লখনউ : উত্তরপ্রদেশে বিজেপির বিরুদ্ধে প্রধান প্রতিপক্ষ হয়ে উঠে এসেছে সমাজবাদী পার্টি। বিজেপির ‘মুখ’ যোগী আদিত্যনাথকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছেন সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব। এই আবহে রাজনৈতিক ময়দানে একে অপরকে হেয় করতে চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ শানাচ্ছেন যোগী, অখিলেশ উভয়ই। এক নেতা কোনও অভিযোগ করলে তার পাল্টা জবাব দিচ্ছেন অপর নেতাও। এই পরিস্থিতিতে শনিবার প্রচারে নেমে যোগীর এক গুরুতর অভিযোগের জবাব দিলেন অখিলেশ যাদব। পিলভিটে প্রচারে গিয়ে যোগী আদিত্যনাথ দাবি করেছিলেন যে ২০০৮ সালের আমদাবাদ বিস্ফোরণ কাণ্ডে এক দোষীর পরিবার সদস্যকে পাশে নিয়ে প্রচার করতে দেখা গিয়েছে অখিলেশকে। এই অভিযোগেরই জবাব দিলেন সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব।
এদিন যোগীকে কটাক্ষ করে অখিলেশ বলেন, ‘আমাদের বাবা (যোগী আদিত্যনাথ) মুখ্যমন্ত্রী অসাধারণ এক মানুষ।’ উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ এদিন আরও বলেন, ‘তিনি (যোগী আদিত্যনাথ) আগেও কিছু জানতেন না… তিনি এখনও কিছু জানেন না। এই নির্বাচন কৃষকদের অধিকারের লড়াই। এই নির্বাচন যুব সমাজের চাকরি, কর্মসংস্থানের প্রশ্নের জবাব খোঁজার নির্বাচন। এই নির্বাচন মূল্যস্ফীতি কমানোর লড়াই। বিদ্যুতের খরচ কমানোর নির্বাচন এটা। আমাদের এই রাজ্য কীভাবে এগিয়ে যাবে, এই নির্বাচন সেই পথ খোঁজার নির্বাচন।’
এদিকে অখিলেশ এই নির্বাচনের প্রচারে কৃষক, কর্মসংস্থানের মতো ইস্যু তুলে ধরলেও বিজেপি সপা-জঙ্গি যোগ নিয়ে সরব হয়েছেন। এর আগে যোগী আদিত্যনাথ অভিযোগ অখিলেশের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলে বলেছিলেন, ‘আমদাবাদের এক আদালত ৩৮ জন জঙ্গিকে ধারাবাহিক বিস্ফোরণ কাণ্ডে (২০০৮ সালের আমদাবাদ বিস্ফোরণ) সর্বোচ্চ সাজা দিয়েছে। মামলায় বাকি দোষীদের যাবজ্জীবনের সাজা শুনিয়েছে আদালত। সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে উত্তরপ্রদেশের জঙ্গিও ছিল। সেই সাজাপ্রাপ্তদের একজনের পরিবারের সদস্যকে সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদবের সঙ্গে ভোট প্রচারে দেখা গিয়েছে।’ যোগী আরও বলেছিলেন, ‘আপনারা ভাবতে পারেন, নতুন হাওয়া বইছে, কিন্তু সেই পুরোনো সমাজবাদী পার্টিই রয়ে গিয়েছে। এসপি কা হাত, আতঙ্কওয়াদিওকে সাথ (সমাজবাদীর হাত, জঙ্গিদের সাথে)। এটি আরও একবার প্রমাণিত হয়েছে।’ ২০০৮ সালের ২৬ জুলাই ২১টি বিস্ফোরণে ৫৬ জন প্রাণ হারিয়েছিলেন আমদাবাদে। সেই ঘটনার প্রায় সাড়ে ১৩ বছর পর গলকাল দোষীদের সাজা শোনায় আমদাবাদের বিশেষ আদালত। এই মামলায় ৩৮ জনকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা শোনানো হয়েছে। বাকি ১১ জনকে জাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা শোনানো হয়েছে।
এদিকে শুধু যোগী আদিত্যনাথ নন, বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডাও সমাজবাদী পার্টিকে তোপ দাগতে জঙ্গি যোগের অভিযোগ তোলেন। এক জনসভায় জেপি নড্ডা বলেন, ‘অখিলেশ যাদবজি নির্বাচনে লড়ছেন। তিনি মুখ্যমন্ত্রী হতে খুব আগ্রহী। তাঁর আমলে তিনটি সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে… তিনি জঙ্গিদের আশ্রয় দেন। তিনি তাদের বাঁচান, রক্ষা করেন… তাঁর আশ্রয় পাওয়া জঙ্গিদের পরে আদালত শাস্তি দেয়।’