আগেই দেখেছি আমরা দেখেছি সুজলন এনার্জির শেয়ারের দাম কীভাবে আকাশ ছোঁয়ার পর একেবারে প্রায় মাটিতে এসে ঠেকেছিল। আবারও সেই কোম্পানি ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। কিন্তু সুজলন একমাত্র কোম্পানি নয় যাদের শেয়ারের দাম একেবারে মাটি ছোঁয়ার পর আবার ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। ইয়েস ব্যাঙ্কের অবস্থাও অনেকটা একই রকম।
২০০৫ সালের জুন মাসে ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জ ও বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জে আইপিও নিসাবে নথিভুক্ত করা হয় ইয়েস ব্যাঙ্ককে। আইপিও হিসাবে নথিভুক্তিকরণের সময় এই শেয়ারের ফেসভ্যালু ছিল ১০টাকা ও তারা ৩৮ টাকা থেকে ৪৫ টাকার মধ্যে বিড অফার করেছিল।
স্টক মার্কেটে নথিভুক্ত হওয়ার পর থেকে ২০১৮ সালের ১০ অগস্ট পর্যন্ত প্রায় ১৩ বছরে ইয়েস ব্যাঙ্কের শেয়ারের দাম বেড়েছিল প্রায় ৩ হাজার শতাংশ। ১২ টাকা ৩৭ পয়সা থেকে শুরু করে ১৩ বছরে তারা পৌঁছে গিয়েছিল ৩৮২ টাকা ৮৫ পয়সায়। আর এরপরই, হঠাৎই পতন শুরু হয় ইয়েস ব্যাঙ্কের শেয়ারের দামে। ১০ অগস্ট থেকে সেই বছরেরই ৭ ডিসেম্বর, মাত্র ৪ মাসের মধ্যে শেয়ারের দাম ২১৬ টাকা ৬৫ পয়সা পড়ে গিয়ে হয় ১৬৬ টাকা ২০ পয়সা। শতাংশের হিসাবে যা ৫৬.৫৯ শতাংশ। এরপর আবারও ঘুরে দাঁড়াতে চেষ্টা করে ইয়েস ব্যাঙ্ক।
৭ ডিসেম্বর ২০১৮ থেকে ২৯ মার্চ ২০১৯, প্রায় ৩ মাসের মধ্যে ইয়েস ব্যাঙ্কের শেয়ারের দাম ১০৮ টাকা টাকা ৯০ পয়সা বেড়ে হয় ২৭৫ টাকা ১০ পয়সা। যা প্রায় ৬৫.৫ শতাংশ বৃদ্ধি। এরপর ইয়েস ব্যাঙ্কের শেয়ারের দাম হুহু করে পড়তে থাকে। ইয়েস ব্যাঙ্কের এই পতনের পিছনে একটা বড় কারণ, কর্পোরেট কোম্পানি গুলোর থেকে প্রাপ্য টাকা না পাওয়া। অর্থাৎ দেওয়ান হাউসিং, এসেল গ্রুপ, অনিল আম্বানি গ্রুপ ও ভিডিওকনের মতো কোম্পানিগুলো ইয়েস ব্যাঙ্কের থেকে লোন নিয়েছিল। তারপর তারা আর সেই লোন শোধ করতে পারেনি। ২০১৮-এর অগস্ট থেকে ২০১৯-এর জুলাইয়ের মধ্যে ইয়েস ব্যাঙ্কের তৎকালীন সিইও ও সহ প্রতিষ্ঠাতা রানা কাপুরের প্রায় ৭০০০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়।
ইয়েস ব্যাঙ্কের এই খারাপ সময়ে তার পাশে দাঁড়ায় ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ও ভারতীয় স্টেট ব্যাঙ্ক। ২০২০ সালের জুলাই মাসে স্টেট ব্যাঙ্ক ইয়েস ব্যাঙ্কের প্রায় ৩০ শতাংশ শেয়ার কিনে নেয়। অন্য দিকে, ওই বছরই অক্টোবর মাসে প্রশান্ত কুমারকে ইয়েস ব্যাঙ্কের এমডি ও সিইও হিসাবে নিযুক্ত করে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। বর্তমানে ইয়েস ব্যাঙ্ক ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়ালেও ইয়েস ব্যাঙ্কের শেয়ারের দাম ১৪ টাকা থেকে ২৫ টাকার মধ্যেই ঘোরাফেরা করে। ফলে আগের মতো অবস্থায় ফিরতে ইয়েস ব্যাঙ্কের বেশ অনেকটা সময় লাগবে বলেই মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।