মুম্বই: ভারতের বৃহত্তম শিল্প গোষ্ঠী টাটা গোষ্ঠী। সবুজ শক্তি বা নবায়নযোগ্য শক্তি খাতে তারা এক বড় পদক্ষেপ করতে চলেছে। টাটা গোষ্ঠীর অন্যতম মূল সংস্থা হল টাটা পাওয়ার (Tata Power)। চলতি আর্থিক বছরে, টাটা পাওয়ারের মূলধন ব্যয়ে (capex) লগ্নি, গত বছরের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ হতে চলেছে। মঙ্গলবার (১৬ জুলাই), সংস্থার শেয়ারহোল্ডারদের এক বৈঠক ছিল। সেখানে টাটা পাওয়ারের চেয়ারম্যান, এন চন্দ্রশেখরন জানিয়েছেন এবার মূলধন ব্যয়ে ২০,০০০ কোটি টাকা লগ্নি করবেন তাঁরা। ঋণ নিয়ে এবং কোম্পানির অভ্যন্তরীণ ক্যাশ ফ্লো-এর মাধ্যমে এর জন্য তহবিল সংগ্রহ করা হবে। এই লগ্নির সিংহভাগই যাবে সবুজ শক্তি খাতে। অর্থাৎ, সবুজ শক্তির বাজারে একটা মজবুত ভিত্তি তৈরি করতে চাইছে টাটা। আর এই শক্তি খাতে এখন কাদের আধিপত্য রয়েছে? রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ এবং আদানি গোষ্ঠী। অর্থাৎ, সরাসরি অম্বানি, আদানির দিকে চ্যালেঞ্জ ছুড়তে চলেছেন রতন টাটা।
এই খাতে ইতিমধ্যেই বড় লগ্নির প্রতিশ্রুতি দিয়েছে রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ। ২০২২-এই মুকেশ অম্বানি জানিয়েছিলেন, পরবর্তী ১৫ বছরে ক্লিন এনার্জি প্রকল্পে তিনি ৭৫০০ কোটি ডলার ( ৬ লক্ষ কোটি টাকার বেশি) বিনিয়োগ করবেন। সবুজ শক্তির খাতের জন্য রিলায়েন্স ব্যাপক পরিকল্পনা করেছে। সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন থেকে সবুজ হাইড্রোজেন উৎপাদন ও বিতরণ, বিস্তৃত ভাবনা রয়েছেঅম্বানির। গুজরাটের জামনগরে ধিরুভাই অম্বানি গ্রিন এনার্জি কমপ্লেক্সে বর্তমানে চারটি কারখানা তৈরি করা হচ্ছে।
অন্যদিকে, গৌতম আদানিও ২০৩০ সালের মধ্যে এই খাতে ২.৩ লক্ষ কোটি টাকা বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। সাম্প্রতিক একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, সবুজ হাইড্রোজেন ব্যবসায় আদানি গোষ্ঠী নয় বিলিয়ন ডলার (৭৫ হাজার কোটি টাকার বেশি) বিনিয়োগ করবে তারা। প্রায় ৩৩ হাজার কোটি টাকা খরচ করা হবে যন্ত্রপাতি এবং কারখানা তৈরির জন্য। অবশিষ্ট অর্থ খরচ করে একটি ৫ গিগাওয়াট ইলেক্ট্রোলাইজার উত্পাদন ক্ষমতা সম্পন্ন কারখানা তৈরি করা হবে।
এর মধ্যে সবুজ শক্তি খাতে বড় বিনিয়োগ করতে চলেছে টাটা গোষ্ঠীও। এই পদক্ষেপ সংস্থার ইতিহাসে একটি নতুন অধ্যায়ের ইঙ্গিত মনে করা হচ্ছে। স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, নবায়নযোগ্য শক্তি খাতকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে টাটা। এই খাতে ভারতের অন্যতম শক্তিশালী প্রতিযোগী হতে তৈরি তারা। এতদিন মনে করা হত, এই খাতে লড়াইটা হল আদানি-অম্বানির ডুয়েল। এবার এই লড়াইয়ে তৃতীয় পক্ষ হিসেবে হাজির টাটাও। এতে ভারতেরই লাভ বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, এই প্রতিযোগিতা প্রযুক্তিগত অগ্রগতি, খরচ হ্রাস, এবং সবুজ শক্তি প্রকল্পে উদ্ভাবন এবং দক্ষতা বৃদ্ধির মতো ইতিবাচক ফল দিতে পারে।