পানাজি: ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা হয়ে গিয়েছে। ১৪ ফেব্রুয়ারি ভোট রয়েছে গোয়ায় (Goa Assembly Election 2022)। হাতে সময় আর এক মাস। প্রতিটি দল নিজের নিজের ঘুঁটি সাজাতে ব্যস্ত। তৈরি হচ্ছে ভোটযুদ্ধে নীলনকশা। এরই মধ্যে গোয়ার মন্ত্রিত্ব ছাড়লেন মাইকেল লোবো (Goa Minister Michael Lobo)। ইস্তফা দিয়েছেন গোয়ার বিধায়ক পদ থেকেও। পদ্ম শিবিরের (Goa BJP) সঙ্গে যাবতীয় সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন লোবো। কানাঘুষো শোনা যাচ্ছে, কংগ্রেস শিবিরে নাম লেখাতে পারেন তিনি।
গোয়া বিজেপির নেতৃত্বের উপর বেশ অসন্তুষ্ট সদ্য প্রাক্তন মন্ত্রী মাইকেল লোবো। পদ্ম শিবিরের উপর ক্ষোভ উগরে দিয়ে তিনি জানিয়েছেন,দল যেভাবে কাজ করছে, বিশেষ করে বিজেপির নিচু তলার কর্মীদের সঙ্গে যে আচরণ করা হচ্ছে, তাতে তিনি বেশ বিরক্ত।
এদিকে ভোটের ঠিক এক মাস বাকি থাকতে মন্ত্রীর পদত্যাগ এবং দল বদলের ঘটনায় বেশ অস্বস্তিতে গোয়া বিজেপি। উল্লেখ্য গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী প্রমোদ সাওয়ান্তের মন্ত্রিসভার একজন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন লোবো। এর আগে আরও দুই বিধায়ক আলিনা সালদানহা এবং কার্লোস আলমেদাও বিজেপি ছেড়েছিলেন। এরপর মাইকেল লোবোর পদ্ম সঙ্গ ত্যাগের পর সব মিলিয়ে তিন জন খ্রিস্টান বিধায়ক বিজেপি ত্যাগ করলেন।
উল্লেখ্য, গোয়ার রাজনীতিতে খ্রিস্টার ভোটাররা বরাবরই একটি বড় ভূমিকা পালন করে আসছেন। গোয়ার ২৫ শতাংশেরও বেশি মানুষ খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের। ২০১৯ সালে গোয়ার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মনোহর পারিকরের মৃত্যুর পর থেকেই সালদানহা, আলমেদা ও লোবো – তিনজনেই দলের কাজ করার ধরন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। দলের কাজ করার পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনার কথা বলছিলেন তিন জনেই। এই পরিস্থিতিতে লোবোর ভোটের ঠিক আগেই বিজেপি ত্যাগে চাপা অস্বস্তি বোধ করছে পদ্ম শিবির।
দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে লোবো বলেন, “বিজেপি এখন এত বড় হয়ে গিয়েছে যে নিচু তলার কর্মীদের অবদানকে আর মূল্য দেয় না। অনেকে আমার কাছে অভিযোগ জানিয়েছে এই বিষয়ে। একটি রাজনৈতিক দলে উত্থান-পতন লেগেই থাকবে। তবে কর্মীদের ভুলে গেলে চলবে না।” লোবো আরও বলেন, “আমি অনেক দিন ধরেই বলছি। কিন্তু কেউ শুনতে রাজি হয়নি। আমি বুঝতে পারছি যে আমরা দূরে সরে গিয়েছি।”
লোবোর পরবর্তী রাজনৈতিক গতিবিধি কী হবে তারও ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছেন সদ্য বিজেপির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করা নেতা। তিনি জানিয়েছেন, কিছু রাজনৈতিক দলের সঙ্গে তিনি আলোচনা করছেন। তবে, ভবিষ্যত পরিকল্পনা ঠিক কী হবে, সেই সম্পর্কে এখনও সিদ্ধান্ত নেননি। যদিও গোয়ার রাজনীতির অন্দরমহলে জোর জল্পনা ছড়িয়েছে, তিনি কংগ্রেসে যোগ দিতে চলেছেন। কংগ্রেস নেতারাও বিষয়টি নিয়ে একটি ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করে রেখেছেন। গোয়ার কংগ্রেস নেতাদের কথায়, লোবো কংগ্রেসের নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনাও করছেন।
উল্লেখ্য এর আগে যে দুই খ্রিস্টান বিধায়ক বিজেপি ত্যাগ করেছেন, তাঁদের মধ্যে সালদানহো আম আদমি পার্টিতে যোগ দিয়েছেন। অন্যদিকে আলমেদা এলং অন্য এক নির্দল বিধায়ক প্রসাদ গাঁওকর যোগ দিয়েছেন কংগ্রেসে।
এদিকে গোয়া বিজেপির সভাপতি, সদানন্দ শেট তানাভড়ে বলেছেন, “লোবোর চলে যাওয়ায় দলের জন্য কোনও পার্থক্য হবে না। তিনি শুধু নামেই দলের সঙ্গে ছিলেন। আমরা আগেই ধরে নিয়েছিলাম, তিনি থাকবেন না। দলে তাঁর দীর্ঘদিনের অবদানের জন্য আমরা তাঁকে দল থেকে বরখাস্ত করিনি।”
আরও পড়ুন : Yogi’s Controversial Statement: উত্তর প্রদেশে “৮০ বনাম ২০”-র লড়াই, ভোটের একমাস আগে যোগীর মন্তব্যে বিতর্ক