উত্তর ২৪ পরগনা: ইদানিং প্রার্থী পছন্দ না হলে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের অন্দরে যে ক্ষোভ বিক্ষোভ শুরু হচ্ছে তা নিয়ে অস্বস্তি বাড়ছে দলগুলির। ভোটের মুখে দল ছাড়ার হিড়িক লাগছে, পথে বসে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন কেউ কেউ, কোথাও আবার টিকিট না পেয়ে নির্দল হয়ে দাঁড়িয়ে পড়ছেন। আগামী ফেব্রুয়ারিতে রাজ্যের ১০৮টি পুরসভায় ভোট হওয়ার কথা। যার প্রস্তুতি ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে। সূত্রের খবর, বারাসত পুরসভায় (Barasat Municipality) নতুন মুখ আনতে গিয়ে অকারণে যাতে পুরনোরা বাদ না যায় তা নিয়ে ইতিমধ্যেই তৃণমূলের অন্দরে একটা রব শোনা যাচ্ছে। এমনকী এ নিয়ে দ্বিমতও তৈরি হচ্ছে কারও কারও মধ্যে।
এ প্রসঙ্গে দলের বারাসাত সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অশনি মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, কেউ সারা জীবন জনপ্রতিনিধি থাকতে পারেন না। কে প্রার্থী হবেন তা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। নিজেদের মধ্যে যদি দলের লোকজন গোলমালে জড়িয়ে পড়ে তা বিরোধীদের হাত শক্ত করার সমান হবে। অশনি মুখোপাধ্যায়ই জানান, “প্রাথমিকভাবে প্রার্থী ঝাড়াই বাছাই চলছে। নেতৃত্ব কথা বলছে। এখনও কিছু স্থির হয়নি। কাজ দেখে মূল্যায়ণ করা হচ্ছে। আমরা পাঁচ বছর যারা জনপ্রতিনিধি রয়েছি দল পারফরম্যান্স দেখছে। সবকিছু তুল্যমূল্য বিচার করেই ঊর্ধ্বতন নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত নেবে।”
পুরনো কাউন্সিলরদের বাদ দেওয়া প্রসঙ্গে অশনি মুখোপাধ্যায়ের মত, “দলের নেতৃত্বের বিবেচনাটাই সর্বোচ্চ। আমি আছি বলে চিরকাল থেকে যাব তা তো ঠিক না। আমি অশনি মুখার্জি ২০০০ সাল থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত জনপ্রতিনিধি ছিলাম। তারপর আবার ২০১৫ সালে জনপ্রতিনিধি হই। দীর্ঘ ১০ বছর জন প্রতিনিধি ছিলাম না। দলীয় শিষ্টাচার, দলীয় নির্দেশ মানতে হবে। হয়ত খারাপ লাগে, কিন্তু শুধু জন প্রতিনিধি হওয়াটাই তো রাজনৈতিক লক্ষ্য হতে পারে না।”
অন্যদিকে অশোকনগর তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা তথা বিধায়ক নারায়ণ গোস্বামীর বক্তব্য, “প্রাথমিক তালিকা কিছুই এখনও তৈরি নয়। যাঁরা কাউন্সিলর আছেন, তাঁদের পারফরমেন্স ঠিক থাকলে, ওয়ার্ডে রিজারভেশন না থাকলে তাঁরাই আবার প্রার্থী হবেন। এমনটাই হয়। সবটা আমি বলতে পারব না। তবে অশোকনগরের দলের কাছে ৮০ শতাংশের উপরে কাউন্সিলরের নামই প্রস্তাব করা হয়েছে টাউন তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে। ”
গত পুরভোটে এই পুরসভায় ৩৫টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২৬টিতে তৃণমূলের প্রার্থী জয়লাভ করেছিল। সূত্রের খবর, দুর্নীতির অভিযোগে বারাসত পুরসভার বর্তমান চার বিদায়ী কাউন্সিলরের নাম প্রার্থী তালিকা থেকে বাদ যাচ্ছে। এ ছাড়াও আরও কিছু নাম আছে যা নিয়ে প্রশ্নের অবকাশ রয়েছে দলের অন্দরেই। বারাসত পুরভোটে শাসকদলের প্রার্থী তালিকায় কাদের নাম থাকবে আর কারাই বা বাদ পড়বে তা নিয়ে এখন রীতিমতো চর্চা শুরু বিভিন্ন মহলে। তবে তৃণমূল এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চায়নি।
এ প্রসঙ্গে বিজেপির বারাসাত সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তাপস মিত্র বলেন, “তৃণমূলের কোনও নীতি আদর্শ নেই। ওরা দাঁড়িয়ে আছে তোলাবাজির উপর। ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে গোলমাল। তাই প্রার্থী তালিকায় কে থাকবে কে থাকবে না তা নিয়েও এত হইহই। আমাদের দলে তো এসব নেই। আমরা একজোটে লড়ব। তৃণমূলকে হারানোই এখন লক্ষ্য।”
আরও পড়ুন: Deganga: ১০০ দিনের কাজ মানুষ পাচ্ছেন কি না, ঘুরে দেখল কেন্দ্রের দল