বেঙ্গালুরু: কর্নাটকে কড়া নাড়ছে বিধানসভা নির্বাচন (Karnataka Assembly Election)। ভোটের ময়দানে এক দল অন্য দলকে টেক্কা দেওয়ার জন্য বিভিন্ন পন্থা বেছে নেয়। কোনও রাজনৈতিক দলকে দুর্নীতি, মিথ্যাচারকে হাতিয়ার করে নির্বাচনী প্রচারে নামতে আগেও দেখা গিয়েছে। তবে এবার দক্ষিণী এই রাজ্যের নির্বাচনী পারদ চড়ছে দুধকে কেন্দ্র করে। আমূল নাকি নন্দিনী? এই নিয়েই শুরু হয়েছে শাসক দল ও বিরোধী দলের মধ্যে বাদানুবাদ। আর এই বাগযুদ্ধের সূত্রপাত গুজরাটের আনন্দের দুগ্ধ কর্পোরেশন সংস্থা ‘আমূল’-র একটি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে। সম্প্রতি কর্নাটকে নিজেদের ব্যবসা বিস্তারের কথা জানিয়েছে আমূল। এরপরই কর্নাটক রাজ্য দুগ্ধ কর্পোরেশনের সংস্থা ‘নন্দিনী’কে ধ্বংস করার অভিযোগ উঠেছে বাসবরাজ বোম্মাই প্রশাসনের বিরুদ্ধে। এবার এই অভিযোগের জবাব দিল পদ্ম শিবির। কর্নাটকে আমূলের বিস্তার নিয়ে মিথ্যে তথ্য প্রচার করছে বলে অভিযোগ বিজেপি।
বিজেপির আইটি বিভাগের প্রধান অমিত মালব্য টুইট করে স্পষ্ট জানিয়েছেন, কর্নাটকে আসছে না আমূল। তিনি টুইটে লেখেন, “আমূল ও কর্নাটক মিল্ক ফেডারেশন, উভয়েই ক্যুইক কর্মাস প্ল্যাটফর্মে নিজেদের পণ্য বিক্রি করে। ২০১৯ সালে রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর এই কেএমএফ-র বার্ষিক আয় ১০ হাজার কোটি অবধি পৌঁছে গিয়েছে। ২০২২ সালে বার্ষিক আয় ছুঁয়েছিল ২৫ হাজার কোটি টাকা। যার মধ্যে ২০ হাজার কোটি টাকা কর্নাটকের দুগ্ধচাষীদের কাছেই গিয়েছে।” প্রসঙ্গত, গত বুধবার টুইট করে আমূল জানায়, বেঙ্গালুরুর বাজারেও মিলবে আমূল দুধ ও দই। আমূলের এই ঘোষণা নিয়ে মাঠে নেমে পড়ে কংগ্রেস ও অন্যান্য বিরোধী দলগুলি। কর্নাটক মিল্ক ফেডারেশনের নন্দিনী ব্র্যান্ডটি আমূল দখল করবে বলে জল্পনা উসকে দেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া। এদিকে এই আবহেই রবিবার কর্নাটকে যান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁকে বিঁধে সিদ্দারামাইয়া বলেন, রাজ্যকে লুঠ করতেই তিনি এসেছেন কি না।
There is a reason why India doesn’t TRUST Congress. They LIE! Latest being the misinformation campaign that Karnataka Milk Federation, which owns Nandini, is going to merge with Amul. Here are the facts
– BJP has done far more to strengthen KMF and make Nandini a global brand
1/n pic.twitter.com/HWdvCjqxfK— Amit Malviya (@amitmalviya) April 9, 2023
কংগ্রেসকে খোঁচা দিয়ে মালব্য বলেছেন, “এই কারণেই কংগ্রেসকে বিশ্বাস করে না ভারত। তারা মিথ্যে কথা বলে। সাম্প্রতিকতম মিথ্যে হল, কর্নাটক মিল্ক ফেডারেশন আমূলের সঙ্গে মিলে যাচ্ছে। কেএমএফ-র শক্তিশালী করে তুলতে এবং একে গ্লোবাল ব্র্যান্ড করে তুলতে বিজেপি অনেক কিছু করেছে।” এদিকে কংগ্রেসের অভিযোগের পর কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাই শনিবার বলেছিলেন, আমূল নিয়ে রাজনীতি করা হচ্ছে। তবে তাঁর দাবি, আমূল একদিন দেশের এক নম্বর ব্র্যান্ড হয়ে উঠবে। বোম্মাই বলেন, “নন্দিনীর পণ্যগুলি অন্যান্য রাজ্যেও বিক্রি হয় এবং প্রতিযোগিতামূলক বাজারে যাতে এই ব্র্যান্ড আমূলকে ছাপিয়ে যেতে পারে, তার জন্য সমস্ত পদক্ষেপ করা হবে।”
প্রসঙ্গত, দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মিল্ক অপারেটিভ হল কর্নাটক মিল্ক ফেডারেশন। মহারাষ্ট্র, গোয়া, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলঙ্গানা ও তামিলনাড়ুতে এর ডিপো রয়েছে। শুধু দেশেই নয়, বিদেশেও রফতানি করা হয় এই দুধ। অমিত মালব্য বলেছেন, “কেএমএফ-র মোট বিক্রির প্রায় ১৫ শতাংশই কর্নাটকের বাইরে। সিঙ্গাপুর, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি ও আরও অন্যান্য দেশে নন্দিনীর পণ্য সরবরাহ করা হয়। আমূল ও কেএমএফ একসঙ্গে মিলে যাবে না।” তিনি আরও বলেন, “বিজেপির অধীনে কর্নাটকে রাজ্যের চাহিদা মেটানোর পরেও অনেক দুধ উদ্বৃত্ত থাকে। দুগ্ধচাষীরা খুব ভাল রয়েছেন। নন্দিনীর জন্য কুমিরের কান্না কাঁদছে কংগ্রেস। এই কংগ্রেসই গোহত্যা বিরোধী বিলের বিরোধিতা করেছে এবং নন্দিনীকে জবাই করার অনুমোদন দিয়েছে।” শেষে তিনি উল্লেখ করেছেন, নন্দিনীকে আরও বড় ব্র্যান্ড বানানোর পরিকল্পনা করছে বিজেপি।