আহমেদাবাদ: ভোটের বাজারে আমদানি হল এক নতুন জেহাদের, ভোট জেহাদ। এই শব্দবন্ধ প্রথম শোনা গিয়েছে সমাজবাদী পার্টির নেত্রী তথা কংগ্রেস নেতা সলমন খুরশিদের ভাইঝি মারিয়া আলমের মুখে। বৃহস্পতিবার (২ মে), একই শব্দবন্ধ শোনা গেল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বক্তব্যেও। ভোট জেহাদ নিয়েই ইন্ডিয়া জোটের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানালেন তিনি। দাবি করলেন, লোকসভা নির্বাচনে ইন্ডিয়া জোটের কৌশল সপা নেত্রীই ফাঁস করে দিয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, আলাদা করে মুসলিম সম্প্রদায়ের ভোট চেয়ে দেশের গণতন্ত্র এবং সংবিধানকে অপমান করছে ইন্ডিয়া জোট।
এদিন গুজরাটের আনন্দ থেকে এক নির্বাচনী জনসভায় তিনি বলেন, “ইন্ডিয়া জোট মুসলমানদের ভোট জেহাদ করতে বলেছে। এক শিক্ষিত পরিবার থেকে এই কথা বলা হয়েছে। মাদ্রাসা থেকে বের হওয়া কোনও শিশু এটা বলেনি। ইন্ডি জোট বলছে, সমস্ত মুসলমানদের একত্রিত হয়ে তাদের ভোট দিতে হবে। ইন্ডি জোট গণতন্ত্র ও সংবিধানকে অপমান করেছে। তাদের একটা নিরব বোঝাপড়া আছে। একদিকে, ইন্ডি জোট এসসি, এসটি, ওবিসি এবং জেনারেল ক্যাটেগরিকে ভাগ করার চেষ্টা করছে এবং অন্যদিকে, তারা ভোট জেহাদের স্লোগান তুলছে। এতেই বোঝা যায় তাদের উদ্দেশ্য কতটা বিপজ্জনক।”
দিন কয়েক আগে ভোট জেহাদের ডাক দিয়েছিলেন মারিয়া আলম। উত্তর প্রদেশের ফারুখাবাদ আসনে এবার ইন্ডিয়া জোটের হয়ে লড়াই করছেন সপা প্রার্থী নাভাল কিশোর শাক্য। তাঁর সমর্থনে আয়োজিত এক জনসভায় মারিয়া বলেছিলেন, মোদী সরকারকে সরাতে গেলে ভোট জেহাদ প্রয়োজন। তিনি বলেন, “লোকে বলছে, সংবিধান এবং গণতন্ত্র হুমকির মুখে। আমি বলব, মানবতাই হুমকির মুখে।” তাঁর এই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে মারিয়া আলমের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেছে উত্তর প্রদেশ পুলিশ। পুলিশের দাবি, দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে শত্রুতায় উসকানি দিয়েছেন মারিয়া। ভারতীয় দণ্ডবিধির পাশাপাশি জনপ্রতিনিধি আইনের প্রাসঙ্গিক ধারাতেও তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফারুখাবাদের প্রাক্তন সাংসদ সলমন খুরশিদও। তাঁর বিরুদ্ধেও মামলা করা হয়েছে। সংবাদ সংস্থা এএনআইকে পুলিশ কর্তা বিকাশ কুমার জানিয়েছেন, মারিয়া আলম ধর্মের ভিত্তিতে ভোট চেয়ে আদর্শ আচরণবিধির লঙ্ঘন করেছেন।
ভাইজির বক্তব্যের বিষয়ে সলমন খুরশিদ বলেছেন, প্রকাশ্যে বক্তব্য দেওয়ার সময় কিছু কিছু শব্দ এড়িয়ে যাওয়া উচিত। না-হলে সেই শব্দগুলির ভুল ব্যাখ্যা করা হতে পারে। তিনি বলেছেন, “জেহাদ কথার অর্থ কোনও এক নির্দিষ্ট অবস্থার বিরুদ্ধে লড়াই করা। ও নিশ্চয়ই বলতে চেয়েছিল, সংবিধানকে রক্ষার জন্য জেহাদ করতে হবে।” ফারুখাবাদে ভোট হওয়ার কথা ১৩ মে।