কলকাতা: পুরসভার নির্বাচনের আগে ফের উত্তপ্ত শহর কলকাতা। ১০৮ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থীকে মারধরের অভিযোগ। অভিযোগের তির তৃণমূলের দিকে। যদিও হামলার পাল্টা অভিযোগ করেছে তৃণমূল।
১০৮ নম্বরে এবার বিজেপির টিকিটে দাঁড়িয়েছেন মেঘনাথ হালদার। সোমবার রাতে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ওই এলাকা। অভিযোগ, বিজেপির দলীয় কার্যালয়ে ভাঙচুর চালায় একদল দুষ্কৃতী। প্রত্যেকেই তৃণমূল আশ্রীত বলে অভিযোগ। দলীয় কার্যালয়ে ভাঙচুর করা হয়। বিজেপি প্রার্থীকে মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ। পরে এলাকার লোক ও দলের অনান্য কর্মীরা গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেন।
তার জেরে এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। রাতেই আনন্দপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন বিজেপি প্রার্থী। যদিও তৃণমূলের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন নেতৃত্ব। ১০৮ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী সুশান্ত ঘোষের পাল্টা, বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা তৃণমূলের ব্যানার ফেস্টুন ছিড়ে ফেলেছে। তা নিয়েই এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে। তৃণমূল কর্মীরা কেবল প্রতিরোধ গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন। তা নিয়েই বচসা।
যদিও পুলিশ এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কাউকেই গ্রেফতার করেনি। দুপক্ষেরই বক্তব্য খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এলাকায় যাতে নতুন করে উত্তেজনা না ছড়ায়, তার জন্য নজর রাখা হয়েছে।
২০০৫ সাল থেকে এই ওয়ার্ডটি বামেদের দখলে ছিল। তত্কালীন সময়ে কাউন্সিলর ছিলেন অমল মজুমদার। ২০১০ সালেও বামেরাই এই ওয়ার্ড দখলে রাখেন। কাউন্সিলর হন পার্থ রায় চৌধুরী । ২০১৫ সালে পট পরিবর্তন হয়। তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় আসে। কাউন্সিলর হন শ্যামল বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার তৃণমূলের তরফে লড়ছেন সুশান্ত ঘোষ।
২০১৫ সালে এই ওয়ার্ড দখলে নেয় তৃণমূল। ২০১০ সালের তুলনায় ১৯টি আসন বেশি পায় তৃণমূল। দ্বিতীয় স্থানে বামেরা। আসন সংখ্যা কমে ১৮ টা ও ,তৃতীয় স্থানে বিজেপি। তাদের ৪ টি আসন বাড়ে। এবার নির্বাচন খানিকটা আলাদা। তৃণমূলের যুযুধান প্রতিপক্ষ হিসাবে উঠে এসেছে গেরুয়া শিবির। শেষ কয়েক বছরে কলকাতা-সহ গোটা রাজ্যে সাংগঠনিক কাঠামো অনেকটাই মজবুত করেছে পদ্ম শিবির। তবে সে অর্থে একুশের নির্বাচনে বিশেষ কোনও ‘খেল’ দেখাতে না পারলেও, পুর নির্বাচনে একেবারে সর্বশক্তি দিয়ে লড়ছে বিজেপি। সে কথা আগেই সোজাসুজি বলেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ।
শক্তি যাচাইয়ের পরীক্ষায় যুযুধান দুই পক্ষের প্রার্থীরা নিজ নিজ এলাকায় ক্যারিশ্মা দেখানোর মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছেন। তবে ২০১৫ সাল থেকে যে এলাকায় তৃণমূলের একচেটিয়া আধিপত্য রয়েছে, সেখানে যে বিজেপি প্রার্থীকে একটু বেশি পরিশ্রম করতে হবে, তা বলাই বাহুল্য। আর শক্তি পরীক্ষার এই লড়াইয়ে এখন তপ্ত মহানগর।
আরও পড়ুন: মুখ ফেরাচ্ছে পড়শিরাও, কংগ্রেসই বেশি পছন্দ হেমন্ত সোরেনের; আরও একা হচ্ছেন মমতা?
আরও পড়ুন: ‘ভোটের আগেই তো হেরে বসে আছেন!’ বিজেপি পুর-প্রার্থীদের ভর্ৎসনা অমিতের