লখনউ: সামনেই পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন। পাঁচ রাজ্যে নির্বাচন হলেও সারা দেশের নজর উত্তর প্রদেশের দিকে (Uttar Pradesh Assembly Election)। দেশের সবথেকে বড় রাজ্যে ক্ষমতায় রয়েছে বিজেপি। এবার নির্বাচনেও হিন্দুত্বের ‘পোস্টারবয়’ যোগী আদিত্যনাথকে মুখ করে নির্বাচনের ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়েছে বিজেপি। নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে ততই রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে আক্রমণ পাল্টা আক্রমণ তুঙ্গে উঠছে। প্রত্যাশিতভাবে এবারে উত্তর প্রদেশ নির্বাচনে বিজেপির প্রচারের অন্যতম হাতিয়ার ‘পাকিস্তান’। শুক্রবার পাকিস্তান প্রসঙ্গ টেনেই সমাজবাদী পার্টি নেতা তথা রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদবকে (Akhilesh Yadav) আক্রমণ করলেন উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ (Yogi Aditynath)। অখিলেশ নেতৃত্বাধীন সমাজবাদী পার্টিকে ‘পাকিস্তানের সমর্থক’ ও ‘জিন্নাহর পূজারী’ বলে কটাক্ষ করেন যোগী। সম্পতি পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠাতা তথা প্রথম রাষ্ট্রপতি মহম্ম আলি জিন্নাহকে নিয়ে অখিলেশের মন্তব্য বিতর্ক দেখা দিয়েছিল। সেই কারণেই অখিলেশকে পাকিস্তান প্রসঙ্গ টেনে নিশানা করেন যোগী।
সমাজবাদী পার্টিকে নিশানা করে হিন্দিতে একটি টুইট করেন যোগী। সেখানে তিনি লেখেন, “সমাজবাদী পার্টি মহম্মদ আলি জিন্নাহর পূজারী আর আমরা সর্দার বল্লভভাই পটেলের পূজারী। পাকিস্তান ওদের কাছে খুবই আপন, আমরা ভারতমাতার জন্য নিজেদের জীবন দিতেও প্রস্তুত।” এরপরে সমাজবাদী পার্টিতে নিশানা করে আরও একটি টুইট করেন যোগী আদিত্যনাথ। সেই টুইটে তিনি লেখেন, “সমাজবাদী পার্টি যখন ক্ষমতায় ছিল তখন রামভক্তদের ওপর গুলি চালানো হয়েছে। কানওয়ারের যাত্রা বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। সাফাই মহোৎসবের মতো শোষণের কাজ হয়েছিল। আমরা যখন ক্ষমতায় আসি তখন রামলালার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে, কানওয়ারিয়াদের ওপর হেলিকপ্টার থেকে পুষ্পবৃষ্টি করা হয়েছে। দ্বীপোৎসব ও রঙ্গোৎসব উত্তর প্রদেশের পরিচিতি তৈরি করেছে।” সমাজবাদী পার্টির প্রতিষ্ঠাতা মুলায়ম সিং যাদব মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন অযোধ্যাতে করসেবকদের ওপর গুলি চালানা হয়েছিল। সেই প্রসঙ্গই টেনে আনে যোগী আদিত্যনাথ।
রাজনৈতিক মহলের মতে উত্তর প্রদেশের রাজনীতিতে ধর্মীয় ও জাতিগত মেরুকরণ নতুন কিছু নয়। এবারের নির্বাচনেও তার অন্যথা হচ্ছে না। তাই বারবার ঘুরপথে হিন্দু মুসলিম প্রসঙ্গ তুলছেন নেতারা। গতমাসেই ‘৮০ বনাম ২০’ মন্তব্য করে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন যোগী আদিত্যনাথ। তিনি বলেছিলেন, এবারে নির্বাচনে ৮০ বনাম ২০-র লড়াই। আর ৮০ বিজেপি সঙ্গে রয়েছে। অনেকেই বলেন ৮০ বলতে হিন্দু এবং ২০ বলতে মুসলিমদের বোঝাতে চেয়েছিলেন তিনি। পাশাপাশি অখিলেশের বাবা মুলায়মকেও ‘আব্বাজান’ বলে কটাক্ষ করেছিলেন যোগী। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে নির্বাচন যত এগিয়ে রাজনৈতিক নেতারা ততবেশি ধর্মীয় মেরুকরণের চেষ্টা করবেন।