নয়া দিল্লি: বিগত কয়েক বছর ধরেই বদলে গিয়েছে কাজের ধরন, পদ্ধতি বদল হয়েছে সংস্থার সংগঠনেও। দেশে তৈরি হয়েছে একাধিক স্টার্টআপ সংস্থা। তবে ইউনিকর্ন সংস্থার বাড়বাড়ন্তের মাঝেই হঠাৎ বেশ কিছু সমস্যাও দেখা দিয়েছে। একের পর এক কর্মী ছাঁটাই করা শুরু হয়েছে। বাইজু’স সংস্থার অধীনে হোয়াইটহ্যাট জুনিয়র সংস্থা থেকে কমপক্ষে ৩০০ জন কর্মীকে ছাঁটাই করা হয়েছে। এর আগে গত মে মাসেই ৮০০-রও বেশি কর্মী ইস্তফা দিয়েছিলেন। সূত্রের খবর, শুধুমাত্র হোয়াইটহ্যাট জুনিয়র সংস্থাই নয়, একাধিক এডুটেক সংস্থাতেই নিয়োগ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। আর্থিক ব্যয় সামাল দিতে ছাঁটাই করা হচ্ছে বিপুল সংখ্যক কর্মীদেরও।
বিগত কয়েক মাস ধরেই এডু-টেক ক্ষেত্র, বিশেষত অনলাইনে যে অ্যাপগুলিতে লেখাপড়া বা কারিগরি শিক্ষা বিষয় শেখানো হয়, সেই সংস্থাগুলি চরম ক্ষতির মুখে পড়েছে। বড় কোনও বিনিয়োগ না পাওয়ায় এবং সাবস্ক্রিপশনও তুলনামূলকভাবে কম হওয়ায়, সংস্থাগুলি আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে। গত বছরে যখন করোনার ধাক্কা সামলিয়ে চাকরিতে নিয়োগ নতুন করে শুরু হয়েছিল, সেই সময়ে হোয়াইট হ্যাট জুনিয়রে বিপুল সংখ্যক কর্মী নিয়োগ করা হয়েছিল। আরও আকর্ষণীয় বিষয় ছিল কর্মীদের বেতন। তথ্য প্রযুক্তি সংস্থাগুলির সঙ্গে পাল্লা দিয়েই হোয়াইট হ্যাট জুনিয়রের কর্মীদের বেতন ধার্য করা হয়েছিল।
সূত্রের খবর, মূলত সেলস ও মার্কেটিং বিভাগ থেকেই কর্মী ছাঁটাই করা হয়েছে। আপাতত চাকরি সুরক্ষিত থাকছে ইঞ্জিনিয়ারিং ও প্রোডাক্ট টিমের কর্মীদের। অপর একটি সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, শুধুমাত্র ভারতই নয়, বিশ্বের অন্যান্য প্রান্ত যেখানে হোয়াইটহ্যাট জুনিয়র কাজ করে, তারাও ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রচুর সংখ্যক কর্মী ছাঁটাই করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, হোয়াইটহ্যাট জুনিয়র, যা বাচ্চাদের অনলাইনে কোডিং শেখার একটি অ্যাপ, তা ২০২০ সালেই অধিগ্রহণ করে আরেকটি শিক্ষামূলক সংস্থা বাইজুস। ৩০ কোটি ডলারের বিনিময়ে হোয়াইটহ্যাট জুনিয়রকে কিনে নেয় ওই শিক্ষামূলক অ্য়াপ। প্রথমে কাজ ভাল চললেও, এপ্রিল মাসে
মুম্বই, বেঙ্গালুরু ও গুরুগ্রামে কর্মরত হোয়াইটহ্যাট জুনিয়র কর্মীদের অফিসে ফিরতে বলা হয়। সেই নির্দেশ পাওয়ার পরই অফিসে ফেরার বদলে গণ ইস্তফা দিতে শুরু করেন কর্মীরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সংস্থার এক কর্মীর দাবি, বাইজু সংস্থার হোয়াইটহ্যাট জুনিয়রকে কিনে নেওয়া ও হোয়াইটহ্যাট জুনিয়রের প্রতিষ্ঠাতা করণ বাজাজ ছেড়ে যাওয়ার পর থেকেই সংস্থার অন্দরে একাধিক পরিবর্তন এসেছে। যতদিন অবধি করণ বাজাজের হাতে সংস্থার দেখভালের দায়িত্ব ছিল, ততদিন কোনও সমস্যা ছিল না। কিন্তু ২০২১ সালের অগস্ট মাসে করণ বাজাজ ইস্তফা দেওয়ার পরই যাবতীয় সমস্যার সূত্রপাত হয়েছে।