নয়া দিল্লি: আগামী ৫ বছরের মধ্যে ভারত বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনৈতিক দেশ হিসাবে উঠে আসবে বলে দাবি জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। তাঁর সেই দাবি যে অমূলক নয়, তা দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি থেকেই স্পষ্ট। দ্রুত হারে বেড়ে চলেছে ভারতের অর্থনীতি। দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক গ্রাফেই সেটা প্রতিভাস হয়েছে।
বিশ্বব্যাঙ্ক এবং আইএমএফের মতে, ২০২৩ সালেও ভারত সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতি। ভারতের জিডিপি এই বছর ৬.৩ শতাংশ গতিতে বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। বড় অর্থনীতির দেশগুলির মধ্যে ভারতের গতি সবচেয়ে বেশি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
INVESTING IN INDIA IS IMPROVING INDIA
If you see a startup growing, does that mean it doesn’t have any flaws? That it’s the best in the world? That you’re going to use it for everything right away?
No, of course not. But you might start using it, and putting money into it, and… https://t.co/ht7dzMNL5K pic.twitter.com/2ySxmTK22E
— Balaji (@balajis) November 26, 2023
ভারতে অর্থনৈতিক বৃদ্ধির অন্যতম কারণ বিনিয়োগ বৃদ্ধি। কেন ভারতে বিনিয়োগ হচ্ছে, সে বিষয়ে বিশদ ব্যাখ্যা দিয়েছে বালাজি। সংস্থার তরফে জানানো হয়, ভারতের অর্থনৈতির বৃদ্ধির সম্ভাবনা লক্ষ্যণীয়। এর বেশ কিছু কারণও রয়েছে। যেমন-
১) সভ্যতার পুনর্জন্ম- সিন্ধু উপত্যকা সভ্যতা মানব ইতিহাসের প্রাচীনতম সভ্যতাগুলির মধ্যে একটি। তারপরেও ভারত এখনও প্রযুক্তিগত স্টার্টআপের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। ১৯৯১ সালে উদারীকরণ নীতির পর থেকে এই দেশ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষভাবে প্রসারিত হয়। কয়েক শতাব্দী উপনিবেশবাদ থাকার পরেও সম্প্রতি ভারত পুনর্জন্ম পেয়েছে। তাই সরাসরি ল্যান্ডলাইন ফোন থেকে মোবাইল বা নগদ থেকে ইউপিআই সিস্টেমের মধ্যে আসতে পেরেছে।
২) আন্ডারডগ মিলিওনেয়ার- কোনও কিছুর উন্নতি হচ্ছে পর্যবেক্ষণ করার অর্থ এটা নয় যে, সেটা ইতিমধ্যেই এক নম্বরে রয়েছে। ভারতের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলির মধ্যে একটি হল, ভারতীয়রা নিজেদের ‘আন্ডারডগ’ বলে মনে করে। ক্ষুধার্ত ‘স্লামডগস’ বা অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী ‘ওভারডগ’ নয়, ‘আন্ডাররেটেড আন্ডারডগ’ – অর্থাৎ জয়ের সুযোগ আছে, কিন্তু নিশ্চিতভাবে কোনও গ্যারান্টি নেই।
বালাজি-র তরফে আরও জানানো হয়, ঋত্বিক রোশন অভিনীত ‘সুপার ৩০’ সিনেমাও একটি বড় বার্তা দেয়। ভারতীয়রা জানে যে, তারা ১ নম্বর নয়, এমনকি ২ নম্বরও নয়। কিন্তু প্রবাসীরা এটা দেখাতে সাহায্য করে যে, ভারতীয়রা বিশ্বমানের হতে পারে এবং ভারত নিজেই বিশ্বমানের হয়ে উঠতে পারে।
৩) বিকেন্দ্রীভূত প্রবাসী- ভারতের অন্যতম প্রধান শক্তি হল, প্রবাসী ভারতীয়। এই শতাব্দীতে চিন বিশ্বের সেরা হয়ে উঠতে পারে, কিন্তু ভারতও বিশ্বের সেরা হওয়ার পথে রয়েছে। তাই ভারতের উন্নয়ন চিনের থেকে ভিন্ন দেখাবে। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হল, ভারতীয়রা যে কোনও জায়গায় যেতে ইচ্ছুক এবং সক্ষম। কিন্তু, পশ্চিম দুনিয়ার মানুষদের বেশিরভাগই অন্যত্র যেতে ইচ্ছুক নয়। কারণ তারা এখনও মনে করে যে, তাদের সমাজই একমাত্র স্থান যেটি ‘প্রথম বিশ্ব’। চিনারা ক্রমবর্ধমানভাবে চলাচল করতে সক্ষম নয়। অর্থাৎ চিন যদি কেন্দ্রীভূত রাষ্ট্র হয়, তাহলে ভারত বিকেন্দ্রীভূত প্রবাসী।
৪) বিশেষ অর্থনৈতিক জোন- বেশ কয়েকটি ক্ষেত্র একীভূত হওয়ায় ভারত বিশেষ অর্থনৈতিক জোন হয়ে উঠেছে। অর্থাৎ (ক) ভারতের পুনর্জন্ম হয়েছে, (খ) ভারতীয়রা জানে যে তারা বেড়ে উঠছে-এখনও আন্ডারডগ, এবং (গ) প্রবাসীদের উপর অনেক বেশি ফোকাস করে, যার ফলে ভারতের উন্নয়ন চিনের উন্নয়ন থেকে সম্পূর্ণ আলাদা হতে চলেছে। ১৯৯১ সালে ভারত নিজেই দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থার পরিবর্তন ঘটিয়েছিল। আর এখন উন্নতির দিকে অগ্রসর হয়ে চলেছে।
এছাড়া গত ১০ বছরে ভারতের ইন্টারনেট সংযোগ, ডিজিটাল পেমেন্ট এবং পরিকাঠামোর ব্যাপক উন্নতি ঘটেছে। স্বাভাবিকভাবে বিশ্বের মঞ্চে বিনিয়োগের অন্যতম স্থান হয়ে উঠেছে ভারত।