নয়া দিল্লি: দেশে মূল্যস্ফীতি বেড়েই চলেছে। নভেম্বরে পাইকারি মূল্যস্ফীতির দর (Wholesale Price Index – WPI) ১২.৫৪ শতাংশ বেড়ে ১৪.২ শতাংশ হয়ে গিয়েছে। সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের রিপোর্ট অনুযায়ী, পাইকারি মূল্যস্ফীতির এই পরিসংখ্যান ১২ বছরের রেকর্ড স্তরে পৌঁছে গিয়েছে। ইন্ধন আর বিদ্যুতের দাম বাড়ার কারণে পাইকারী মূল্যস্ফীতিতে বৃদ্ধি দেখা গিয়েছে। কোর মূল্যস্ফীতির দর ১১.৯০ শতাংশ থেকে বেড়ে ১২.২০ শতাংশ বেড়েছে আর সেপ্টেম্বরের মূল্যস্ফীতির দরের পরিসংখ্যানকে সংশোধিত করা হয়েছে। এখন এটি ১০.৬৬ শতাংশ থেকে বেড়ে হয়েছে ১১.৮০ শতাংশ।
মূল্যস্ফীতির পরিসংখ্যানের উপর এক নজর
মঙ্গলবার জারি হওয়া পাইকারি মূল্যস্ফীতির দরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, খাওয়া দাওয়ার জিনিসপত্রের পাইকারি মূল্যস্ফীতি ৩.০৬ শতাংশ থেকে বেড়ে ৬.৭০ শতাংশ হয়ে গিয়েছে। এছাড়াও জ্বালানি আর বিদ্যুতের পাইকারি মূল্যস্ফীতি ৩৭.১৮ শতাংশ বেড়ে ৩৯.৮১ শতাংশ হয়ে গিয়েছে। ডিম আর মাংসের পাইকারি মূল্যস্ফীতি ১.৯৮ শতাংশ থেকে বেড়ে ৯.৬৬ শতাংশ হয়ে গিয়েছে।
আলুর পাইকারি মূল্যস্ফীতি ৫১.৩২ শতাংশ থেকে বেড়ে ৪৯.৫৪ শতাংশ আর সবজির পাইকারি মূল্যস্ফীতি -১৮.৪৯ শতাংশ থেকে বেড়ে ৩.৯১ শতাংশের স্তরে পৌঁছে গিয়েছে। এছাড়াও দুধের মূল্যস্ফীতির দরও অনেক বেশি বেড়েছে। এর দর ১.৬৮ শতাংশ থেকে বেড়ে ১.৮১ শতাংশ হয়েছে।
এগুলিতে পাওয়া গিয়েছে স্বস্তি
ম্যানুফ্যাকচার্ড প্রোডাক্টগুলির দাম কমেছে। এর পাইকারি মূল্যস্ফীতি দর ১২.০৪ শতাংশ থেকে কমে ১১.৯২ শতাংশে নেমে গিয়েছে। খাওয়ার তেলের মূল্যস্ফীতি দরও কমেছে। এটি ৩২.৫৭ শতাংশ থেকে কমে ২৩.১৬ শতাংশ হয়েছে। পেঁয়াজের পাইকারি মূল্যস্ফীতির দর -৩০.১৪ শতাংশ থেকে কমে -২৫.০১ শতাংশ হয়েছে।
পাইকারি অর্থাৎ হোলসেল মূল্যস্ফীতি হার কী
যদি সহজ শব্দে বলা হয়, তাহলে হোলসেল প্রাইসেস ইনডেক্স (Wholesale Price Index – WPI) বা পাইকারি মূল্য সূচাঙ্কর মানে হল সেই দাম, যা পাইকারি বাজারে একজন ব্যবসায়ী অন্য ব্যবসায়ীর কাছ থেকে উসুল করে থাকে। এই দাম পাইকারি হারে করা চুক্তির সঙ্গে যুক্ত। এর তুলনায় কনজিউমার প্রাইস ইনডেক্স (CPI) বা গ্রাহক মূল্য সূচাঙ্ক সাধারণ গ্রাহকদের দ্বারা দেওয়া মূল্যের উপর নির্ভরশীল। CPI এর উপর নির্ভরশীল মূল্যস্ফীতির দরকে রিটেল ইনফ্লেশন বা খুচরো মূল্যস্ফীতি দরও বলা হয়।
কবে পাওয়া যাবে স্বস্তি
ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের (RBI) গভর্নর শক্তিকান্ত দাস নিজের সাম্প্রতিক বয়ানে বলেছিলেন, মূল্যস্ফীতি দরে বৃদ্ধি বজায় থাকতে পারে। কারণ বেস ইয়ার এফেক্টের কারণে পরিসংখ্যানে বৃদ্ধি থাকবে। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের অনুযায়ী, হেডলাইন মূল্যস্ফীতি দর চলতি অর্থ বর্ষের চতুর্থ ত্রৈমাসিকে শীর্ষে থাকবে। তারপর ধীরে ধীরে তা কমবে।
এসকর্ট সিকিউরিটির রিসার্চ হেড আসিফ ইকবাল টিভি৯কে জানিয়েছেন, রিটেল দর আরবিআইয়ের ঠিক করা অনুমানের ভেতরেই রয়েছে। কিন্তু এটা লাগাতার দ্বিতীয় মাস, যখন এটি বৃদ্ধি পাচ্ছে। জ্বালানি আর ট্রান্সপোর্টের মূলধনের কারণে মূল্যস্ফীতি দর বাড়ার দিকে এগোচ্ছে।
ট্রান্সপোর্টের মূলধন বাড়ার প্রভাব অন্য জিনিসপত্রের মূলধনের উপরও দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। তবে বৃদ্ধি পাওয়া মূলধনের বোঝা কতখানি গ্রাহকদের উপর বর্তাবে, তা প্রোডাক্টের চাহিদার উপর নির্ভর করবে। বর্তমানে মূল্যস্ফীতির দরের এই স্তর চিন্তার বিষয় নয়। চাহিদা বাড়লে মূল্যস্ফীতি বাড়তে পারে, সেটাই সবচেয়ে বড় চিন্তার বিষয়।
আরও পড়ুন: Sachin Tendulkar Invests:পুরনো গাড়ি বিক্রির কোম্পানিতে বিনিয়োগ সচিনের, হলেন ব্র্যান্ডের মুখও