নয়া দিল্লি: হাজার কোটি টাকার সাম্রাজ্য় রিলায়েন্স (Reliance)। ধীরুভাই অম্বানী (Dhirubhai Ambani) নিজের হাতে যে সংস্থা তৈরি করেছিলেন, তার ডালপালা বিস্তারিত করে আকাশছোঁয়া সাম্রাজ্যে পরিণত করেছেন মুকেশ অম্বানী (Mukesh Ambani)। এবার পরবর্তী প্রজন্মের হাতে সেই দায়িত্বভার তুলে দেওয়া কথা চিন্তাভাবনা করছেন মুকেশ অম্বানী। রিলায়েন্স ফ্য়ামিলি ডে-তে এমনটাই জানালেন তিনি।
ধীরুভাই অম্বানীর জন্মবার্ষিকীই পালন করা হয় রিলায়েন্স ফ্যামিলি ডে (Reliance Family Day) হিসাবে। বংশ পরম্পরায় অম্বানীরা যেহেতু পরিবারকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে এসেছেন, তাই সংস্থার সমস্ত কর্মীদেরও পরিবারের সদস্য বলেই মনে করেন তারা। মঙ্গলবার এই অনুষ্ঠানেই সংস্থার ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রথমবার মুখ খুললেন মুকেশ অম্বানী। রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের বিভিন্ন শাখাকে সংযুক্ত করে ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাওয়ার পথে নতুন প্রজন্মকেই সামনে রাখতে চান এবং তিনি ও সংস্থার বাকি প্রবীণ শীর্ষকর্তারা পিছনের সারিতে বসে তাদের শক্তি জোগাতে চান বলেই জানান।
মুকেশ অম্বানী বলেন, “আমি নিশ্চিত ইশা, আকাশ ও অনন্ত দক্ষতার সঙ্গে দারুণভাবে সংস্থাকে পরিচালন করবে এবং সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। আমাদের উচিত ওদের পথ দেখানো, উৎসাহ জোগানো এবং সাফল্য উদযাপন করা।” সংস্থার বোর্ড অব মেম্বার্সের সদস্য না হলেও মুকেশ অম্বানীর তিন ছেলেমেয়েই সংস্থার ডিরেক্টর পদে রয়েছেন। আগামিদিনে তারাই যে গোটা রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজকে সামলাবেন, সে কথা উল্লেখ করে মুকেশ অম্বানি বলেন, “পরবর্তী প্রজন্ম হিসাবে ইশা, আকাশ ও অনন্ত যে রিলায়েন্স সংস্থাকে সাফল্যের নয়া উচ্চতায় পৌঁছে দেবে, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। আমি প্রতিদিন ওদের মধ্যে রিলায়েন্স সংস্থা নিয়ে নয়া উদ্যোগ, উদ্ধাবনী চিন্তাভাবনা ও নতুন কিছু করার চেষ্টা দেখতে পাই। জীবনকে আরও সুন্দর করে তুলতে এবং ভারতের উন্নতিতে সাহায্য করার যে প্রচেষ্টা বাবা (ধীরুভাই অম্বানী)-র মধ্যে দেখতাম, সেই উদ্যোগ ও প্রচেষ্টাই আমি ওদের মধ্যে দেখতে পাই।”
রিলায়েন্স ফ্যামিলি ডে-তে মুকেশ অম্বানী বলেন, “আগামিদিনে রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী ও সম্মানীয় ভারতীয় মাল্টিন্যাশনাল সংস্থায় পরিণত হবে। ক্লিন ও গ্রিন এনার্জি উৎপাদনের ক্ষেত্রে আমরা যেমন এগিয়ে যাব, তোমনই রিটেল ও টেলিকম ক্ষেত্রও সাফ্যের নয়া শিখর স্পর্শ করবে।”
তিনি আরও বলেন, “বড় স্বপ্ন ও অবিশ্বাস্য লক্ষ্য অর্জন সম্ভব তখনই, যখন সঠিক মানুষ ও সঠিক নেতৃত্ব থাকে। রিলায়েন্স বর্তমানে নেতৃত্বের হাতবদলের পর্যায়ে রয়েছে। সংস্থার প্রবীণরা, যারা আমার প্রজন্মের,তাদের হাত থেকে পরবর্তী প্কজন্মের হাতে এই ক্ষমতা তুলে দেওয়া হচ্ছে।”
রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ বর্তমানে তিনটি ক্ষেত্রে বিস্তারিত, গুজরাটের জামনগরে তৈল শোধনাগার, পেট্রোকেমিক্যাল প্ল্যান্ট ও নতুন এনার্জি ফ্যাক্টরি, অনলাইন ও অফলাইনে রিটেল ব্যবসা, জিও মার্ট এবং জিও-র নামে টেলিকম ও ডিজিটাল বাণিজ্য। ক্ষমতা হস্তান্তর হলেও রিলায়েন্স সংস্থার সংস্কৃতি যে একই থাকবে, সে কথাও সাফ জানিয়ে দেন মুকেশ অম্বানী।