নয়া দিল্লি: করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার পর এক নিমেষেই আমূল বদলে গিয়েছিল সাধারণ মানুষের জীবন। প্রায় দুই বছর ঘরবন্দি হয়েই কাটাতে হয়েছে সকলকে। তাই সংক্রমণ কমতে এবং বিধিনিষেধ শিথিল হতেই ঘুরতে বেরিয়ে পড়েছেন সকলে। নতুন জায়গা ঘুরে দেখা হোক বা চেনা জায়গাতেই ফিরে যাওয়া- একঘেয়েমি কাটাতে যাঁর যেদিকে নজর গিয়েছে, চলে গিয়েছেন। কিন্তু এই মুক্তি স্বাদে জল ঢালছে বিমানের টিকিট। করোনা পরবর্তী সময়ে হু হু করে বেড়েই চলেছে বিমানের টিকিটের দাম।
করোনা পরবর্তী সময়ে সকলের মধ্যেই ঘুরতে যাওয়ার যে প্রবণতা তৈরি হয়েছে, তার নাম দেওয়া হয়েছিল রিভেঞ্জ ট্রাভেল। কিন্তু এই রিভেঞ্জ ট্রাভেল করতে গিয়েই অনেকের বাজেট ওলট-পালট হয়ে গিয়েছে। তার প্রধান কারণই হল মাত্রাতিরিক্ত বিমানের টিকিটের দাম। আর এই টিকিটের দাম বৃদ্ধি শুধুমাত্র ভারতে নয়, গোটা বিশ্বেই দেখা গিয়েছে। হংকং থেকে লন্ডন যাওয়ার টিকিটের দাম প্রায় ৫ গুণ বেড়ে গিয়েছে করোনা পরবর্তী সময়ে। নিউইয়র্ক থেকে লন্ডন যাওয়ার ইকোনমি ক্লাসের টিকিটও বর্তমানে প্রায় ২ হাজার ডলার পার করেছে। পর্যটন সংস্থাগুলির তরফেও জানানো হয়েছে, বিমানের টিকিটের দাম ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। সিঙ্গাপুর থেকে বিমানে যাতায়াতের জন্য প্রায় অতিরিক্ত ২৭ শতাংশ টাকা খরচ করতে হচ্ছে। অস্ট্রেলিয়ার বিমানের ভাড়াও কমপক্ষে ২০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
জ্বালানির দাম বৃদ্ধি-
করোনা পরবর্তী সময়ে হু হু করে বিমানের টিকিটের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। এর পিছনে একাধিক কারণ রয়েছে। তবে প্রধান কারণটিই হল বিমানের জ্বালানির দাম বৃদ্ধি। রাশিয়া ইউক্রনের উপরে হামলা চালানোর পর থেকেই ক্রমাগত ক্রুড ওয়েলের দাম বেড়ে চলেছে। বিগত ১৮ মাস ধরেই ক্রমাগত বেড়ে চলেছে জ্বালানির দাম। একটি বিমানের টিকিটের দামের ৩৮ শতাংশই জ্বালানির দাম অনুযায়ী ধার্য করা হয়। বেশ কিছু এয়ারলাইনের ক্ষেত্রে টিকিটের দামের ৫০ শতাংশ জ্বালানিই উপরই নির্ভর করে।
কর্মীর অভাব-
করোনাকালে শতাধিক পাইলট, বিমানসেবিকা, গ্রাউন্ড স্টাফ সহ অন্যান্য কর্মীরা চাকরি খুইয়েছেন। সংক্রমণ কমার পর উড়ান পরিষেবা চালু হলেও, নতুন করে কর্মী নিয়োগ সেভাবে শুরু হয়নি। এরফলে স্বাভাবিকভাবেই কর্মী সঙ্কট দেখা দিয়েছে। অনেক সংস্থা কর্মসংস্থানের জন্য বিজ্ঞাপন দিলেও, চাকরির অনিশ্চয়তার জন্য অনেকেই আর উড়ান পরিষেবার কাজে ফিরতে চাইছেন না।
ক্ষতিপূরণ-
করোনা সংক্রমণ শুরু হওয়ার পরই হঠাৎ লকডাউন ঘোষণা করায় হাজার হাজার উড়ান বাতিল করতে হয়েছিল। এরপরে প্রায় দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে উড়ান পরিষেবা বন্ধ থাকে। পরে বিমান পরিষেবা চালু হলেও, একাধিক দেশেই উড়ানের উপরে আংশিক বা সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা জারি থাকায় বিপুল ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে।