আসানসোল : রাজ্যে করোনার পজিটিভিটি রেট এখনও যথেষ্ট উদ্বেগজনক। বাড়ছে মৃতের সংখ্যাও। এরই মধ্যে চলছে পুরভোটের প্রচার। কোথাও কোথাও প্রার্থীদের মধ্যে সচেতনতার ছবি দেখা গেলেও উল্টো ছবিটাই বেশি প্রকাশ্যে আসছে। করোনার বিধিনিষেধ শিকেয় উঠছে ভোট প্রচারে। কোনওরকম নির্বাচনী গাইডলাইনের তোয়াক্কা না করেই চলছে প্রচার। এবার এই রাজ্যের শাসক দলকে এক হাত নিলেন বঙ্গ বিজেপি নেত্রী তথা আসানসোলের বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল (MLA BJP Agnimitra Paul)। আসানসোলের (Asansol Municipal Election 2022) ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের পরিরা গ্রামে তৃণমূলের মঞ্চে সোমবার এসেছিলেন কাঁচা বাদাম খ্যাত ভুবন বাদ্যকর। আর তাঁকে দেখতে, গান শুনতে করোনার বিধিনিষেধের তোয়াক্কা না করেই ভিড় জমেছিল। বেশিরভাগের মুখেই ছিল না মাস্ক। সেই নিয়েই তৃণমূল সরকার এবং রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে একহাত নেন অগ্নিমিত্রা পাল।
তাঁর বক্তব্য, যেখানে পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোটের জন্য জাতীয় নির্বাচন কমিশন ২২ জানুয়ারি পর্যন্ত যাবতীয় সভা-সমাবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে, তার তুলনা টেনে এনে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে সোশ্যাল মিডিয়ায় কার্যত তুলোধনা করলেন বিজেপি নেত্রী। রাজ্য নির্বাচন কমিশন যে পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করছে, তা আজ নিজের কথা সাফ বুঝিয়ে দেন অগ্নিমিত্রা পাল। ডিজিটাল প্রচারের উপর জোর না দেওয়ার জন্যও কড়া সমালোচনা করেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনের।
বিজেপি নেত্রী বলেন,” জাতীয় নির্বাচন কমিশন নিয়ম করে দিয়েছে, ২২ জানুয়ারি পর্যন্ত ভারতের যেখানেই নির্বাচন হচ্ছে, সেখানেই বড় কোনও সভা বা মিছিল করা যাবে না। ডিজিটালি প্রচার করতে হবে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য নির্বাচন কমিশন তো আসলে তৃণমূল কংগ্রেসেরই একটি বর্ধিত শাখা। পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলের জন্য এক নিয়ম, বাকি সব দলের জন্য… বিজেপির জন্য আর এক নিয়ম। ঠিক সেই বিষয়টিই আজ দেখা গেল। উত্তর আসানসোলের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূলের প্রচারে কাঁচা বাদাম খ্যাত গায়ককে নিয়ে আসা হয়েছে। সেখানে হাজার হাজার মানুষের ভিড় – বৃদ্ধ, বৃদ্ধা, ছোট বাচ্চারা, মহিলারা বিনা মাস্কে সেই সভায় বসে গান শুনল এবং সেই গানের পরে বাদামের ঠোঙা করে হরির লুঠের মতো করে ছুড়ে দেওয়া হল। বাচ্চারা সেখানে হরির লুঠের মতো বাদাম কুড়োতে এল, প্রায় পদপৃষ্ট হয়ে যাওয়ার মতো অবস্থা।”
অগ্নিমিত্রা পাল রাজ্যের শাসক শিবিরকে আক্রমণ শানিয়ে আরও বলেন, “৩১ ডিসেম্বর আমি এইসব ভেবেই চিঠি দিয়েছিলাম সিএমওএইচ ও জেলাশাসককে। বলেছিলাম, আগামী দিনে কী আসতে চলেছে। জানতে চেয়েছিলাম, তাঁরা প্রস্তুত কি না। বলেছিলাম, আমার তরফ থেকে বিধায়িকা হিসেবে যদি কোনও সাহায্যের দরকার হয় আমি তৈরি। তাঁরা কেউ আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। এদিকে শেষ ৭২ ঘণ্টায় সাত জন মারা গেলেন আসানসোলের সরকারি হাসপাতালে। আজ যে সভাটি হল, তার জন্য কে দায় নেবে? যারা এই সভার আয়োজন করেছে, তাদের বিরুদ্ধে কি এফআইআর করা হবে?”