ফাইল চিত্র
নয়া দিল্লি: করোনার পরপর তিনটি ঢেউয়ের ধাক্কা সামলানোর পরই কড়া হাতে অর্থনীতির হাল ধরেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া। আজ, বুধবার ফের একবার রেপো রেটের হার বাড়াল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। এদিন সকালেই রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার গভর্নর শক্তিকান্ত দাশ ঘোষণা করেন যে, মনিটারি পলিসি কমিটির বৈঠকে রেপো রেটে পরিবর্তন আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়ানো হচ্ছে। নতুন রেপো রেট হতে চলেছে ৪.৯০ শতাংশ। আজ থেকেই এই নতুন রেপো রেট কার্যকর হবে। বিগত দুই মাসে এই নিয়ে দুইবার রেপো রেট বাড়ানো হল।
বুধবার সকালেই রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার তরফে জানানো হয়েছে, রেপো রেট ৫০ বেসিস বাড়ানো হচ্ছে। ৪.৪০ থেকে তা বাড়িয়ে ৪.৯০ শতাংশে পৌঁছেছে। গত মাসেই রিজার্ভ ব্যাঙ্কের তরফে রেপো রেট ৪০ বেসিস পয়েন্ট বাড়ানো হয়েছিল। এর আগে করোনা পরবর্তী সময়ে ১১ দফায় রেপো রেট অপরিবর্তিত রাখা হয়েছিল। তবে ধীরে ধীরে অর্থনীতির হাল ফেরাতেই রেপো রেটে পরিবর্তন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার গভর্নর শক্তিকান্ত দাশ।
- আরবিআইয়ের গভর্নর জানিয়েছেন, মনিটারি পলিসি কমিটির সব সদস্যদের সম্মতিতেই রেপো রেট বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। করোনাকালে দেশে অর্থনীতির যে বেহাল দশা হয়েছিল, সেই ধাক্কা কাটিয়ে উঠতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
- একইসঙ্গে স্ট্যান্ডিং ডিপোজিট ফেসিলিটি রেট বা এসডিএফ রেটও সামান্য পরিবর্তন করে ৪.৬৫ শতাংশে বাড়ানো হয়েছে। এমএসএফ ও ব্যাঙ্ক রেটও পরিবর্তন করে ৫.১৫ শতাংশে বাড়ানো হয়েছে বলে জানান গভর্নর শক্তিকান্ত দাশ।
- গত ৩১ মে ন্যাশনাল স্ট্যাটিসটিক্যাল অফিস জানিয়েছিল ২০২১-২২ সালে দেশের আনুমানিক জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৮.৭ শতাংশ হতে পারে। তবে আসল জিডিপির প্রবৃদ্ধি প্রাক-মহামারি পর্ব অর্থাৎ ২০১৯-২০ সালের ডিজিপিকেও ছাপিয়ে গিয়েছে।
- আরবিআইয়ের গভর্নর জানান, চলতি বছরে বর্ষা স্বাভাবিক হবে বলেই মনে করা হচ্ছে। বর্তমানে ব্যারেল প্রতি ক্রুড ওয়েলের দাম ১০৫ ডলারে পৌঁছনোয় ২০২২-২৩ সালে মুদ্রাস্ফীতি আনুমানিক হার ৬.৭ শতাংশ বলে মনে করা হচ্ছে।
- সমবায় ব্যাঙ্ক ও গ্রামীণ সমবায় ব্যাঙ্কের গৃহ ঋণের হার শেষবার যথাক্রমে ২০০৯ ও ২০১১ সালে সংশোধন করা হয়েছিল। এবারে বাড়়ির দাম মাথায় রেখে প্রায় ১০০ শতাংশেরও বেশি ঋণের হার সংশোধন করা হয়েছে।
- চলতি অর্থবর্ষে জিডিপির আসল প্রবৃদ্ধি ৭.২ শতাংশ হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। বৈশ্বিক নানা প্রতিবন্ধকতাকে মাথায় রেখেই আরবিআই-র গভর্নর জানান, রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ ও মহামারী সত্ত্বেও ভারতের অর্থনীতি যথেষ্ট স্থিতিশীল রয়েছে ও অর্থনীতিকে পুনরুদ্ধারের কাজের গতিও কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। তবেমূল্যবৃদ্ধি কিছুটা হলেও বৃদ্ধি পেয়েছে। যুদ্ধের কারণেই সরবরাহে ঘাটতি দেখা দেওয়ায় এই মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। চলতি বছরে মূল্যবৃদ্ধির হার ৬.৭ শতাংশ হতে পারে বলে অনুমান।
- গতবার রেপো রেট ও রিভার্স রেপো রেট বাড়ানোর পরই ঋণ ও মর্টগেজের হার বৃদ্ধি পেয়েছিল। এবারও রেপো রেটের পরিবর্তনের কারণে ঋণ, এএমআই সহ একাধিক আর্থিক ক্ষেত্রে বড়সড় পরিবর্তন আসতে পারে।