কলকাতা: কোভিড-১৯ মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকে বিশ্বজুড়েই চাকরি বদলানোর প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। বেতন নিয়ে অসন্তোষ থেকে শুরু করে ওয়ার্ক ফ্রম হোমের সুবিধা না পাওয়ার মতো বিভিন্ন বিষয়কে কেন্দ্র করে কর্মক্ষেত্র পরিবর্তন করছেন গোটা বিশ্বের চাকুরিজীবীরা। তবে, ঘন ঘন চাকরি পরিবর্তন করা, অনেকে প্রায় অভ্যাসে পরিণত করেছেন। দেখা গিয়েছে, মূলত উন্নত বেতন বা পদ পাওয়ার লক্ষ্যে বা কাজের চাপ কমাতে চেয়েই কোনও ব্যক্তি ঘন ঘন চাকরি পরিবর্তন করে থাকেন। অনেকের ক্ষেত্রে আবার কারণটা থাকে বিভিন্ন পরিবেশে নিজেকে যাচাই করা। কারণ যাই হোক না কেন, ঘন ঘন চাকরি পরিবর্তন করাটা কি ঠিক? আসলে, এর থেকে নিয়োগকারী সংস্থাগুলি কোনও চাকরিপ্রার্থীর কিছু অভ্যাস সম্পর্কে ধারণা করতে পারে। আপনি যদি প্রায়শই চাকরি পরিবর্তন করে থাকেন বা করতে চান, তাহলে এই বিষয়গুলি জেনে রাখা ভাল। নাহলে পস্তাতে হতে পারে।
অনেক সময় কোনও কর্মচারী কাজে ভুল করার ফলে চাকরি পরিবর্তন করে থাকেন। এমনও দেখা যায়, যে বেশি কাজ করা এড়াতেই কেউ ঘন ঘন চাকরি বদলান। আবার অনেকের ক্ষেত্রে, এই ধরনের বড় সিদ্ধান্ত নিতে সময় লাগে। সেই সিদ্ধান্তে না আসা পর্যন্ত তাঁরা হাজার সমস্যার মধ্যেও সংশ্লিষ্ট সংস্থাতেই থেকে যান। কাউকে নিয়োগ করার আগে যে কোনও নিয়োগকারী সংস্থা, ওই ব্যক্তি আগের সংস্থা কেন ছেড়ে আসছেন, তা খতিয়ে দেখেন। যদি কাজ ছাড়ার কোনও উপযুক্ত বা যোগ্য কারণ না থাকে, তাহলে কিন্তু ওই কর্মীর বিপদ আছে। কারণ, তাঁর ঘন ঘন চাকরি পরিবর্তনের জন্য, নিয়োগকারীরা ধরেই নেয় যে, ওই ব্যক্তির উপর সম্পূর্ণ নির্ভর করা যাবে না।
কেরিয়ার বিশেষজ্ঞদের মতে, কেরিয়ারে বিরতি নেওয়া এমনিতে ইতিবাচক। জীবনে উন্নতির জন্য যত বেশি সম্ভব জায়গায় কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকাটা নিঃসন্দেহে অত্যন্ত জরুরি। কেরিয়ার বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, যে কোনও ব্যক্তির কর্মজীবনে এমন একটি সময় থাকা উচিত যেখানে তিনি নিজেকে নিয়ে পরীক্ষা করতে পারেন। সহায়ক পরিবেশে তিনি কীভাবে পারফর্ম করতে পারছেন, বিরুদ্ধ পরিবেশে পারফর্ম্যান্স গ্রাফ কমছে না বাড়ছে – এই বিষয়গুলো সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকাটা সাফল্যের অন্যতম চাবিকাঠি।
তবে লক্ষ্য যদি হয় শুধুমাত্র বেতন বৃদ্ধি এবং ভাল পোস্ট, তবে ঘন ঘন চাকরি বদলানোটা নিয়োগকারীরা ভাল চোখে দেখবেন না। তাঁরা মনে করেন, যে সকল চাকরিপ্রার্থী ভাল বেতন এবং ভাল পদ চান, তাঁরা কাজকে ততটা গুরুত্ব দেন না। তবে, কোনও স্বল্পমেয়াদি চুক্তির কাজ, ভ্রমণ, ব্যক্তিগত কাজের মতো কোনও কাজ করার জন্য চাকরি বদলকে নিয়োগের ক্ষেত্রে ইতিবাচক নজরে দেখা হয়।
চাকরি বদলের সময়, চাকরিপ্রার্থীদের আরও একটি বিষয় মাথায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কেরিয়ার বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, পূর্ববর্তী সংস্থা সম্পর্কে চাকরিপ্রার্থী কী বলছেন, কর্মী নির্বাচনের সময় সেই দিকে যে কোনও সংস্থাই মনোযোগ দেয়। আগের সংস্থা সম্পর্কে কোনও নেতিবাচক মন্তব্য, চাকরিপ্রার্থী সম্পর্কে নিয়োগকারীদের মনোভাবও নেতিবাচক করে দিতে পারে।