শিলিগুড়ি: রবিবাসরীয় প্রচারে বেরিয়ে জনসংযোগ যাত্রায় তৃণমূল প্রার্থী গৌতম দেব। এদিন সকালে প্রচারে বেরিয়ে একাধিক বাজারে ঢুঁ মারেন তৃণমূল প্রার্থী। কথা বলেন বাসিন্দাদের সঙ্গে। এরপর একটি ক্লাবের মাঠে ভোটারদের সঙ্গে চুটিয়ে বেশ কিছুক্ষণ ক্রিকেট খেলেন তিনি। চায়ের দোকানে লোকজন দেখতে পেয়ে সেখানে গিয়েও বসে চা খেতে খেতে বাসিন্দাদের চাওয়া-পাওয়ার কথা শুনে নেন গৌতম দেব।
প্রচারে গৌতম
তিনি জানান, “প্রচারে খুব ভালো সাড়া পাচ্ছি। সিপিএম-সহ বিরোধী দলগুলো আমার বিরুদ্ধে প্রচার করছে, আমি নাকি বহিরাগত। কিন্তু অশোক ভট্টাচার্যের মতো সিপিএমের নেতারা এমন ওয়ার্ড থেকে লড়ছেন যাঁরা ওই ওয়ার্ডের বাসিন্দা নন। আমি এই ওয়ার্ডে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে একটি বাড়ি কিনছি। সেখানেই আগামী পাঁচ বছর থাকব। এটাই আমার নীতি। বাসিন্দাদের পরিষেবা দেব।”
অন্যদিকে কোভিড প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “ভোটের জন্য মানুষ নয়, মানুষের জন্যই ভোট। তাই কোভিড বিধি মানতে হবে। ভোট না করলে কেউ কেউ হাইকোর্টে যাচ্ছেন, আবার ভোট করলে কোভিড ছড়ানোর আশঙ্কার কথা বলছেন। আসলে এদের পায়ের তলে মাটি নেই। তাই এসব করছেন তাঁরা। আমরা কোভিড বিধি মেনেই প্রচার চালাচ্ছি। জয় নিয়ে প্রবল আত্মবিশ্বাস রয়েছে। আটবার নির্বাচন লড়েছি। একবার হেরেছি মাত্র। এবার মানুষ তৃণমূলকেই চায়।”
উল্লেখ্য, কলকাতা পুরভোটের মতোই শিলিগুড়ি, আসানসোল, চন্দননগর ও বিধাননগরের পুরনির্বাচনে দলের পুরনো নেতৃত্বের উপর আস্থা রাখছে তৃণমূল। শিলিগুড়ি পুরভোটে শাসক দলের হয়ে প্রার্থী হয়েছেন গৌতম দেব (Goutam Deb)। জল্পনা, তৃণমূলের তরফে তিনি মেয়র পদপ্রার্থীও হতে পারেন।
শিলিগুড়ির ৩৩ নম্বর ওয়ার্ড থেকে পুরভোটে লড়বেন গৌতম। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে ডাবগ্রাম ফুলবাড়ি কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থীর কাছে পরাজিত হয়েছিলেন তিনি। তারপর তাঁকে শিলিগুড়ি পুরপ্রশাসকের দায়িত্ব দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। এ বার পুরভোটে গৌতমকে টিকিট দেওয়ায় জল্পনা শিলিগুড়ির মেয়র পদপ্রার্থীর দৌড়ে বিজেপির শঙ্কর ঘোষ ও বামেদের অশোক ভট্টাচার্যের পাশেই থাকবেন তিনি।
লড়াই হাড্ডাহাড্ডি
শিলিগুড়িতে ভেঙেছে বাম-কংগ্রেস জোট। ২০ টি আসনে পৃথকভাবে প্রার্থী দিয়েছে কংগ্রেস। অন্যদিকে, নিজেদের প্রার্থী তালিকা আংশিকভাবে প্রকাশ করেছে বাম শিবির। তালিকা প্রকাশকালে বাম শিবিরের পক্ষ থেকে বলা হয়, কংগ্রেসের জন্যই আসন ছেড়ে রাখা হয়েছে। কিন্তু, শেষে পৃথকভাবে প্রার্থী দিয়েছে কংগ্রেস। বামেদের তরফে দলের স্বার্থে অবসর ভেঙে ভোটে লড়তে চলেছেন সিপিএমের অশোক স্তম্ভ।
অন্যদিকে বিজেপির তরফে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ। তাঁর কথায়, “বামেরা প্রাসঙ্গিক নয়। লড়াই দেওয়ার ক্ষমতাও নেই। অশোক মডেল ফেলড। যারা আইএসএফের সঙ্গে একদা জোট করেছিল তাদের নীতি ঠিক নয়। আর তৃণমূলকে মানুষ ভোট দেবে না। আমরাই পৌরবোর্ড দখল করব”।
সম্প্রতি সাংবাদিক বৈঠক করে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছে বিজেপি। শঙ্কর, নান্টু ছাড়াও প্রার্থী তালিকায় রয়েছেন শালিনী। সদ্য বাম শিবির ত্যাগ করে পদ্মে এসেই টিকিট পেয়েছেন শালিনী। অন্যদিকে, ৬ নম্বর ওয়ার্ডে বাম নেতা তথা বিদায়ী পুরবোর্ডের মেয়র অশোক ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে বিজেপি প্রার্থী করেছে দলের সংখ্যালঘু মুখ নূরজাহান আনসারিকে
অন্যদিকে, তৃণমূলের তরফে গৌতম দেব বলেন, “অশোকবাবুরা নীতিহীন। ক্ষমতায় থাকতে এসব করছেন। কিন্তু উন্নয়নের প্রশ্নে এবার আমরা জিতব। আমাদের রিপোর্ড কার্ড দেখে মানুষ ভোট দেবে।”
সোমবারই রাজ্য নির্বাচন কমিশনার সৌরভ দাস সাংবাদিক বৈঠক করে ভোটের দিন ঘোষণা করেছেন। ২২ জানুয়ারি শিলিগুড়ি, বিধাননগর, আসানসোল, চন্দননগরে ভোট হচ্ছে। ২৫ জানুয়ারি ভোটের গণনা। শিলিগুড়িতে মোট ৪৭টি ওয়ার্ড। পোলিং স্টেশন ৪২১টি। ভোটার ৪,০২,৮৯৫।
আরও পড়ুন: Dilip Ghosh on Abhishek Banerjee: ‘ওঁ কখন দলের, কখন ঘরের লোক বুঝি না’