কলকাতা : ব্যক্তিগত প্রয়োজনের ক্ষেত্রেই সিংহভাগ ক্ষেত্রে লোন (Bank Loan) নিয়ে থাকেন সাধারণ মানুষ। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় চুক্তিপত্র ভালো ভাবে না পড়ে, না জেনে বুঝে অনেক সময়েই লোন গ্যারান্টারের (Loan Guarantor) কাগজে সই করে দেন অনেক মানুষ। অথচ একজন গ্যারেন্টারের দায়িত্ব বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। অজান্তেই যাতে তিনি সম্মতি দিয়েছেন সেই সমস্ত নিয়মকানুন তাঁর কাঁধে চেপে বসতে পারে। এমনকী ঋণ গ্রহীতা বকেয়া টাকা পরিশোধ করতে না পারলে গ্যারেন্টারকে নিজের সম্পতি পর্যন্ত বিক্রি করে তা পরিশোধ করতে হয়। ঋণ গ্রহীতার মৃত্যু হলেও সবসময় গ্যারেন্টার রেহাই পান না। এমন পরিস্থিতিতে ঋণগ্রহীতার লোন অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করে দেওয়া হয়। এবং লোনের বকেয়া টাকা মিটিয়ে দেওয়ার বিষয়ে গ্যারান্টার দায়বদ্ধতা থাকেন। এর অন্যথা হলে একইসঙ্গে ঋণ গ্রহীতা ও গ্যারান্টারের বিরুদ্ধে ব্যাঙ্ক আইনি ব্যবস্থা নিতে পারে।
সহজ কথায় প্রতিটি ব্যাঙ্ক (Bank) ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান ঋণ দেওয়ার সময় টাকা ফেরতের বিষয়টি নিশ্চিত করে নেয়। যে কারণে সীমিত আর্থিক ক্ষমতার লোকজনকে লোন দেওয়ার আগে গ্যারান্টার চায় তারা। কোনও কোনও সময় তো আর্থিক ভাবে স্বচ্ছল ব্যক্তিদের থেকেও লোন দেওয়ার ক্ষেত্রে গ্যারান্টার চাওয়া হয়। চলতি কথায় যাকে বলে জামানত। ঋণের টাকা ফেরত না পেলে গ্যারান্টারকেও ঋণখেলাপি ঘোষণার ক্ষমতা ব্যাঙ্কের আছে। এমনকী মামলা রুজু করে গ্যারান্টারের বিরুদ্ধে প্রয়োজনে আইনি পদক্ষেপ করতে পারে ব্যাঙ্ক।
এই প্রসঙ্গে প্রাক্তন ব্যাঙ্কার সুরেশ বনসল বলেন, ‘ঋণের টাকা পরিশোধ করার দায়বদ্ধতা ঋণ গ্রহীতার পাশাপাশি গ্যারেন্টারেরও। গ্যারান্টারের বিরুদ্ধে ব্যাঙ্ক কোনও ব্যবস্থা নিলে তাঁর বিশেষ কিছু বলার বা করার থাকে না। এমনকী আগে ঋণ গ্রহীতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বদলে তাঁকে নিয়ে কেন টানাটানি করা হচ্ছে তা সেই প্রশ্নও তিনি করতে পারবেন না। অধিকাংশ লোক মনে করেন গ্যারান্টার হওয়া মানে ঋণ গ্রহীতা যে একজন সৎ ব্যক্তি তা নিশ্চিত করা। তাই লোনে আবেদনে সই করার আগে এই বিশয়ে বিশদে জেনে নিন’। তাই প্রয়োজনে বন্ধু বা আত্মীয়র পাশে অবশ্যই দাঁড়ান, তবে গ্যারান্টার হওয়ার আগে ভালো করে পুরো বিষয়টি ভেবে দেখুন। কারণ না বঝে নেওয়ার সিদ্ধান্তের ফলে ভবিষ্যতে পস্তাতে হতে পারে।
আরও পড়ুন- কেন পার্সোনাল লোনের থেকে বেশি সুবিধা পাওয়া যায় গোল্ড লোনে? কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা