নয়া দিল্লি: নির্বাচনের আর হাতে গোনা কয়েকটা দিনই বাকি। শুক্রবারই উত্তর প্রদেশে কংগ্রেসের ইস্তেহার প্রকাশ করেছেন কংগ্রেস নেত্রী তথা সাধারণ সম্পাদক প্রিয়ঙ্কা গান্ধী(Priyanka Gandhi)। সঙ্গী হিসাবে উপস্থিত ছিলেন দাদা রাহুল গান্ধীও। সেই সাংবাদিক বৈঠকেই বোমা ফাটিয়েছিলেন প্রিয়ঙ্কা। উত্তর প্রদেশে কংগ্রেসের (Congress) মুখ্যমন্ত্রীর মুখ (CM Candidate) কে, এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছিলেন, “আমায় ছাড়া কি আর কাউকে দেখতে পাচ্ছেন?”। তাঁর এই মন্তব্য ঘিরেই জল্পনা যখন তুঙ্গে, তখনই প্রিয়ঙ্কার ফের দাবি, তিনি মজাচ্ছলেই মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হওয়ার কথা বলেছিলেন।
শুক্রবারই সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “আমি তো মজাচ্ছলে ওই কথা বলেছিলাম। কারণ প্রতি সেকেন্ডে সকলেই আমায় একই প্রশ্ন করছেন। আমি উত্তর প্রদেশে কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক। আনুষ্ঠানিকভাবে ইনি মুখ্যমন্ত্রী মুখ বা উনি মুখ্যমন্ত্রীর মুখ বলার প্রয়োজন থাকলেও, আমরা সেই কাজ করব না বলেই মনে হয়।”
উত্তর প্রদেশে কংগ্রেসের মুখ্যমন্ত্রী মুখ নন তিনি, এ কথা জানালেও, নির্বাচনে লড়ার জল্পনা উড়িয়ে দেননি প্রিয়ঙ্কা। তিনি জানান, প্রয়োজন হলে তিনি নির্বাচনে লড়তেই পারেন। যদি সত্যিই প্রিয়ঙ্কা নির্বাচনে দাঁড়ান, তবে যোগী আদিত্য়নাথ ও অখিলেশ যাদবের পর তৃতীয় পদপ্রার্থী হতে চলেছেন তিনি, যার এটিই প্রথম বিধানসভা নির্বাচন।
সাংবাদিক বৈঠকে তিনি মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হতে পারেন, এই ইঙ্গিত দিলেও, বিকেলের মধ্যেই সেই অবস্থান বদল করে নেন প্রিয়ঙ্কা। তিনি বলেন, “আপনারা মনে করতেই পারেন যে আমি কংগ্রেসের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হব। আমি বলছি যে আমি উত্তর প্রদেশে কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক, উত্তর প্রদেশের দায়িত্ব আমার এবং আমি তা পূরণ করছি।”
তিনি নির্বাচনে লড়ছেন না কেন, এই প্রশ্ন করা হলে প্রিয়ঙ্কা বলেন, “আপনারা জানেন না যে আমি নির্বাচনে লড়ছি কিনা। এটা এখন সবার প্রশ্ন। আমি নির্বাচনে লড়তেও পারি। তবে এই বিষয়ে আমি পরে আলোচনা করতে চাই। যখন আমরা এই বিষয়ে চিন্তাভাবনা বা আলোচনা করব, আপনারা জানতেই পারবেন।”
ফের একবার তিনিই কংগ্রেসের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী কিনা, জানতে চাওয়া হলে প্রিয়ঙ্কা বলেন, “আমি স্পষ্টভাবেই বলেছি যে বিষয়টা তা নয়। আমি মজাচ্ছলে কথাটি বলেছিলাম। আমার মনে হয় না সেখান থেকে কোনও কিছু স্থির করে নেওয়া উচিত। আমি নির্বাচনে লড়ার কথা ভাবছি, সেই বিষয় নিয়ে আলোচনা চলছে। যখন এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, আপনাদের জানিয়ে দেব আমরা।”
যেহেতু এবারই প্রথম বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছেন বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্য়নাথ, তাই প্রিয়ঙ্কাও কি যোগী আদিত্যনাথের বিরুদ্ধেই গেরক্ষপুর কেন্দ্র থেকে দাঁড়াবেন, এই প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, “না, এই বিষয়ে আমি কোনও চিন্তাভাবনা করিনি, যতক্ষণ না আপনি এই কথা বললেন।”
ওই সংবাদমাধ্যমের তরফে বলা হয় যে, প্রিয়ঙ্কা গান্ধী যদি যোগী আদিত্যনাথের বিরুদ্ধে নির্বাচনে প্রার্থী হন, তবে তা একটা স্পষ্ট বার্তা দেবে। এর জবাবে প্রিয়ঙ্কা বলেন, “বার্তা দেওয়ার জন্য অনেক পথ রয়েছে। বিগত আড়াই বছর ধরেই আমি যোগীর বিরুদ্ধে লড়াই করছি।”
উল্লেখ্য, এর আগেও ২০১৯ সালে প্রিয়ঙ্কা গান্ধী নির্বাচনে লড়ার কথা বলেছিলেন। লোকসভা নির্বাচনের আগে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে কংগ্রেসে যোগ দিয়েই বলেছিলেন, “দল যদি চায়, তবে আমি নির্বাচনে লড়তে প্রস্তুত।”