লখনউ : ভোট শুরু হয়ে গিয়েছে দেশের সবচেয়ে জনবহুল রাজ্য উত্তর প্রদেশে। ইতিমধ্য়েই দুই দফার নির্বাচন হয়ে গিয়েছে। আগামীকাল তৃতীয় দফার নির্বাচন রয়েছে। আগামী দফার নির্বাচনের জন্য শনিবার উত্তর প্রদেশের গন্ডায় গিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং। নির্বাচনী জনসভায় বক্তৃতা রাখার সময় হঠাৎই স্লোগান দিতে শুরু করেন সভায় উপস্থিত জনগণ। বাধাপ্রাপ্ত হয় কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বক্তৃতা। চাকরি চেয়ে বিশেষত ভারতীয় সেনাবাহিনীতে চাকরি চেয়ে স্লোগান ওঠে বিজেপির নির্বাচনী জনসভায়। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সেই বিক্ষোভের কারণ জিজ্ঞাসা করেন। বিক্ষোভের কারণ জানতে পেরে তিনি বিক্ষোভকারী পুরুষদের আশ্বস্ত করেন যে নিয়োগ প্রক্রিয়া হবে।
নির্বাচনী প্রচারে আজ স্লোগান ওঠে, “সেনা ভরতি চালু করো (সেনায় নিয়োগ করুন)”, “হামারি মাঙ্গে পুরি করো (আমাদের চাহিদা পূরণ করুন)”। তারপর রাজনাথ সিং বিক্ষোভকারী যুবকদের আশ্বস্ত করেন এই বলে, “হোগি, হোগি (নিয়োগ হবে)” , “চিন্তা করবেন না।” কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেছেন, “আপনাদের চিন্তা আমাদেরও চিন্তা। করোনা ভাইরাসের কারণে কিছু জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে।” এরপর রাজনাথ সিংয়ের জোরাজুরিতে সবাই “ভারত মাতা কি জয়” স্লোগান ধ্বনিত হয় জনসভায়। রাজনাথ সিং এই সভা থেকে বলেছেন, “যদি উত্তর প্রদেশে আবার ক্ষমতায় এলে বিজেপি সরকার প্রতি বছর হোলি এবং দীপাবলি উপলক্ষে বিনামূল্যে এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডার সরবরাহ করবে।”
উল্লেখ্য, উত্তর প্রদেশের নির্বাচনের জন্য বিজেপির প্রকাশিত ইস্তেহারে রাজ্যের প্রতিটি পরিবারের অন্তত একজনকে চাকরি বা স্ব-কর্মসংস্থানের সুযোগের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। উত্তরপ্রদেশের বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী আদিত্যনাথ এর আগে টুইট করেছিলেন যে তাঁর সরকার গত ৫ বছরে সরকারি ও বেসরকারি খাতে কোটি কোটি চাকরি এবং স্ব-কর্মসংস্থানের সুযোগ দিয়েছে। তবে আদিত্যনাথের এই দাবির প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে বিরোধীরা। পাল্টা অখিলেশ যাদবের সমাজবাদী পার্টিও তাদের ইস্তেহারে চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। উত্তর প্রদেশে এই বিধানসভা নির্বাচনে সপা হল গুরুত্বপূর্ণ প্রতিদ্বন্দ্বী দল। অখিলেশ যাদব প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে সপাকে ভোট দিয়ে ক্ষমতায় আনলে লক্ষাধিক চাকরির ব্যবস্থা করা এবং বিদ্যমান সরকারি চাকরি নিয়মিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
অনেক বিজেপি সমর্থক সোশ্যাল মিডিয়ায় দাবি করেছেন যে স্বাধীন থিঙ্ক ট্যাঙ্ক সিএমআইই (CMIE)এর তথ্য দেখায় যে উত্তর প্রদেশের বেকারত্বের হার ২০১৭ সালে অখিলেশ যাদবের শাসনাকালে ১৭.৫ শতাংশ থেকে এখন ৪.২ শতাংশে নেমে এসেছে। কিন্তু CMIE-এর তথ্য আসলে দেখায় যখন উত্তর প্রদেশের বর্তমান বেকারত্বের হার ৪.৯ শতাংশ, বিজেপি ক্ষমতায় আসার ঠিক আগে ২০১৭ সালের জানুয়ারি-এপ্রিলের মধ্যে এই হার ছিল ৩.৮ শতাংশ। তরুণদের মধ্যে বেকারত্বের হার ২০১৭ সালের জানুয়ারি-এপ্রিলের মধ্যে ৭.৯ শতাংশ থেকে প্রায় দ্বিগুণ হয়ে মার্চ-অগাস্ট ২০২১ সালের মধ্যে ১৩.৩৪ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।