নয়া দিল্লি: রেলের ওয়েটিং লিস্টে থাকা অনেক টিকিটই বাতিল হয়। আর এর থেকে একটা বিরাট আয় হয় ভারতীয় রেলের। আমরা বলছি না, তথ্যের অধিকার আইন বা আরটিআই আইনের আওতায় করা এক প্রশ্নের উত্তরে রেলের নিজেই জানিয়েছে, বাতিল টিকিট রেলওয়ের জন্য এক উল্লেখযোগ্য রাজস্বের উৎস হয়ে দাঁড়িয়েছে। তথ্য অনুসারে, ২০২১ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে ওয়েটিং লিস্টে থাকা বাতিল হওয়া টিকিট থেকে ১,২২৯ কোটি টাকা আয় করেছে রেলওয়ে। মধ্য প্রদেশের আরটিআই কর্মী বিবেক পান্ডে এই বিষয়ে প্রশ্ন করেছিলেন। তারই জবাবে রেল মন্ত্রক এই তথ্য ভাগ করে নিয়েছে। রেলের ভাগ করা তথ্যে দেখা যাচ্ছে, বাতিল হওয়া টিকিট থেকে ধারাবাহিকভাবে আয় বেড়েছে রেলের।
বাতিল টিকিট থেকে আয়ের হিসেব
আরটিআই-এর উত্তর অনুসারে, ২০২১ সালে, ওয়েটিং লিস্টে থাকা মোট ২.৫৩ কোটি টিকিট বাতিল হয়েছিল। এর থেকে রেলের আয় হয়েছে ২৪২.৬৮ কোটি টাকা। ২০২২-এ টিকিট বাতিল হয়েছিল ৪.৬ কোটি। আয় বেড়ে হয়েছিল ৪৩৯ কোটি টাকা। একইভাবে, ২০২৩ সালে, রেলের মোট ৫.৩৬ কোটি টিকিট বাতিল হয়েছিল। রেলের আয় হয়েছিল ৫০৫ কোটি টাকা। আর ২০২৪ সালে শুধুমাত্র জানুয়ারি মাসেই ৪৫.৮৬ লক্ষ টিকিট বাতিল হয়েছে। তা থেকে আয় হয়েছে ৪৩ কোটি টাকা।
২০২৩-এর দীপাবলি
গত তিন বছরের মধ্যে, সবথেকে বেশি টিকিট বাতিল হয়েছিল ২০২৩-এর দীপাবলির সময়। ২০২৩-এর ৫ নভেম্বর থেকে ১৭ নভেম্বরের মধ্যে ৯৬.১৮ লক্ষ টিকিট বাতিল হয়েছে। এই বাতিল টিকিট শুধু ওয়েটিং লিস্টে থাকা টিকিট নয়, এর মধ্যে কনফার্ম টিকিট, আরএসি টিকিটও ছিল। এর ফলে, বাতিল টিকিট থেকে ওই ১২ দিনে রেলের মোট ১০.৩৭ কোটি টাকা আয় হয়েছে।
টিকিট বাতিল করলে কত টাকা করে কাটে রেল?
ওয়েটিং লিস্টে থাকলে –
যদি কোনও আরএসি-তে থাকা বা ওয়েটিং লিস্টে থাকা টিকিট বাতিল করা হয়, তাহলে যাত্রী প্রতি ৬০ টাকা করে কেটে নেওয়া হয়।
যদি ৪৮ ঘণ্টা আগে বাতিল করা হয় –
ট্রেনের নির্ধারিত যাত্রার ৪৮ ঘন্টা আগে যদি কোনও কনফার্মড টিকিট বাতিল করা হয়, তাহলে টিকিট বাতিলের জন্য একটা মূল্য কেটে নেয় রেলওয়ে। নীচে, বিভিন্ন শ্রেণির টিকিট বাতিলের মূল্য দেওয়া হল –
এসি ফার্স্ট ক্লাস বা এক্সিকিউটিভ ক্লাস – ২৪০ টাকা
এসি ২ টিয়ার বা ফার্স্ট ক্লাস – ২০০ টাকা
এসি ৩ টায়ার বা এসি চেয়ার কার বা এসি ৩ ইকোনমি ক্লাস – ১৮০ টাকা
স্লিপার ক্লাস – ১২০ টাকা
সেকেন্ড ক্লাস – ৬০ টাকা
৪৮ ঘণ্টার কম সময় হলে –
কোনও কনফার্মড টিকিট যদি, ট্রেনের নির্ধারিত যাত্রার ১২ ঘণ্টা থেকে ৪৮ ঘণ্টা আগের মধ্যে বাতিল করা হয়, তাহলে আসল ভাড়ার ২৫ শতাংশ, বাতিল করার মূল্য হিসেবে কাটা হয়। ট্রেনের নির্ধারিত যাত্রার চার ঘণ্টা আগে চার্ট প্রস্তুত করা হয়। ট্রেন ছাড়ার ৪ ঘণ্টা থেকে ১২ ঘণ্টা আগের মধ্যে টিকিট বাতিল করা হলে, ভাড়ার ৫০ শতাংশ টিকিট বাতিলের মূল্য হিসেবে কাটা হয়।