলমে নিয়ম এমনটা নয়। আরও একটা বিষয় হল সেই দেশের বন্ডকে আন্তর্জাতিক বাজারে গ্রহণযোগ্য হতে হবে। এখন আমাদের সবার মনে প্রশ্ন আসতেই পারে যে কোন শর্তে টাকা হার্ড কারেন্সি হওয়ার দৌড়ে ঢুকে পড়ল?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দৌড়ে ঢুকে পড়েছে কারণ অনেকগুলি ফ্যাক্টর ভারতের পক্ষে রয়েছে। এক আমরা এই মুহূর্তে একাধিক দেশের সঙ্গে টাকার মাধ্যমে লেনদেন করছি। আমেরিকা-ফ্রান্সের মতো উন্নত দেশের ফিনান্সিয়াল মার্কেটে চুটিয়ে ব্যবসা করছে রুপি বন্ড। মানে যে বন্ডের রিটার্ন টাকায় মিলবে। ভারতীয় রান্নায় নানারকম মশলা ব্যবহারের সূত্র ধরে বিদেশে রুপি বন্ডকে মশালা বন্ড বলেও ডাকা হয়। আর বছর দেড়েকের মধ্যে ভারতের নিজস্ব ডিজিটাল মুদ্রা দিয়েও হয়তো আন্তর্জাতিক বাণিজ্য চালু হয়ে যাবে। এসবই ভারতীয় টাকার হার্ড কারেন্সি ক্লাবে ঢোকার পথ খুলে দিতে পারে বলে বাজার বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
আরও একটি বিষয় ভারতের পক্ষে যাচ্ছে। সেটা হল ডিজিটাল লেনদেনের অঙ্ক। আমাদের দেশের ঘরোয়া বাজারে বিশাল অঙ্কের ডিজিটাল লেনদেন টাকার হাতও শক্ত করছে। এটা মজার হলেও সত্যি। ভারতীয় অর্থনীতিতে সবসময়েই ভালমন্দ হাত ধরাধরি করে এগোয়। প্রদীপের নীচে ঘন অন্ধকার থাকে। আগেও থাকত এখনও আছে। মাথাপিছু আয়ের নিরিখে ভারত এখনও একেবারে পিছনের সারিতে। অনেক ছোট দেশের তুলনায় অনেক পিছিয়ে। অথচ সেই দেশই আবার দুনিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি হয়ে ওঠার পথে। মঙ্গলবারও ২টো রেটিং এজেন্সি জানিয়েছে এই অর্থবর্ষে ভারতীয় অর্থনীতিতে তেজি ভাব থাকবে। শুধু এই বছর নয়। পরের দুটো আর্থিক বছরেও থাকবে। এই উত্তরণের চাবিকাঠি কাদের হাতে? না বিগ কর্পোরেট বা সুপার রিচদের হাতে নয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সেই চাবিকাঠি কিন্তু মধ্যবিত্তদের হাতে।