কলকাতা: ১৪ ফেব্রুয়ারি গোয়ায় বিধানসভা নির্বাচন (Goa Assembly Election 2022)। বাকি আর মাত্র এক মাস। সৈকত-রাজ্য তৈরি হচ্ছে ভোটের নীল নকশা। জাতীয় রাজনীতিতে নিজ অস্তিত্ব প্রমাণ করতে সম্প্রতি কংগ্রেসের সঙ্গে দূরত্ব বাড়িয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। কিন্তু, সব শেষ হয়েও যেন শেষ হয়নি। ভোটের এক মাস আগে ফের একবার কংগ্রেস তৃণমূল কাছাকাছি আসার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
সূত্রের খবর, মঙ্গলবার দিল্লিতে গোয়ার কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বসার কথা রাহুল গান্ধী। আগামী মাসের বিধানসভা ভোটে সৈকত রাজ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে জোটের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা হতে পারে ওই বৈঠকে। সূত্র মারফত এমটাই জানা গিয়েছিল। কিন্ত, তার আগে ফের কংগ্রেসকে ‘দ্বিচারী’ বলে কটাক্ষ করা হল তৃণমূলের মুখপত্র ‘জাগোবাংলা’-র সম্পাদকীয় কলামে।
কী লেখা হয়েছে ‘জাগো বাংলা’-র সম্পাদকীয়তে?
মঙ্গলবার, ‘জাগো বাংলা’-র সম্পাদকীয় কলামে লেখা হয়েছে, ‘কংগ্রেস নাকি ধর্মনিরপেক্ষতায় বিশ্বাসী। কংগ্রেস নাকি ধর্ম নিয়ে ব্যবসা করা বিজেপির সঙ্গে হাত মেলায় না। তাহলে চণ্ডীগঢ়ে কী হল? সেখানে পুরভোটে কী হল! কী করে দুটো ভোট বেশি পেল বিজেপি!…টাই হয়ে যাওয়ার পরেও গায়ের জোরে আপের একটি ভোট বাতিল করে বিজেপি। বিজেপির এটাই চরিত্র। তার দোসর কংগ্রেস।’
‘অভিমান’ ভুলে কি কাছাকাছি আসছে তৃণমূল-কংগ্রেস?
অথচ, তৃণমূলের তরফ থেকে স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে, গোয়ার নির্বাচনে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কংগ্রেস এবং অন্যান্য বিরোধী দলগুলির সঙ্গে হাত মেলাতে তাঁরা আগ্রহী। তৃণমূল সাংসদ তথা দলের গোয়ার ইনচার্জ মহুয়া মৈত্র শুক্রবার টুইটারে লেখেন, “নিশ্চিত থাকুন, আমরা (তৃণমূল) গোয়াতে বিজেপিকে হারানোর জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করব। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অতীতেও এটি করেছেন। গোয়াতেও তার পুনরাবৃত্তি করার জন্য পিছপা হবে না তৃণমূল।” শুধু টুইটই করেননি মহুয়া, সেই সঙ্গে গোয়া ফরওয়ার্ড পার্টি, মহারাষ্ট্রবাদী গোমন্তক পার্টিকে ট্যাগও করেছেন তৃণমূল সাংসদ। পোস্টটিকে ট্যাগ করেছেন কংগ্রেসকেও।
তৃণমূলের সঙ্গে এখনই জোটে নয় কংগ্রেস
প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি কোনওভাবেই মিটছে না পুরনো তিক্ততা? তবে, প্রবীণ কংগ্রেস নেতা কে সি বেণুগোপাল সম্স্ত জল্পনায় জল ঢেলে দিয়ে জানিয়েছেন, গোয়া নিয়ে বৈঠকে তৃণমূলের সঙ্গে জোট প্রসঙ্গে কোনও আলোচনাই হয়নি। বেণুগোপালের কথায়, “কংগ্রেস একাই গোয়াকে উন্নয়নের পথে ফিরিয়ে আনতে সমর্থ।” কিছুদিন আগেই প্রায় অনুরূপ মন্তব্য করেছিলেন বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা পি চিদাম্বরম। তৃণমূল কংগ্রেস এবং আম আদমি পার্টিকে আক্রমণ শানিয়ে বলেছিলেন, “শুধুমাত্র কংগ্রেসই পারে বিজেপিকে হারাতে। তৃণমূল এবং আম আদমি পার্টি অ-বিজেপি ভোট ভাগাভাগি করছে। এটা বিজেপির উপকারে আসবে কি না, আমি বলতে পারব না।”
উল্লেখ্য, গোয়ার বেশ কয়েকজন বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা সম্প্রতি তৃণমূলে গিয়ে যোগ দিয়েছেন। সেই তালিকায় রয়েছেন গোয়ার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লুইজিনহো ফেলেইরো। ২০১৭ সালের গোয়া নির্বাচনে ৪০ আসনের বিধানসভায় কংগ্রেস ১৭ টি আসন জিতে বৃহত্তম দল হয়ে উঠেছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত অবশ্য সরকার গঠন করেছিল বিজেপি।
আরও পড়ুন: School Service Commission: সরিয়ে দেওয়া হোক SSC চেয়ারম্যানকে, রাজ্যকে পরামর্শ হাইকোর্টের