২১ অগস্ট ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জে নথিভুক্ত হয় জিও ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস। কিন্তু নথিভুক্ত হওয়ার পর রোজই এই কোম্পানির শেয়ার ৫ শতাংশ লোয়ার সার্কিট হিট করতে থাকে। জিও ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস যা আগে রিলায়েন্স স্ট্র্যাটেজিক ইনভেস্টমেন্টস নামে পরিচিত ছিল, আসলে রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের অংশ ছিল এতদিন। কিন্তু এবার আলাদা করে জিও-র নথিভুক্তি করেছে তার প্যারেন্ট কোম্পানি। যদিও এখনও শুধুমাত্র ট্রেড টু ট্রেড (Trade to Trade বা T2T) বিভাগেই শেয়ার বেচাকেনা করার জন্য বৈধ জিও ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস।
জিও স্টক এক্সচেঞ্জে নথিভুক্ত হওয়ার পর রোজই লোয়ার সার্কিট হিট করছে। ২৬ অগস্ট শুক্রবার বাজার বন্ধ হয়ার আগে যদিও কিছু বেচাকেনা করেছে জিও ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস। শেয়ার প্রতি ২৬২ টাকা ৫ পয়সায় নথিভুক্ত হওয়া কোম্পানির ২৬ অগস্ট বাজার বন্ধ হওয়ার সময় শেয়ার প্রতি মূল্য ছিল ২১৪ টাকা ৫০ পয়সা। অর্থাৎ ১ সপ্তাহে প্রায় ১৬.২৩ শতাংশ অর্থ হারিয়েছে তারা।
রোজ লোয়ার সার্কিট হিট করার কারণ কী?
জিও ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের পেরেন্ট কোম্পানি রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ। আর এই রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ নিফটি৫০ সূচক ও সেনসেক্স সূচকের অংশ। অর্থাৎ নিফটি সূচকের সেরা ৫০টি শেয়ারের মধ্যে পড়ে রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ, অন্যদিকে সেনসেক্স যা দেশের সেরা ৩০টি কোম্পানি নিয়ে তৈরি তার মধ্যেও পড়ে রিলায়েন্স। আর মার্কেট ক্যাপিটালাইজেশনের ক্ষেত্রে রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ তো দেশের সব চেয়ে বড় কোম্পানি। ফলে পেরেন্ট কোম্পানি থেকে জিও ডিমার্জ হওয়ায় নিফটি৫০ সূচকে বর্তমানে ৫১টি কোম্পানি রয়েছে আর সেনসেক্সে রয়েছে ৩১টি কোম্পানি। এই সূচকগুলোতে রিলায়েন্স তো আছেই তার সঙ্গে যোগ হয়েছে জিও। কিন্তু জিও ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস যেহেতু মার্কেট ক্যাপিটালাইজেশনের বিচারে দেশের সেরা ৫০ বা সেরা ৩০টি কোম্পানির মধ্যে আসে না তাই তাকে এই সূচক থেকে বেরিয়ে যেতে হবে। প্রথমে জিওর বেরিয়ে যাওয়ার দিন স্থির হয়েছিল ২৯ অগস্ট। কিন্তু পর পর লোয়ার সার্কিট হিট করায় এই দিন পিছিয়ে দিয়েছে সেনসেক্স আর সেই একই পথের পথিক নিফটি৫০ সূচকও। সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, ৩১ অগস্ট এই দুই সূচক থেকে বেরিয়ে যেতে পারে জিও ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস।
রিলায়েন্স মার্কেট ক্যাপিটালাইজেশনের বিচারে দেশের সেরা কোম্পানি। ফলে দেশের যে কোনও সূচকে রিয়ালেন্স একেবারে প্রথম সারিতেই থাকে। সে নিফটি৫০, নিফটি১০০ বা সেনসেক্স যাই হোক না কেন। এবার জিও তার থেকে ডিমার্জ হওয়ার পর সে যে ওই সূচকে থাকবেই এমনটা নয়। আর এই ডিমার্জ হওয়ায় বিভিন্ন ইনডেক্স ফান্ড, যাদের পোর্টফোলিওতে রিলায়েন্স ছিল, তারা প্রত্যেকেই সমসংখ্যক জিওর শেয়ারও পেয়েছেন। ফলে সেবির নিয়ম পালন করতে হলে ইনডেক্স ফান্ডগুলোকে দ্রুতই জিওর শেয়ার ছেড়ে সূচকের মধ্যে থাকা কোনও শেয়ারে বিনিয়োগ করতে হবে। আর তাই বিভিন্ন ইনডেক্স ফান্ড দ্রুত তাদের হাতে থাকা জিওর শেয়ার বিক্রি করছে ও জিও ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস রোজই তার লোয়ার সার্কিট হিট করছে। ধীরে ধীরে ইনডেক্স ফান্ডগুলো তাদের হাতে থাকা সমস্ত শেয়ার বিক্রি করে দিতে পারলে জিও-র বাজারে আবারও ধীরে ধীরে উঠবে সে কথা বলার অপেক্ষা রাখে না।