নয়া দিল্লি: ভোটের মুখেই পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ সিং চন্নি(Charanjit Singh Channi)-র বাড়িতে হানা দিয়েছিল ইডি (ED Raid) আধিকারিকরা। সেই অভিযানেই এবার রাজনৈতিক রঙ চড়াল কংগ্রেস (Congress)। আগেই মুখ্যমন্ত্রী চন্নি অভিযোগ করেছিলেন যে, তিনি যাতে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে না দাঁড়ান, তার জন্য ভয় দেখানো হচ্ছে। এবার কংগ্রেসের তরফে সরাসরি নির্বাচন কমিশনেই অভিযোগ জানানো হল। বৃহস্পতিবার কংগ্রেসের প্রতিনিধি দল মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুশীল চন্দ্রের সঙ্গে দেখা করেন এবং ইডি হানার পিছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে বলে অভিযোগ জানান।
বৃহস্পতিবার কংগ্রেসের প্রতিনিধি মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুশীল চন্দ্রের কাছে একটি হলফনামা জমা দেন। কংগ্রেস নেতা রণদীপ সূর্যেওয়ালা ও অভিষেক সিংভি অভিযোগ করেন যে, নির্বাচনের দিন ঘোষণার পরই গত ৮ জানুয়ারি থেকে আদর্শ আচরণবিধি জারি হয়ে গিয়েছে। এই ইডি হানা সেই আচরণবিধিকেই লঙ্ঘন করেছে।
হলফনামায় বলা হয়েছে, “এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী সর্দার চরণজিৎ সিং চন্নির আত্মীয়ের বাড়িতে যে তল্লাশি অভিযান চালিয়েছে, তার একমাত্র উদ্দেশ্যই ছিল মুখ্যমন্ত্রী ও কংগ্রেস সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করা ও কালিমালিপ্ত করা।”
আদর্শ আচরণ বিধি জারি থাকা সত্ত্বেও, সেই বিধি ভাঙার কারণে নির্বাচন কমিশনের হস্তক্ষেপের দাবিও জানায় কংগ্রেস। তাঁদের আরও দাবি, ইডি যে মামলাকে কেন্দ্র করে তদন্ত শুরু করেছে, তা স্বতঃপ্রণোদিতভাবে তৈরি এবং বিজেপি ও তার জোটসঙ্গীদের সাহায্য করার জন্যই তা চালানো হচ্ছে। পঞ্জাবের রাজনীতির প্রেক্ষাপট ধীরে ধীরে বিজেপি অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়ছে, তাই তাদের সহায়তার জন্যই এই তল্লাশি অভিযান চালিয়েছে ইডি।
উল্লেখ্য, গত বুধবারই ইডি পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ সিং চন্নির ভাইপো ভূপিন্দর সিং ও তার সহকারীদের বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চালায় এবং ১০ কোটি টাকা ও প্রচুর সোনার গয়না বাজেয়াপ্ত করে। জানা গিয়েছে, ২০১৮ সালে বেআইনি বালি খাদানের মামলায় আর্থিক তছরুপের অভিযোগের সঙ্গে সম্পর্কিত এই তল্লাশি অভিযান।
ইডি হানার পরই মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ সিং চন্নি বলেন, “বলেন, “ইডি আধিকারিকরা আমার পরিবারের সদস্যদের ক্রমাগত হুমকি দিয়েছেন। বিধানসভা নির্বাচনে আমি ও বাকি কংগ্রেস নেতারা যাতে দাঁড়াতে না পারি, তারজন্য ভুয়ো মামলায় আমাদের ফাঁসানোর চেষ্টা চলছে। বোঝাই যাচ্ছে, রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়েই এই তল্লাশি অভিযান চালানো হয়েছিল।”
রাজ্যের সঙ্গে তুলনা টেনে পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “পশ্চিমবঙ্গেও একই ঘটনা ঘটেছিল। ওখানে নির্বাচনের মুখে বিজেপি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আত্মীয়দের কেন্দ্রীয় সংস্থার নিশানা বানিয়েছিল। একইভাবে আমার ও কংগ্রেস নেতাদের উপর ইডির অভিযান দিয়ে চাপ সৃষ্টি করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে।”
যদিও ইডির তরফে এই সমস্ত অভিযোগই উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ইডি সূত্রে জানানো হয়েছে যে, পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী তদন্তকারী দলের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ এনেছেন, তা সম্পূর্ণরূপে ভিত্তিহীন ও মিথ্যা। কোনও আধিকারিকই মুখ্যমন্ত্রীর পরিবারের কোনও সদস্যকে হুমকি দেননি।