নিজস্ব প্রতিনিধি: ড্রিম ১১, এমপিএল কিংবা ওয়ার্ল্ড ক্রিকেট চ্যাম্পিয়ানশিপের মতো অনলাইন গেমিং প্ল্যাটফর্মগুলি এবার আনতে চলেছে এনএফটি বা নন-ফাঞ্জিবেল টোকেন। বর্তমানে সারা বিশ্বজুড়ে এই নয়া টোকেনই বিনিয়োগের নতুন মাধ্যম হয়ে উঠতে চলেছে। ইতিমধ্যে এনবিএ কিংবা গলফের একাধিক এনএফটি বিশ্বজুড়ে বিনিয়োগের নয়া গন্তব্য হিসেবে উঠে এসেছে।
বর্তমানে সলমন খান থেকে শুরু করে দেশ-বিদেশের একাধিক সেলিব্রিটি এই এনএফটি-র জোয়ারে গা ভাসিয়েছেন। অনেকেই ইতিমধ্যেই নিজেদের নামেও এনএফটি বাজারে এনেছেন।
এনএফটি হল একটি ডিজিটাল সম্পদ যা মূলত ব্লকচেইন প্রযুক্তি ব্যবহার করে থাকে। অর্থাৎ, নির্দিষ্ট একটি নেটওয়ার্কযুক্ত কম্পিউটারেই এনএফটি লেনদেনের হিসেব রাখা হয়। ব্লকচেইন মূলত একটি পাবলিক লেজার হিসাবে কাজ করে, যা যে কাউকে এনএফটি-র বিশুদ্ধতা ও তার মালিক কে, তা জানায়।
মূলত কোনও ডিজিটাল বিনিয়োগ মাধ্যম যতবার খুশি কেনাবেচা ও পুনরুৎপাদন করা যায়, কিন্তু এনএফটি একধিকবার লেনদেন বা পুনরুৎপাদন করা যায় কারণ প্রতিটি এনএফটি-এর একটি ইউনিক ডিজিটাল স্বাক্ষর রয়েছে, যা এর বিশুদ্ধতা প্রমাণ করে।
সাধারণত, এনএফটি ক্রিপ্টোকারেন্সি বা ডলারে কেনা হয় এবং ব্লকচেইনে এই লেনদেনের হিসাব রাখা হয়।
বর্তমানে বিভিন্ন ক্ষেত্রের এনএফটি বাজারে এসেছে, তবে গেমিং এনএফটি এখন অত্যন্ত জনপ্রিয়। এর কারণ, অনলাইন গেম প্রস্তুতকারী সংস্থা অ্যাক্সি ইনফিনিটি গত এক বছরের কম সময়ে ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি এনএফটি বিক্রি করেছে এবং তাদের প্লে-টু-আর্ন মডেলটিকে জনপ্রিয় হয়েছে সারা বিশ্বজুড়ে। এখন অন্য অনলাইন গেম প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলিও সক্রিয়ভাবে সেই পথকেই অনুসরণ করতে চাইছে। সেই কারণেই ড্রিম ১১, এমপিএলের মতো সংস্থাগুলির এনএফটি আনার সম্ভাবনার কথা সামনে আসছে।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, অনলাইন গেমিং ক্ষেত্রের ব্যবহারকারীর সংখ্যা গত এক বছরে উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, সেই কারণেই সংস্থাগুলি এই এনএফটি চালু করার কথা গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করছে।
প্রখ্যাত মার্কেট রিসার্চ সংস্থা সেনসর টাওয়ারের এক সাম্প্রতিক সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, ভারতে সারা বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বেশি অনলাইন গেম খেলা ও ডাউনলোড করা হয়। সারা বিশ্বের মোট অনলাইন গেমের প্রায় ১৮ শতাংশই ডাউনলোড হয় ভারতে। যা সারা বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বেশি।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই এনএফটি চালু হলে যে কোনও অনলাইন গেমের ইন-অ্যাপ পারচেজ কার্যত বন্ধ হয়ে যাবে। কারণ, গত এক বছরে এই এনএফটির ব্যবহার অনলাইন গেমের ক্ষেত্রে ১০ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
যদিও এই এনএফটি আনার ব্যাপারে ড্রিম ১১ কিংবা এমপিএলের তরফ থেকে সরকারিভাবে কোনও মন্তব্য করা হয়নি।
অনলাইন গেম প্রস্তুতকারী সংস্থা নাজারা টেকনোলজিসের সিইও মণীশ আগরওয়াল এই প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, “এই প্লে-টু-আর্ন মডেলটি ভারতীয় অনলাইন গেম প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলির বাজারকে আমূল বদলে দেবে। এটি মূলত নতুন ব্যবহারকারীদের ব্যবহারের একটি প্রধান কারণ হল অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়া। যা আগামীতে বড় হিসেবে দেখা দিতে চলেছে। সেই কারণেই এই ধরনের সংস্থাগুলি এনএফটি আনার দিকে ঝুঁকছে।”