নয়া দিল্লি: লোকসভা নির্বাচনের ঠিক আগে বেসুরো আরও এক বড় মাপের কংগ্রেস নেতা। জাতীয় স্তরে জাতিভিত্তিক আদমশুমারির দাবি নিয়ে, কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর তীব্র সমালোচনা করলেন হিমাচল প্রদেশের বিশিষ্ট কংগ্রেস নেতা আনন্দ শর্মা। জাতিভিত্তিক জনগণনার দাবি তুলে, রাহুল তাঁর বাপ-ঠাকুমাকেই অসম্মান করছেন বলে দাবি আনন্দ শর্মার। বিশিষ্ট কংগ্রেস নেতার দাবি, তাঁদের দল কখনই আইডেন্টিটি পলিটিক্স, অর্থাৎ, পরিচয়ভিত্তিক রাজনীতিকে সমর্থন করে না। বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ), কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গেকে, এই বিষয়ে একটি চিঠি দিয়েছেন আনন্দ শর্মা। চিঠিতে কংগ্রেস নেতা সতর্ক করেছেন, জাতিভিত্তিক জনগণনার দাবির প্রেক্ষিতে, কংগ্রেস ইন্দিরা ও রাজীব গান্ধীকে অসম্মান করছে বলে মনে করতে পারেন অনেকে।
সংবাদ সংস্থা আইএএনএস, আনন্দ শর্মার পুরো চিঠিটি সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ করেছে। আনন্দ শর্মা জানিয়েছেন, ১৯৮০ সালে ইন্দিকা গান্ধী স্লোগান দিয়েছিলেন, “না জাত পর না পাত পর, মোহর লাগেগি হাত পার” (না জাতে,না পাতে, ভোট পড়বে হাতে)। এই স্লোহানই জাত-পাত নিয়ে কংগ্রেসের ঐতিহাসিক অবস্থানের পরিচয় বলে দাবি করেছেন আনন্দ শর্মা। তিনি আরও উল্লেখ করেছেন, ১৯৯০ সালে, রাজীব গান্ধীও জাতপাতের রাজনীতিকে নির্বাচনী ইস্যু বানানোর বিরোধিতা করেছিলেন। রাহুল গান্ধীর কংগ্রেস, ইন্দিরা-রাজীবের অবস্থান থেকে সরে আসায় দেশব্যাপী বহু কংগ্রেসী উদ্বিগ্ন বলে দাবি করেছেন আনন্দ শর্মা।
IANS Exclusive: Congress leader Anand Sharma’s big attack on Rahul Gandhi, says ”the caste census issue is disrespect for Indira Gandhi and Rajiv Gandhi’s legacy”. pic.twitter.com/MSE4PqNilh
— IANS (@ians_india) March 21, 2024
আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে, জাতিভিত্তিক জনগণনাকে নির্বাচনের এক প্রধান ইস্যু হিসেবে তুলে ধরতে চাইছেন রাহুল গান্ধী। জাতিভিত্তিক জনগণনার দাবির মাধ্যমে, বিজেপির ওবিসি ভোটব্যাঙ্কে ফাটল ধরাতে চাইছে। ইতিমধ্যেই, কর্নাটক এবং বিহারে জাতিভিত্তিক জনগণনা হয়েছে। কর্নাটকে ক্ষমতায় আছে কংগ্রেস, আর বিহারে কয়েকদিন আগে পর্ন্ত আরজেডি-র সঙ্গে জোটে ক্ষমতায় ছিল তারা। রাহুল গান্ধী প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, ইন্ডিয়া জোট যদি কেন্দ্রে সরকার গঠন করতে পারে, তাহলে দেশব্যাপী জাতিভিত্তিক জনগণনা করা হবে।
বস্তুত, দীর্ঘদিন ধরেই কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব তথা গান্ধী পরিবারের সঙ্গে বনিবনা নেই আনন্দ শর্মার। যে ২৩ জন বিক্ষুব্ধ কংগ্রেস নেতা, দলের অন্দরে জি২৩ গোষ্ঠী গঠন করেছিলেন, তার অন্যতম আনন্দ শর্মা। এখন আর জি২৩ গোষ্ঠী নেই।গোষ্ঠীর বেশ কয়েকজন নেতা দলই ছেড়ে দিয়েছেন। ২০২২ সালে হিমাচল বিধানসভা নির্বাচনের জন্য কংগ্রেসের স্টিয়ারিং কমিটির চেয়ারম্যানের পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন আনন্দ শর্মা। শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে তিনি তাঁকে দলের মধ্যে বিচত্ছিন্ন করে রাখা এবং অপমান করার অভিযোগ করেছিলেন। একই সময়ে দল থেড়েছিলেন জি২৩ গোষ্ঠীর আরেক নেতা, গুলাম নবী আজাদ। আনন্দ শর্মা সেই সময় বলেছিলেন, শীর্ষ নেতৃত্ব কোনও বিষয়েই তাঁর পরামর্শ নেন না। তাঁকে দলীয় বৈঠকগুলিতে ডাকা হয় না।