কলকাতা: বলা যেতে পারে কলকাতার সঙ্গে বিমাতৃসূলভ আচরণ করতে চলেছে স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া বা এসবিআই। বর্তমানে, এসবিআই-এর ‘গ্লোবাল ব্যাক অফিস’-এর কাজকর্ম চলত এসবিআই-এর কলকাতার অফিস থেকে। এবার এই গুরুত্বপূর্ণ অফিস এবং অন্যান্য কয়েকটি বৈদেশিক মুদ্রা সম্পর্কিত বিভাগকে কলকাতা থেকে সরিয়ে দেশের আর্থিক রাজধানী মুম্বাইয়ে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছে এসবিআই। ২০১৫ সালে এই ব্যাক অফিস স্থাপন করা হয়েছিল কলকাতায়। সেই সময় ব্যাঙ্কের চেয়ারপার্সন ছিলেন অরুন্ধতি ভট্টাচার্য । সিডনি, বাহরিন, হংকং, লন্ডন এবং নিউ ইয়র্কের গ্রাহকদের জন্য ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকে এই গ্লোবাল ব্যাক অফিস। এবার এই অফিস কলকাতা থেকে সরতে চলেছে মুম্বইয়ে। যদিও ইতিমধ্যেই, ব্যাঙ্কের এই পরিকল্পনার বিরোধিতা করেছে ‘ব্যাঙ্ক বাঁচাও দেশ বাঁচাও মঞ্চ’। কিন্তু, কেন কলকাতা থেকে এই অফিস সরাচ্ছে ব্যাঙ্ক?
এসবিআই-এর যুক্তি, তাদের যাবতীয় কার্যক্রমকে কেন্দ্রীভূত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। সেই লক্ষ্য়েই এই পদক্ষেপ করা হবে। ২০০৭ সালের মার্চেও একবার এই বিভাগগুলিকে কলকাতা থেকে মুম্বইয়ে স্থানান্তর করার চেষ্টা করা হয়েছিল। সেই সময় কলকাতার এসবিআই কর্মীরা তীব্র প্রতিরোধের সম্মুখীন হয়েছিল৷ তার আগে, ২০০৫ সালে ব্যাঙ্কের বিদেশি মুদ্রার লেনদেনের কার্যক্রম, ধাপে ধাপে কলকাতা থেকে মুম্বইয়ে স্থানান্তর করা হয়েছিল। সেই সিদ্ধান্তে কলকাতা-ভিত্তিক কর্মীদের বিরোধিতাও হয়েছিল। এবারও, এসবিআই-এর পক্ষ থেকে সরকারিভাবে স্থানান্তরের কোনও ঘোষণা করার আগেই ব্যাঙ্ক বাঁচাও মঞ্চ প্রতিবাদ করা শুরু করেছে।
গত সোমবার, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এই বিষয়ে একটি চিঠি দিয়েছে ব্যাঙ্ক বাঁচাও দেশ বাঁচাও মঞ্চ। চিঠিতে তারা জানিয়েছে, জীবন সুধা ভবনে অবস্থিত গ্লোবাল মার্কেট ইউনিটের বৈদেশিক মুদ্রা সংক্রান্ত একটা বড় কার্যক্রম মুম্বইয়ে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছে এসবিআই। এটা এসবিআই-এর কলকাতা শাখার এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ বলে দাবি করা হয়েছে। এই কার্যক্রম যাতে কলকাতা থেকেই পরিচালিত হয়, তা নশ্চিত করতে মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়েছে তারা। ব্যাঙ্ক বাঁচাও মঞ্চের আহ্বায়ক সৌম্য দত্ত, এসবিআই-এর এই পদক্ষেপকে ‘পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যকে বঞ্চিত করার জন্য কেন্দ্রের ঘৃণ্য পরিকল্পনা’ বলেছেন।