হায়দরাবাদ: ক্রিকেট মাঠে তাঁর স্টাইলিশ ফ্লিক এবং দুরন্ত ক্যাচিংয়ের জন্য পরিচিত ছিলেন প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক মহম্মদ আজহারউদ্দিন। ক্রিকেট মাঠ থেকে তিনি পাড়ি দিয়েছেন রাজনীতির ময়দানে। শনিবারই তেলঙ্গানা নির্বাচনের জন্য দ্বিতীয় প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছে কংগ্রেস। প্রাক্তন সাংসদ মধু গৌড় ইয়াকসি, রাজ্য কংগ্রেসের পরিচিত মুখ পুনম প্রভাকর, কান্দি শ্রীনিবাস রেড্ডি, সদ্য বিজেপি ছেড়ে কংগ্রেসে ফিরে আসা কে রাজগোপাল রেড্ডিদের সঙ্গে তালিকায় নাম রয়েছে প্রাক্তন ক্রিকেটার মহম্মদ আজহারউদ্দিনেরও। আসন্ন তেলঙ্গানা বিধানসভা নির্বাচনে, জুবিলি হিলস আসন থেকে তাঁকেই প্রার্থী করেছে জাতীয় কংগ্রেস। আর টিকিট পেয়েই আজহার জানালেন, ২২ গজের মতোই ভোটের ময়দানেও আক্রমণাত্মক শৈলিতে ব্যাট করবেন তিনি। আর নতুন পিচে ফিল্ডিংয়ে করবেন অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে। যাতে একটিও ক্যাচ মিস না হয়।
রবিবার, সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আজহার বলেছেন, “এবার আমার নিজের রাজ্য থেকে আমায় টিকিট দেওয়া হয়েছে। তাই আমি খুবই খুশি হয়েছি। এর জন্য আমি অবশ্যই আমার হাইকমান্ডকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। ধন্যবাদ জানাতে চাই, মল্লিকার্জুন খাড়্গেজি, সনিয়া গান্ধীজি, রাহুলজি, প্রিয়ঙ্কাজিকে। সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ হল, আমাকে এই সুযোগ দেওয়ার জন্য আমি আমাদের প্রদেশ কংগ্রেস কমিটি প্রধান এ রেবন্ত রেড্ডিকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। ইনশাআল্লাহ, আমরা আমাদের যথাসাধ্য দিয়ে লড়াই করব এবং নির্বাচনে অবশ্যই জয়ী হব।”
তবে, ক্রিকেটের মতো রাজনীতিও দলগত খেলা। ক্রিকেট মাঠে তবু ব্যক্তিগত মুন্সিয়ানার এক-আধটা ম্যাচে জয় ছিনিয়ে আনা সম্ভব। কিন্তু, রাজনীতির ময়দানে দল বা দলের কর্মীরা পাশে না থাকলে, জেতা অসম্ভব। এই ক্ষেত্রে কিন্তু, সমস্যায় পড়তে পারেন আজহার। বস্তুত, প্রার্থী তালকা ঘোষণার বহু আগে থেকেই জুবিলি হিলস আসনটি নিয়ে মহম্মদ আজহারউদ্দিনের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা চলছিল বিষ্ণুবর্ধন রেড্ডির। শনিবার কংগ্রেস প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করার পরই বিষ্ণুবর্ধন রেড্ডির অনুগামীরা কংগ্রেস সদর দফতরে ভাঙচুর করে। পরে, কংগ্রেস থেকে ইস্তফা দেন বিষ্ণুবর্ধন।
আসলে, দীর্ঘদিন ধরেই এই আসনে ছড়ি ঘোরায় রেড্ডি পরিবার। গত নির্বাচনে এই আসনে প্রার্থী হয়ে হেরে গিয়েছিলেন বিষ্ণুবর্ধন। তবে, তার আগে এই কেন্দ্র থেকেই নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। তার আগে পাঁচবার জুবিলি হিলস-এর প্রতিনিধিত্ব করেছেন তাঁর বাবা, জনার্দন রেড্ডি। প্রার্থী তালিকা ঘোষণার আগেই, জুবিলি হিলস এলাকায় সফরে গিয়ে বিষ্ণুবর্ধন রেড্ডির অনুগামীদের বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছিল আজহারউদ্দিনকে। এমনকি, দুই নেতার অনুগামীদের মধ্যে হাতাহাতিও হয়েছিল। সেই সময় আজহার বলেছিলেন, “এই এলাকার মানুষ কংগ্রেসের কাছে নতুন মুখ চাইছেন। বিষয়টি আমি ঊর্ধ্বতন নের্তৃত্বের নজরে আনতে চাই। তারই অংশ হিসেবে এখানে এসেছি।” শেষ পর্যন্ত, তাঁকেই টিকিট দিয়েছে কংগ্রেস। রাজনীতির ময়দানে আজহার এখন কেমন নেতৃত্ব দেন, সেটাই দেখার। ৩০ নভেম্বর তেলঙ্গানার ১১৯ আসনের ভোটগ্রহণ। ফল প্রকাশ করা হবে ৩ ডিসেম্বর।