নয়া দিল্লি: জাল নোটের জেরে ২০০০ টাকার নোট ছাপানো বন্ধই করে দিয়েছে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। অতি সম্প্রতি উদ্বেগ তৈরি হয়েছে জাল ৫০০ টাকার নোট নিয়েও। আরবিআই-এর তথ্য অনুযায়ী, গত অর্থ বর্ষের তুলনায় ২০২১-২২ অর্থবর্ষে জাল ৫০০ টাকার নোটের সংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি বেড়ে গিয়েছে। আরবিআই-এর বার্ষিক রিপোর্ট অনুসারে, চলতি অর্থবর্ষে মোট ৭৯,৬৬৯ টি জাল ৫০০ টাকার নোট সনাক্ত করা হয়েছে, যা গত অর্থবর্ষের তুলনায় ১০২ শতাংশ বেশি। এর পাশাপাশি, মোট ১৩,৬০৪ টি জাল ২০০০ টাকার নোট সনাক্ত করা হয়েছে। এই ক্ষেত্রেও জাল নোটের সংখ্যা গত বছরের থেকে ৫৪.৬ শতাংশ বেড়েছে।
বোঝাই যাচ্ছে, ভারতের বাজারে এখন বিপুল পরিমাণে জাল ৫০০ টাকার নোট ছড়িয়ে পড়েছে। কাজেই যে কোনও দিন এটিএম থেকেও আপনার পকেটে ঢুকে যেতে পারে জাল নোট। মাথায় রাখতে হবে, নোট জাল করা কিংবা জাল নোট ছড়িয়ে দেওয়ার কোনও প্রচেষ্টা ভরতীয় দণ্ডবিধির অধীনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ। ধরা পড়লে, সাত বছর থেকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড কিংবা উভয় সাজাই একসঙ্গে দেওয়া হতে পারে। তাহলে এটিএম থেকে টাকা তোলার সময় যদি জাল ৫০০ টাকার নোট পান, কী করবেন? কিভাবে ফেরত দিয়ে আসল নোট পাবেন? আসুন জেনে নেওয়া যাক –
– এটিএম থেকে পাওয়া কোনও নোট জাল বুঝতে পারলে, সঙ্গে সঙ্গে এটিএম থেকে বেরিয়ে আসবেন না। জাল নোটগুলিকে এটিএম-এর সিসিটিভি ক্যামেরার সামনে কিছুক্ষণ ধরে রাখুন। সিসিটিভি ক্যামেরার খুব কাছে গিয়ে জাল নোটগুলির দুই (সামনে এবং পিছনে) দিকই দেখাতে পারেন।
– এটিএম-এ নিরাপত্তারক্ষী থাকলে তাঁকেও জাল নোটগুলি সম্পর্কে অবহিত করুন।
– যে লেনদেনের ওই জাল নোটগুলি বেরিয়েছে, অবশ্যই এটিএম থেকে সেই লেনদেনের রসিদ সংগ্রহ করুন।
– এরপর এটিএমটি যে ব্যাঙ্কের সেখানে গিয়ে জাল নোটগুলি জমা দিন। সেই সঙ্গে এটিএম থেকে সংগ্রহ করা লেনদেনের রসিদটি দেখান।
– ব্যাঙ্ক তাদের নিয়ম অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ করবে। কয়েকদিনের মধ্য়েই উপভোক্তাকে জাল নোটের পরিবর্তে আসল নোট দেবে ব্যাঙ্ক। এই বিষয়ে আরবিআই-এর নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, এটিএম থেকে জাল নোট বের হলে ব্যাঙ্কগুলিকে যত দ্রুত সম্ভব গ্রাহককে আসল নোট দিতে হবে। যদি তা না করা হয়, তাহলে আরবিআই সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে।
আরবিআই-এর বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী অবশ্য শুধু ৫০০ বা ২০০০ টাকার নোট নয়, ২০০ টাকার এমনকি ১০-২০ টাকারও প্রচুর জাল নোট রয়েছে ভারতীয় বাজারে। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০০ টাকার জাল নোটের সংখ্যা ২০২০-২১ অর্থবর্ষের তুলনায় ২০২১-২২ অর্থবর্ষে ১১.৭ শতাংশ বেড়েছে। একই সময়ে ভারতীয় বাজারে ১০ টাকা ও ২০ টাকার জাল নোটের সংখ্যা বেড়েছে যথাক্রমে ১৬.৪ শতাংশ এবং ১৬.৫ শতাংশ।