চণ্ডীগঢ়: কয়েকমাস ধরেই বিভিন্ন ইস্যুতে পঞ্জাব কংগ্রসের অন্তকলহ প্রকাশ্যে চলে এসেছে। বারবার পঞ্জাব সরকার বা দলের বিভিন্ন নেতাদের নিয়ে প্রদেশ কংগ্রসে সভাপতি নভজ্যোত সিং সিধুর মন্তব্যে শোরগোল দেখা দিয়েছে। আগামী বছরই পঞ্জাবে বিধানসভা নির্বাচন, তার আগে দলের দ্বন্দ প্রকাশিত হওয়ায় যথেষ্ট বিড়ম্বনার মধ্যে পড়তে হয়েছে কংগ্রেসকে। এবার কি তবে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সিধুর ডানা ছাঁটল কংগ্রেস হাইকমান্ড? স্বয়ং সিধুর মন্তব্যেই সেই নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছে। শনিবার বাবা বলাকাতে এক সভায় বক্তব্য রাখার সময় সিধু জানিয়েছেন, তিনি ‘ক্ষমতাহীন’ সভাপতি। তিনি বলেন. “আমি শুধুই সভাপতি। সাধারণ সম্পাদক নিয়োগের ক্ষমতাও আমার কাছে নেই।” সিধুর এই মন্তব্য রাজ্য রাজনীতিতে প্রশ্ন তুলেছে।
জানা গিয়েছিল, সম্প্রতি পঞ্জাবের ২২ টি জেলার আহ্বায়কের একটি নামের তালিকা কংগ্রেস হাইকমান্ডের কাছে পাঠিয়েছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সিধু। সেই তালিকা বাতিল করেছে হাইকমান্ড। শুধু তাই নয় নির্বাচনে বিভিন্ন কমিটি থেকে সিধুকে বাইরে রাখা হয়েছে। সিধুর দেওয়া নামের তালিকা বাতিল করার পর ২২ টি জেলার কংগ্রেস আহ্বায়কের নামের তালিকা প্রকাশ করছে কংগ্রসে হাইকমান্ড। সূত্রের খবর, সিধুর সঙ্গে আলোচনা না করেই ওই নামগুলি ঠিক করা হয়েছে।
মঙ্গলবার দলের তরফে পঞ্জাব নির্বাচনের ইনচার্জ হরিশ চৌধুরি জেলা আহ্বায়কদেরও ওই নামের তালিকা প্রকাশ করেন এবং দ্রুত তাদের কাজ শুরু করার নির্দেশ দেন। নতুন আহ্বায়কদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে দলের প্রবীণ নেতৃত্ব ও বিধায়কদের সঙ্গে সমন্বয় রেখে কাজ করতে হবে। পঞ্জাবের প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সুনীল ঝাকর, তাঁর দ্বারা নির্বাচিত কংগ্রেস জেলা সভাপতিদের সিধু সরিয়ে দেওয়া ভাল চোখে নেননি। এই প্রসঙ্গ নিয়ে রাহুল গান্ধীর সঙ্গে কথাও বলেন। সূত্রের খবর, ঝাকর রাহুল গান্ধীকে বলেন, সিধুর এই একতরফা সিদ্ধান্ত দলের নেতৃত্বের মধ্যে ক্ষোভ বৃদ্ধি করছে। এরপরই নড়েচড়ে বসে কংগ্রেস হাইকমান্ড। ঝাকর টুইটারে ক্ষোভ প্রকাশ করে জানিয়েছিলেন, “তোমার বাঁদর, তোমার সার্কাস। আমি শুধু আদেশ অনুসরণ করি, কোনও পরামর্শ বা নাক গলানোর প্রয়োজন নেই।”
পঞ্জাব কংগ্রেসের মধ্যেকার অন্তর্দ্বন্দ এখনও শেষ হয়নি। সুলতানপুর লোধি এবং কাদিয়ান – দুটি বিধানসভা কেন্দ্রে ইতিমধ্যেই দলাদলি প্রকাশ্যে এসেছে। শনিবার সিধু সুলতানপুর লোধি কেন্দ্রে বিধায়ক নভতেজ সিং চিমার প্রার্থীপদকে সমর্থন করেছেন, যেখান থেকে এর আগে পঞ্জাব সরকারের মন্ত্রী রাণা গুরজিৎ সিং নির্বাচিত হয়েছেন। নভজ্যোত সিং সিধু কাদিয়ান বিধানসভা কেন্দ্র থেকে বর্তমান বিধায়ক ফতেহ জং বাজওয়াকে সমর্থন করেছেন যেখানে প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রতাপ সিং বাজওয়া প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে আগ্রহী। আগামী দিনে পঞ্জাব কংগ্রেসের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ কোন দিকে যায় সেদিকে নজর থাকবে সকলের।