Indian Whisky: ভারতীয় হুইস্কির নেশায় বুঁদ গোটা বিশ্ব, জায়গাই পাচ্ছে না স্কচ

TV9 Bangla Digital | Edited By: অমর্ত্য লাহিড়ী

Dec 18, 2023 | 12:54 PM

Indian Whisky: ভারত ক্রমশ হুইস্কিপায়ী দেশ থেকে হুইস্কি উৎপাদনকারী দেশে পরিণত হচ্ছে। ভারতীয় হুইস্কির স্বাদে মাতছে গোটা বিশ্ব। এমনকি, ভারতীয় সিঙ্গল মল্টের দাপটে কোনঠাসা হয়ে যাচ্ছে এতদিন পর্যন্ত হুইস্কির বাজরে রাজত্ব করা স্কচ-ও।

Indian Whisky: ভারতীয় হুইস্কির নেশায় বুঁদ গোটা বিশ্ব, জায়গাই পাচ্ছে না স্কচ
প্রতীকী ছবি
Image Credit source: Twitter

Follow Us

নয়া দিল্লি: সাধারণভাবে এশীয় দেশগুলিতে অ্যালকোহল হিসেবে বিয়ারের বিক্রিই বেশি। তবে, ভারতের বেশি পছন্দ হুইস্কি। দীর্ঘদিন ধরেই ভারত বিশ্বের অন্যতম হুইস্কি বিক্রয়ের বাজার ছিল। তবে এখন, ছবিটা ধীরে ধীরে বদলে যাচ্ছে। না, ভারতীয়রা হুইস্কি পান করা ছাড়ছেন না। তবে, ভারত ক্রমশ হুইস্কিপায়ী দেশ থেকে হুইস্কি উৎপাদনকারী দেশে পরিণত হচ্ছে। ভারতীয় হুইস্কির নেশায় বুঁদ গোটা বিশ্ব। এমনকি, ভারতীয় সিঙ্গল মল্টের দাপটে কোনঠাসা হয়ে যাচ্ছে, এতদিন পর্যন্ত হুইস্কির বাজারে রাজত্ব করা স্কচ-ও। হুইস্কির ব্র্যান্ড হিসেবে জগৎজোড়া নাম রয়েছে ফ্রান্সের পেরনোড রিকার্ডের তৈরি ‘গ্লেনলিভেট’ বা ব্রিটেনের সংস্থা ডিয়াজিওর তৈরি ‘তালিসকারে’র। কিন্তু বর্তমানে, মদের দোকানের শেলফে জায়গা পাওয়ার জন্য তাদের লড়াই করতে হচ্ছে ‘ইন্দ্রি’, ‘অমৃত’ এবং ‘রামপুরে’র মতো দেশীয় হুইস্কি ব্র্যান্ডগুলির সঙ্গে।

গত অগস্টে আমেরিকার সান ফ্রান্সিসকোতে, ‘ওয়ার্ল্ড অ্যাওয়ার্ডস ব্লাইন্ড টেস্টিং হুইস্কি’ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছিল। এই প্রতিযোগিতায় বিচারকদের আগে থেকে না বলে হুইস্কি পরিবেশন করা হয়েছিল। শুধুমাত্র স্বাদের বিচারে তাঁরা বিভিন্ন হুইস্কিকে নম্বর দিয়েছিলেন। সেই বিচারে ‘ইন্দ্রি’র ‘দিওয়ালি কালেক্টর্স এডিশন’ বিভিন্ন নামী-দামি স্কটিশ এবং মার্কিন প্রতিদ্বন্দ্বীদের পিছনে ফেলে সেরার তকমা জিতে নিয়েছে। এই কালেক্টর্স এডিশনের দাম ছিল ৩৪,৯৬০ টাকা। তবে শুধুই আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে পুরস্কার জেতা নয়, ব্যবসা বৃদ্ধির ক্ষেত্রেও হুইস্কির বাজার কাঁপাচ্ছে ভারতীয় ব্র্যান্ডগুলি।

দীর্ঘদিন ধরে ভারতে সিঙ্গল মল্ট হুইস্কি হিসেবে সবথেকে বেশি বিক্রি হত পেরনোডের গ্লেনলিভেট। গত বছর তাদের বিক্রি ৩৯ শতাংশ বেড়েছে। তবে, এর পাশাপাশি ভারতীয় ব্র্যান্ড, অমৃত-এর বিক্রি বেড়েছে ১৮৩ শতাংশ! একই সঙ্গে স্কচের বদলে বাড়ছে ভারতীয় সিঙ্গল মল্টের চাহিদা। আইডব্লিউএসআর ড্রিংকস মার্কেটের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১-২২ সালে ১৪৪ শতাংশ বেড়েছে ভারতীয় সিঙ্গল মল্টের উৎপাদন। সেখানে, স্কচ সিঙ্গল মল্টের উৎপাদন বেড়েছে মাত্র ৩২ শতাংশ। ২০২৭-এর মধ্যে ভারতীয় সিঙ্গল মল্টের ব্যবহার বছরে ১৩ শতাংশ করে বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

ভারতীয় হুইস্কিপায়ীদের মধ্যেও বিদেশি ব্র্যান্ড ছেড়ে, দেশি হুইস্কি পানের প্রবণতা বাড়ছে। অনেকের মতেই, ভারতীয় সিঙ্গল মল্ট হুইস্কি পান করলে তাঁরা জাতীয় গর্ব অনুভব করেন। পাশাপাশি, ভারতীয় মশলাদার খাবারের সঙ্গে স্কচ বা অন্য বিদেশি হুইস্কির থেকে বেশি মানানসই ভারতীয় মল্ট। আর এই প্রবণতা উপলব্দি করে, বিদেশি হুইস্কি প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলিও এখন স্কচ ছেড়ে ভারতীয় সিঙ্গল মল্টের দিকে মনোযোগ দিচ্ছে। গত বুধবার, পেরনোড তাদের প্রথম ভারতীয় সিঙ্গল মল্ট হুইস্কি, লঙ্গিচিউড ৭৭ প্রকাশ করেছে। আপাতত, এটি দুবাইয়ে পাওয়া যাচ্ছে। শিগগিরই গোটা বিশ্বেই এই হুইস্কি বিক্রি করা হবে। গত বছরই, পেরনোডের সবথেকে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী ডিয়াজিওর তাদের প্রথম ভারতীয় সিঙ্গল মল্ট হুইস্কি, গোড়াওয়ান উৎপাদন শুরু করেছিল। বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-সহ পাঁচটি বিদেশী বাজারে এই মদ বিক্রি হয়। বিদেশি সংস্থাগুলির এই ভারতীয় সিঙ্গল মল্টের দিকে ঝোঁকই হুইস্কির বাজারে ভারতের দাপরটের প্রমাণ বলে দাবি করছেন ভারতীয় হুইস্কি নির্মাতারা।

স্থানীয় ব্র্যান্ডগুলির এই চাহিদা কিন্তু দামের জন্য নয়। অনেকেই মনে করতে পারেন, ভারতীয় হুইস্কি বোধহয় স্কচ বা অন্য বিদেশি হুইস্কির থেকে সস্তা। কিন্তু, ইন্দ্রির একটি বোতলের দাম ৩,০০০ টাকা। অমৃতের ৩,৪০০ টাকা এবং রামপুরের বোতল বিক্রি হয় ৫,৪০০ টাকায়। তুলনায় কিন্তু, অনেক স্কচই সস্তায় পাওয়া যায়।

Next Article