চাকরি জীবনে পা রাখার পরই অনেকে বাড়ি-গাড়ি কেনার সিদ্ধান্ত নেন। সেই উদ্দেশ্যে ছোটো ছোটো পদক্ষেপও করা হয়। ছোটো ছোটো পক্ষেপের মধ্যে একটি বড় পদক্ষেপ হল গৃহঋণ বা গাড়িঋণ। পদক্ষেপ বড় হলেও এখন ঋণ পাওয়া খুব সহজ হয়ে গিয়েছে। কোনও পেপার ওয়ার্ক ও হয়রানি ছাড়াই মিলতে পারে লোন। তবে ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে একটি জিনিস খুব গুরুত্বপূর্ণ। সময়মতো ঋণ পরিশোধ করা। অন্যথায় ঋণগ্রহীতার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করতে পারে ঋণদাতা ব্যাঙ্ক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলি। তাদের সেই অধিকারও রয়েছে। তবে ঋণ পরিশোধের আগে যদি ঋণগ্রহীতার মৃত্যু হয় তাহলে ঋণ পরিশোধের কী হয়?
ঋণ পরিশোধের আগে ঋণগ্রহীতা মারা গেলে সেই ঋণ নেওয়ার সময় গ্য়ারান্টার বা ঋণগ্রহীতার আইনি উত্তরাধিকারীর কাছ থেকে সেই টাকা সংগ্রহ করতে পারে ব্যাঙ্ক। তবে বিভিন্ন ধরনের ঋণের ক্ষেত্রে ছবিটা পৃথক পৃথক হয়ে থাকে। যেমন ব্যক্তিগত ঋণের ক্ষেত্রে ব্যাঙ্ক বা ঋণদাতা কোনও আর্থিক প্রতিষ্ঠান মৃত ঋণগ্রহীতার পরিবারের কোনও জীবিত সদস্য বা আইনি উত্তরাধিকারীকে সেই ঋণ পরিশোধ করতে বলতে পারে না। ব্য়ক্তিগত ঋণকে এই কারণে অনিরাপদ ঋণ বলা হয়ে থাকে। ব্যক্তিগত ঋণের ক্ষেত্রে কোনও বন্ধকও রাখতে হয় না। তাই ঋণদাতারা ঋণগ্রহীতার কোনও সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করতে পারে না বা বিক্রিও করতে পারে না।
এক্ষেত্রে ঋণের বাকি অংশ বকেয়া খাতে রাখা হয় বা ব্য়াঙ্কে তা এনপিএ তে যুক্ত করে দেয়। তবে, এই ঋণে যদিও কোনও সহ আবেদনকারী থাকেন তবে প্রধান ঋণগ্রহীতার মৃত্যু হলে সেই ব্যাক্তির কাছে ঋণের দায় হস্তান্তর করতে পারে ব্যাঙ্ক। ক্রেডিট কার্ডে ঋণ নেওয়া হলে বা অন্যান্য অনিরাপদ ঋণের ক্ষেত্রেও এই নিয়ম প্রযোজ্য়। তবে বর্তমানে অনিরাপদ ঋণগুলির ক্ষেত্রে একটি ঋণগ্রহীতার একটি বীমা জুড়ে দেওয়া হয়। ঋণ পরিশোধ হওয়া পর্যন্ত এটি বৈধ। প্রধান ঋণগ্রহীতার মৃত্যু হলে সেই বীমার মাধ্যমে ঋণের বকেয়া পরিমাণ পুনরুদ্ধার করা হয়। তবে এক্ষেত্রে সেই বীমার প্রিমিয়াম ঋণগ্রহীতাকেই দিতে হয়।
গৃহ ঋণের ক্ষেত্রে ঋণ পরিশোধের আগে যদি প্রধান ঋণগ্রহীতার মৃত্যু হয় তাহলে ব্যাঙ্ক বা অন্য ঋণ প্রদানকারী সংস্থা সেই ঋণের সহ আবেদনকারীর খোঁজ করে। যদি সহ আবেদনকারী সেই বকেয়া অর্থ পরিশোধ করতে না পারেন তাহলে ব্যাঙ্ক ঋণগ্রহীতার পরিবার,আইনি উত্তরাধিকারী বা গ্যারেন্টারের সঙ্গে যোগাযোগ করে। তাঁদের মধ্যে কেউ ঋণ পরিশোধ করতে প্রস্তত থাকলে তাঁদের সম্পত্তি ফিরিয়ে দেয়। তবে কেউ ঋণ পরিশোধ করতে না পারলে সেই সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে তা বেচে ঋণের টাকা ফেরত নেয় ব্যাঙ্ক। গাড়ি ঋণের ক্ষেত্রেও একই পদ্ধতি মেনে চলে ব্যাঙ্ক।